সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হামলা চলছেই। ঈদের আগের দিন ও ঈদের পরের দিনসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে, মানুষ নামের নরপশুরা।
গত কয়েকদিন আগে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে সংবাদ তৈরী ও গণমাধ্যমে প্রচার করতে গণমাধ্যমের কর্মীরা তথ্য সংগ্রহে গেলে একদল মানুষ রুপী হায়না, গণমাধ্যম কর্মীদের হামলা চালায় এবং সাংবাদিককে হত্যার উদ্দেশ্যে রক্তাক্ত জখম করে।
বাংলাদেশের গর্বিত সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে অভিযান পরিচালনা করে, সাংবাদিকদের অভিযোগের সত্যতা পায়। কালের কন্ঠের সাংবাদিক রায়হানকে হত্যার উদ্দেশ্যে রক্তাক্ত জখমের পাশাপাশি অতিরিক্ত বেশি ভারা নেওয়ার অপরাধে সেনাসদস্যরা একজনকে আটক করে।
রাজধানী থেকে শুরু করে বিভাগীয় শহর। জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়েও গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হামলা, মামলা এমনকি প্রাণনাসের হুমকি ধামকি চলছে।

জাতীয় প্রেসক্লাব।
সংবাদপত্র সমাজের আয়না। রাষ্ট্রের আয়না। সমাজের দর্পণ। সেই সমাজের দর্পণকে আঘাত করলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন, রাষ্ট্রের উন্নতি, গণতন্ত্র সহ নানা বিষয়গুলো অন্ধকারে ঢেকে যায়। জাতির পথপ্রদর্শক গণমাধ্যম। এই জাতির পথপ্রদর্শকদের উপর চলছে একের পর এক হামলা।
টেকনাফ থেকে তেতুলিয়ায় রটে গেছে। বাংলাদেশে নতুন গণতন্ত্র এসেছে। বদলে যাবে সকল বৈষম্য। দেশে গণতন্ত্রের বসন্ত এসেছে! মুক্ত, স্বাধীন নতুন বাংলাদেশের আশায় বুক বাঁধলাম শক্ত করে। সেই আশায়ও গুড়ে বালি।
নতুন বাংলাদেশের কাছে এমন গণমাধ্যম কে চায় বলুন? মহান গণতন্ত্রের দেশে প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যম নির্যাতনের শিকার হয়। এই দেশের উন্নয়ন, উন্নতি কিভাবে আশা করেন?
সাংবাদিক সাগর রুনি হত্যার এখনো কোন কুল কিনারা এখনো হয়নি। অনেক সাংবাদিক হত্যার এখনো কোন কুল কিনারা হয়নি।
বাংলাদেশ অনলাইন প্রেসক্লাবের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান শফিক এর উপর ন্যাক্করজনক হামলা হয়েছিল! হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেছিল। শফিকের উপর ধারালো অস্ত্রের হামলায় পনেরটি সেলাই লেগেছিল। ঢাকা মেডিকেলের ডিউটি ডাক্তার, এই তথ্য গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করেন।
ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুইচগেট নির্মাণের অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ সংগ্রহে গেলে,রফিক সাদী সহ ৫ জনের উপর হামলা হামলা করা হয়। সেই ঘটনায় তজুমদ্দিন থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং একজন হামলা কারিকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
সেই সকল হামলা কারীরা বীর দর্পে ঘুরে বেড়ায়। রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী’র কতিপয় পথভ্রষ্ট সদস্য তাদের বিরুদ্ধে কেন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না, কেন করে না ?
রাষ্ট্রের আইন, আদালত, প্রশাসন সবার কাছেই যেন খেলার পাত্র গণমাধ্যম। অসত্য ও মিথ্যার উপর ভিত্তি করে কোন রাষ্ট্র চলতে পারে না। গণতন্ত্র বিকশিত করতে হলে গণমাধ্যমের বিকল্প নাই। দেশের সকল রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবীগণ, সরকারি চাকরিজীবীরা গণমাধ্যমের গুরুত্ব বুঝতে হবে।
এই সত্যগুলো নিয়ে কেউ কথা বলেন না গণমাধ্যমে।
আমি স্বীকার করছি। আমিও জনগণের চাকর। জনগণের কাছে আমারও জবাব দিহিতা আছে। আমিও রাষ্ট্রের নাগরিক। সকলের মন রক্ষা করে চলতে পারি না। রাষ্ট্রের আইন ও বিধি মোতাবেক আমাকেও চলতে হয়।
সরকারের অন্য অন্য চাকুরীজীবিদের মত ছুটি বা বন্ধ হলেও প্রচার মাধ্যমের সরকারি – বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকে, সংবাদ পরিবেশিত হয় নিয়মিত। দিনরাত কর্মযজ্ঞ চলতেই থাকে বিরতিহীন।
এই ঈদে বাংলাদেশ সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দশ দিন ছুটি ঘোষণা করেছে।
দেশের প্রায় প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করছে দশ দিন ছুটি ঘোষণা। সরকার দশ দিন ছুটি ঘোষণা করলেও রাষ্ট্রের কোন গণমাধ্যম কর্মীরাই এই দশ দিন ছুটি পায় না। প্রত্যেক গণমাধ্যম কর্মীকে কোন না কোন শিফটে কাজ করতে হয় এবং অফিসে উপস্থিত থাকতে হয়।
বাংলাদেশ সরকারের সরকারি গণমাধ্যম বাংলাদেশ রেডিও, বাংলাদেশ টেলিভিশন, সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসস ছাড়াও বে-সরকারি সংবাদ মাধ্যমগুলো এই ঈদেও প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তের সংবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে আপনার কাছে, সারাদেশের কাছে, সারা বিশ্বের কাছে।
অবশ্য (এবছর ২০২৫) এই নিয়মের অনেকটা পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছি। ইতোমধ্যে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সহ বিভিন্ন সাংবাদিকদের সংগঠনে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ছুটি চাই। দীর্ঘ দশ দিন ছুটি চাই। নোয়াব এই ক্ষেত্রে কি ভূমিকা পালন করে তা সময় বলে দিবে।
রাষ্ট্রের ৪টি খুটির একটি গণমাধ্যম। বন্ধ বা ছুটি এই অজুহাতে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে অযাচিত বাক্য ব্যায় করবেন না। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, এই দেশের সকলের কাছে সংবাদ সংগ্রহ করতে সহযোগিতা একান্ত কামনা করছি। আপনাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ। আমরা রাষ্ট্র, আমরা আপনার আপনজন, আমরা আপনার ভাই। গণমাধ্যম কর্মীর সঙ্গে অযাচিত খারাপ আচরণ করবেন না।
সরকারের অনেকগুলো ডিপার্টমেন্ট বন্ধ বা ছুটি এই অজুহাতে ঈদের আগের দিন শুক্রবার, ঈদের দিন শনিবার গণমাধ্যমে তথ্য সংগ্রহে গেলে, কর্মকর্তা কর্মচারীরা উচ্চস্বরে কথা বলেন। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলেন। তথ্য সংগ্রহে কোন সহযোগিতা করেন না। বরঞ্চ অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে তথ্য বিভ্রাট ঘটান।
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর সমুহকে বিশেষ অনুরোধ। গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হামলা বন্ধ করুন। কোন বিষয়ে মতবিরোধ হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। এমনকি বাংলাদেশ সরকারের প্রেস কাউন্সিলও আপনি যেতে পারেন। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। কোন সংবাদ বা কোন বিষয়ে সংক্ষিপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় প্রতিবাদ জানাতে পারেন।
সাগর চৌধুরী
সম্পাদক ও প্রকাশক।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
চুক্তি থেকে কবে মুক্তি মিলবে পাঞ্জেরী? ক্ষোভ, দুঃখ ও কষ্টে চাপা পড়েছে জনপ্রশাসন!
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।
আরও লেখা পড়ুন।