লালমোহনে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান মিলন অনিয়ম-দুর্নীতি
উপজেলা প্রতিনিধিঃ ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান মিলন অনিয়ম-দুর্নীতি করে কোটি টাকার বাণিজ্য করেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ ক্ষুদ্র মেরামত, রুটিন মেইনটেন্যান্স, স্লিপসহ বিভিন্ন বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেও এখনো থেমে নেই তার কর্মকাণ্ড। তিনি বরাদ্দকৃত সব খাতের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে নিয়ে নিতেন।
কোনো কোনো বরাদ্দের অর্থ প্রধান শিক্ষকদের না বলেই গায়েব করে ফেলারও অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার ২১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে তার এমন বাণিজ্যের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দায়ের হলে বিভাগীয় তদন্তও হয়। তবুও সব অভিযোগ চাপা দিয়ে তিনি টানা সাড়ে তিন বছর বহাল তবিয়তে রয়েছেন লালমোহনে।
তার আত্মসাতের বড় একটা অংশ চলে যেত বিগত সরকারের রাজনৈতিক তহবিলে। যার কারণে ওই সময় তার ক্ষমতার কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতেন না। এ কর্মকর্তা লালমোহনে যোগদানের পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫-২০ বছরের ভবনগুলো আগের দলীয় কর্মীদের গোপন নিলামে ভেঙে নিতে সহায়তা করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ভবনগুলো ক্লাস করার উপযোগী থাকলেও সেগুলো ভেঙে নেওয়ায় একাধিক স্কুলে ক্লাস করতে বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে এখনো। অনিয়মের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও দায়ের হয়। এছাড়া ২০২২ সালে কালমা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আকতার হোসেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষা কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান মিলন শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দকৃত ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরের ক্ষুদ্র মেরামতের আওতায় প্রায় ৯২ লাখ ও রুটিন মেইনটেন্যান্স থেকে প্রায় ২২ লাখ টাকা এবং অন্যান্য বরাদ্দ থেকে সাত লাখ টাকা অর্থাৎ সর্বমোট প্রায় এক কোটি ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
তিনি প্রধান শিক্ষকদের ডেকে এনে ব্যাংকের চেকে স্বাক্ষর রেখে কখনো অর্ধেক টাকা বা তার চেয়ে কম টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার ভয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
কোনো ভুক্তভোগী এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করলে তদন্তের আগেই মিটিং ডেকে প্রধান শিক্ষকদের এ ব্যাপারে কেউ যেন মুখ না খোলেন সে বিষয়ে সতর্ক করে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধান শিক্ষক জানান, প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রতি বছর বিভিন্ন বরাদ্দ হয়। এসব বরাদ্দের বড় একটা অংশ রেখে দিতেন তিনি। অফিস ও শিক্ষককের মধ্য থেকে তার টাকা কালেকশনের জন্য নির্ধারিত লোক ছিল। তাদেরও একটি ভাগ থাকত এ অর্থ থেকে। এছাড়া শিক্ষকদের লোন ফরমে স্বাক্ষর করতে এবং ট্রেনিংয়ে নাম দেওয়ার জন্য টাকা আদায় ছিল তার নিয়মিত কাণ্ড।
বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষকদের কারণে-অকারণে শোকজ করার মাধ্যমে প্রতিদিন তার একটা বড় আয় ছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে গত বছরও এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের হাতে তিনি অফিসেই লাঞ্ছিত হয়েছিলেন।
অভিযোগের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য পত্র দেওয়া হয়।
অভিযোগ আছে দুর্নীতি দমন কমিশনেও। কিন্তু তৎকালীন অদৃশ্য নির্দেশে এসব তদন্ত থমকে যায়। তিনি লালমোহনের আগে যে স্থানে চাকরি করেছেন, সেখান থেকেও একইভাবে দুর্নীতির কারণে স্ট্যান্ড রিলিজ হয়ে লালমোহন আসেন। আর এখানে এসেই তিনি সবচেয়ে সুবিধা পেয়ে শক্ত আসন গেড়ে বসেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান মিলনের ফোনে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেন নি।
আরও সংবাদ পড়ুন।
সাবেক সংসদ শাওন হেলিকপ্টারে মাদক পৌঁছাতেন! এলজিডি – পাউবো থেকে নিতেন ১০ শতাংশ
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
লালমোহনে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগে – দুদকের অভিযান
আরও সংবাদ পড়ুন।
সাংবাদিক তৈয়্যবুর হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী শীর্ষ সন্ত্রাসী দুই সাবেক চেয়ারম্যান গ্রেফতার
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
লালমোহনের ধলী গৌড়নগর কলেজে ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষার্থী ভর্তি – দুদকের অভিযান
আরও সংবাদ পড়ুন।
লালমোহনে চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা; জেলা জুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ
আরও সংবাদ পড়ুন।
লালমোহনে আজিজিয়া এতিমখানা ও মাদ্রাসার সভাপতি’র বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান
আরও সংবাদ পড়ুন।
সাংবাদিক তৈয়্যবুর হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী শীর্ষ সন্ত্রাসী দুই সাবেক চেয়ারম্যান গ্রেফতার
আরও সংবাদ পড়ুন।
লালমোহনের মেঘনায় মৎস্য অফিসের অভিযানে আটককৃত মালামাল আত্মসাৎ ও বিক্রি