সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন অভিনব কায়দায় ঘুসের টাকা বাড়িতে পাঠান

Picsart_23-01-01_15-49-37-741.jpg

সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন অভিনব কায়দায় ঘুসের টাকা বাড়িতে পাঠান

অপরাধ প্রতিবেদকঃ রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রার রামজীবন কুণ্ডু। মাত্র ৬ বছর বয়সেই তিনি পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার (মুজিবনগর কর্মচারী) সনদ! ওই সনদে তিনি চাকরি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার জন্মসনদ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ছিলেন ৬ বছরের শিশু। প্রকৃতপক্ষে ‘মুজিবনগর কর্মচারীর’ জাল সনদ দিয়ে এখন পর্যন্ত সাবরেজিস্ট্রার পদে চাকরি করে যাচ্ছেন।

যুগান্তরের অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তার পথ ধরেই দেশে এখন ৩৯ জন সাবরেজিস্ট্রার বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কর্মরত আছেন। এই চাকরির সুবাদে রামজীবন কুণ্ডু কয়েক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সংসদ-সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনের ভাগ্নি জামাতা বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ের সূত্রে এবং রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রতিটি দলিল সম্পাদনের জন্য তাকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ঘুস দিতে হতো।

রংপুর সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন এক থেকে দুই শতাধিক দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে দেখা যায় তিনি প্রতিদিন দলিল সম্পাদন বাবদ প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা ঘুস নিতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার সহকর্মীরা জানান, তিনি রংপুর নগরীর আরএমসি মার্কেটের সামনে ৮ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার ওপরে। রাজারহাটে নিজ গ্রামে জমি কিনেছেন, যার বাজারমূল্য এক কোটি টাকার বেশি। ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। রংপুর ধাপ চেকপোস্ট সড়কে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।

প্রতিদিন সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ঘুসের টাকা বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য রনি নামে একজনকে তিনি তার অফিসে নিজের চেয়ারের পাশে কম্পিউটার দিয়ে বসিয়ে রাখতেন। রনি টাকার হিসাব রাখত। সে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী নয়। বাসা পর্যন্ত ঘুসের টাকা পৌঁছে দিত রনি নিজেই। এজন্য তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন সাবরেজিস্ট্রার। আর এই সুযোগে রনি নিজেই ধাপ সাগর পাড়ায় ৫ তলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। তার একাধিক মাইক্রোবাস রয়েছে বলেও জানা গেছে।

জন্ম সদনে রামজীবন কুণ্ডুর জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১৯৬৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছরেরও কম। এরপরও তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চাকরি করছেন। তার এই জাল সনদের বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। দেশে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসাবে ২০০৯ সালে ১৯০ জনকে সাবরেজিস্ট্রার পদে আত্তীকরণ করা হয়েছিল উচ্চ আদালতের নির্দেশে। তাদের মধ্যে ১৯৬৮, ১৯৬৭, ১৯৬৬, ১৯৬৫ সালে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরাও ছিলেন। যাদের বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় মাত্র ৩ থেকে ৬ বছর ছিল।

জালিয়াতির মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিয়ে তখন নিবন্ধন দপ্তরসহ আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। কারণ মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। ওই সরকারের কর্মচারী হতে হলে তাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে তাদের জন্মসাল হওয়া দরকার ১৯৫২ অথবা তার পূর্বে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়াদের সবারই জন্ম তারিখ ছিল ১৯৫৩ সালের পরে। এর মধ্যে ১৩৮ জনের বয়সই ছিল ১০ বছরের নিচে। আর ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সালে জন্ম তারিখ আছে এমন সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫ জন।

মূলত ’৬৪ সালের পর যাদের জন্ম দেখানো হয়েছিল তাদের ৩৯ জনই এখন কর্মরত রয়েছেন এবং আগামী বছর তারা অবসরে যাবেন।

জানা যায়, ২০০৯ সালে মুজিবনগর কর্মচারীর কোটায় সাবরেজিস্ট্রারের চাকরি পাওয়ার আগে রামজীবন কুণ্ডু কুড়িগ্রামের রাজারহাটে একটি প্রাইভেট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।

আরও সংবাদ পড়ুন।

রেজিস্ট্রেশন বিভাগ নিয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মন্তব্যে নিন্দা

আরও সংবাদ পড়ুন।

২০ জেলায় নতুন জেলা রেজিস্ট্রার; ১০ সাব-রেজিষ্টারের জেলা রেজিস্ট্রার হিসাবে পদোন্নতি

আরও সংবাদ পড়ুন।

নিবন্ধন অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি

আরও সংবাদ পড়ুন।

https://wnews360.com/archives/65202

আরও সংবাদ পড়ুন।

তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষের অভিযোগে – দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

সারাদেশে জমির নিবন্ধন কর কমানো হয়েছে; জমির ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই সুবিধা পাবেন

আরও সংবাদ পড়ুন।

ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আরও সংবাদ পড়ুন।

আসছে নতুন প্রজ্ঞাপন – জমি-ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশনে খরচ কমবে

আরও সংবাদ পড়ুন।

সাব রেজিস্ট্রার মোসারফ হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী মারজাহান’র বিরুদ্ধে দুদকে মামলা

আরও সংবাদ পড়ুন।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার হাসানুজ্জামানের ঘুষ দাবী – দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

অহিদুল ইসলাম ঢাকা জেলার রেজিস্ট্রার দুর্নীতির মামলায় কারাগারে

আরও সংবাদ পড়ুন।

তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষের অভিযোগে – দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার – ঘুস দুর্নীতিতে সাবরেজিস্ট্রাররা বেপরোয়া

আরও সংবাদ পড়ুন।

জনস্বার্থে চার জেলা রেজিস্ট্রারকে বদলি

আরও সংবাদ পড়ুন।

সাব-রেজিস্ট্রার তনু রায় সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top