আজ বৃহস্পতিবার থেকে সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠলো; ভোলায় চাল পায়নি হাজার হাজার জেলেরা। প্রতিবছরের মতো এ বছরও সমুদ্রগামি জেলেদের চাল নিয়ে লুকোচুরি চলছে। স্থানীয় প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। কি এমন ব্যস্ততায়! গরিব ছেলেদের চাল বিতরণ করা হয়নি? প্রশ্ন স্থানীয়দের।
সাগর চৌধুরীঃ আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলো। সাগরে মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরণের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও নিষেধাজ্ঞার দিয়েছে সরকার।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিন বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। আগে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছিল ৬৫ দিন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা, ২০২৩ এর বিধি ৩ এর উপবিধি (১) এর দফা (ক) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার, বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল হতে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন সকল প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক যেকোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
সরকারের এই আদেশ অমান্য করলে জেল ও জরিমানার উভয় বিধান রাখা হয়েছিল।
ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার সমুদ্রগামী জেলে সরকারের আদেশ মান্য করে মাছ ধরতে বঙ্গোপসাগরে যায়নি।
তবে, সমুদ্রে মাছ ধরার সময় পার হলেও দ্বীপ জেলা ভোলার জেলেদের ভাগ্যে জোটেনি তাদের জন্য বরাদ্দ করা চাল। সরকার প্রতিজন জেলের জন্য প্রথম ধাপে ৫৬ কেজি, দ্বিতীয় ধাপে ৩০ কেজি চালের বরাদ্দ রেখেছে।
ভোলা জেলার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এখনো সমুদ্রগামী ছেলেদের চাল বিতরণ করা হয়নি।
পক্ষীয়া ইউনিয়নের দেলোয়ার মাঝি বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে বা সাগরে মাছ ধরলে জেল ও জরিমানা করে, কিন্তু আমাদের সঠিক সময়ে চাল দেয়া হয়নি এবং আজও চাল দেয়া হয়নি। বড় বড় স্যারদের জন্য ঈদ করবান থাকে কিন্তু আমাদের জেলেদের জন্য কোন ঈদ নাই। আমাদের পেটে ভাত নাই। কিন্তু যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমাদের জন্য বরাদ্দার চাল দেয়নি, সেই সকল সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কি কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়?
তিনি আরো বলেন, আইন শুধু গরিবের জন্য ? সরকার জেলেদের চাল দেবে বলল কিন্তু এখনো দিল না, ওয়াদা বরখেলাপ করল!
পক্ষীয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সংরক্ষিত ১২৩ মহিলা পেয়ারা বেগম মেম্বারের স্বামী আবুল কালাম বলেন, পক্ষীয়া ইউনিয়নে এখনো সমুদ্রগামী ছেলেদের চাল দেয়া হয়নি। জেলেরা বিভিন্ন সময়ে এসে খোঁজখবর নেয় কিন্তু তাদেরকে কোন চাল দেয়া হয়নি।
গঙ্গাপুর ইউনিয়নের নয়নের খালের ছত্তর মাঝি বলেন, জাল সুতো ঠিকঠাক করতেছি মাছ ধরতে যাব। না, আমরা সমুদ্রগামী জেলেরা এখনো কোনো চাল পাইনি। সরকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে সাগরে যাব।
বড়মানিকা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আলামিন সিপাহি বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও আমরা চাল পাইনি ভাই। তবে নৌকা রেডি করছি; মাছ ধরতে সমুদ্রে যাবো।
হাসাননগর ইউনিয়নের খাস মহল মাছঘাটের মনির মাঝি বলেন, চাউল টাউল কিছুই পাই নাই, আগে যারা খাইছে হ্যাগো পেট ভরে নাই, নতুন যারা আইছে হ্যাগো পেট ভরবো কেমনে। সরকার নিষেধাজ্ঞা দিছে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। জেলেরা চাল পাইছে কি পায় নাই এই খোঁজ কি সরকার নিছে ?
বোরহানউদ্দিন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা বলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় কাচিয়া ইউনিয়ন ও বোরহান উদ্দিন পৌরসভায় সমুদ্রগামী ছেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে। বাকি বিভিন্ন ইউনিয়নে আগামী রবিবার বিতরণ করা হবে।
দৌলতখান উপজেলার কোন ইউনিয়নেই সমুদ্রগামী জেলেদের চাল বিতরণ করা হয়নি।
লালমোহন উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে মৎস্যজীবীদের চাল নিয়েও অভিযোগ গণমাধ্যম কর্মীদের জানানো হয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নেও সঠিকভাবে এখনো চাল বিতরণ করা হয়নি বলে জানায় জেলেরা। হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচ কপাট এলাকায় অনেক জেলেরা অভিযোগের সুরে বলেন, এখনো তাদের চাল দেয়া হয়নি।
সরকার ঘোষিত সমুদ্রগামী ছেলেদের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে, কিন্তু জেলেদের চাল দেয়া হয়েছে?
চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত অপু’র কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ছুটিতে আছি।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা
বিশ্বজিৎ কুমার দেব
সমুদ্রগামী ছেলেদের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে, কিন্তু চাল দেয়া হয়েছে? আজ সন্ধ্যায় ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, হয়তো সব দেয়া হয়নি, আশা করি কিছুদিনের মধ্যে দেয়া শেষ হয়ে যাবে।
নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কেন জেলেদের চাল দেয়া হলো না! এমন প্রশ্নে নিচু চুপ থাকেন এই জেলা কর্মকর্তা।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
কৃষকের চেয়ে বড় প্রাইভেট সেক্টর আর কি হতে পারে – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
ইলিশের বাড়ি ভোলা আর বিভাগ বরিশাল – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আরও সংবাদ পড়ুন।
বাজারে যারা অহেতুক দাম বাড়ায়, তাদের ছাড় দেওয়া যাবে না-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
বাজারে যারা অহেতুক দাম বাড়ায়, তাদের ছাড় দেওয়া যাবে না-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আরও সংবাদ পড়ুন।
প্রকৃতিক ও সামুদ্রিক সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহার করলে দেশ আর গরীব থাকবে না : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আরও সংবাদ পড়ুন।
আজ শেষ হচ্ছে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা, বোরহানউদ্দিনে চাল পায় নি দরিদ্র জেলেরা
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
https://wnews360.com/archives/75430
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নয়, ইলিশের বাড়ি ভোলায় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা