ভোলায় কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবিরের দূর্নীতির শেষ কোথায়?

Picsart_23-08-16_12-54-16-936.jpg

ভোলায় কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবিরের দূর্নীতির শেষ কোথায়?

সাগর চৌধুরীঃ ভোলা জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি’র বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি’র বিষয়ে স্থানীয় কৃষকের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবিরের বিরুদ্ধে, সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। নামে বেনামে বিল ভাউচারের মাধ্যমে সরকারের বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন তিনি।

অবৈধভাবে চার্জ গ্রহনঃ যদিও ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় সমপদের কর্মকর্তা উপস্থিত থাকা সত্বেও হাসান ওয়ারিসুল কবির সরকারের বিধি ভেঙ্গে প্রায় প্রতিটি উপজেলায় অনৈতিক ভাবে দায়িত্ব নিয়ে বিল ভাউচারের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, কোন প্রকার কাজ ছাড়াই! জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তার অনিয়ম ও দূর্নীতি এখন জেলার প্রতিটি কৃষকের মুখে মুখে।

ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলা ছাড়া বাকি ৬টি উপজেলার চার্জ গ্রহন করেন তিনি। বর্তমানে তিনি বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। নিয়ম অনুযায়ী পাশের উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা এই দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু সেই নিয়মের কোন তোয়াক্কা করেছেন না জেলা কর্মকর্তা। ক্ষমতা বলে চার্জ বুয়ে নিয়ে বিভিন্ন বিল ও ভাউচারের নামে সরকারের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, একজন ডিসিকে কখনো উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা এসি ল্যান্ড হিসাবে চার্জ নিতে না দেখা গেলেও ডিসি পদমর্যাদার একজন কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তাকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার চার্জ নিতে দেখা গেছে এবং ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রমান ও আছে।

স্থানীয় কৃষকরা আরও অভিযোগ করে বলেন, ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির চার্জ নিয়েই তিনি লাপাত্তা হয়ে যান। কোন কোন কৃষক কোন বিষয়ে হেল্প চেয়ে ফোন করলেও তিনি সাড়া দেন নি। এমনকি বরাদ্দ পেতে তিনি ভূয়া কৃষকদের নাম তালিকা পাঠিয়ে সরকারের বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন। ফলে প্রতিটি উপজেলার কৃষকরা সরকারের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বোরহানউদ্দিনের চার্জ বুজে নেবার পর বোরহানউদ্দিন উপজেলার কৃষকরা একদিনও তাকে অফিসে পায় নি। ফসলের নানা রকম রোগব্যাধি নিয়ে কথা বলার সুযোগও তারা পান নি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে এই উপজেলার কৃষি ও কৃষক।

বোরহানউদ্দিন ও ভোলা সদর কৃষি কর্মকর্তা হজ্জে গিয়েছেন, সেই সুযোগে ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির পাশের উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাকে চার্জের দায়িত্ব না দিয়ে জেলা কর্মকর্তা চার্জ বুঝে নিয়েছিলেন! কেন? কারণ চার্জ বুজে নিলেই সেখানে মধু আছে। সেই মধুর লোভে উপজেলায় তিনি চার্জ নিয়েছেন তিনি।

ছুটি নেবার অধিকার সকল কর্মকর্তাই পেয়ে থাকেন। কিন্তু
দৌলতখান উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাকে লম্বা ছুটিতে পাঠিয়ে ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির চার্জ নেন এবং সরকারের বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন। সরকারের বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন।

এদিকে, তজুমদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব লাল সরকার বদলি হলে, ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির চার্জ বুজে নেন এবং সরকারের বরাদ্দ নয়ছয় করা সহ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

যদিও সেখানকার পাশের উপজেলায় সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা ছিলেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী পাশের উপজেলার কর্মকর্তার দায়িত্ব নেবার কথা থাকলেও জেলা কর্মকর্তা মধু খেতে সেখানে চার্জ বুঝে নেন।

ভোলা জেলার একমাত্র দ্বীপ উপজেলা মনপুরা, সেই মনপুরার কৃষি কর্মকর্তা আবু হাসনাইন লালমোহনে পোষ্টিং হলে; ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির চার্জ বুজে নেন।

এদিকে, লালমোহন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শাহাবুদ্দিন দায়িত্বে ছিলেন, তখন তাকে ছুটি দিয়ে ৪ মাসের এক চিল্লায় পাঠান।
ফলাফল ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির চার্জ বুঝে নেন সেখানকার।

পুরো জেলার কৃষি কর্মকর্তার দায়িত্ব একাই হাতের মুঠোয় নিয়েছেন। কোন কোন কর্মকর্তা বিষয়টি জেনে বৈধও অবৈধ বিষয়ে প্রশ্ন করলে, সেই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হুমকি দামকি এমনকি চাকরি খাওয়ারও হুমকি দিয়েছেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির।

কৃষি উপকরণ বিতরণে দূর্নীতিঃ ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকদের সহায়তা প্রদান এবং কৃষকদের কৃষি উপকরণ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছেন তিনি। সম্প্রতি নারকেল গাছ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন তিনি। কৃষকদের নারকেল চারা না দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু মানুষকে দেওয়া হয়েছে যা সরকারের বিধি পরিপন্থী। বোরহানউদ্দিন উপজেলা ও দৌলতখান উপজেলার কৃষকরা একাধিক অভিযোগ করেন।

দৌলতখান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও দৌলতখান উপজেলার কৃষি কর্মকর্তার কাছে নারকেল চারা বিতরণের কৃষকদের তালিকা চাইলেও কর্মকর্তাগণ কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। তালিকা দেন নি।

বিভিন্ন ধরনের বীজ, সার ও ঔষধ বিতরণে তিনি বিভিন্ন উপজেলায় ভুয়া কৃষকের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে সরকারের বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন। যা সরকারের আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।

সরজমিনে, মাঠের কৃষকদের সাথে এই প্রতিবেদক সরাসরি যোগাযোগ করেন এবং সরকারের প্রনোদনার আওতায় বীজ, সার ও ঔষধ বিতরণের বিষয়ে জানতে চাইলে, রেজিষ্টার্ড ও নিবন্ধিত কৃষকরা এসব প্রনোদনার বিষয়ে সরাসরি অস্বীকার করেন। তাহলে কৃষকদের মাঝে বিতরনের জন্য যে সার,বীজ ও কীটনাশক দেওয়া হলো সেগুলো গেল কোথায়?

অর্থনৈতিক লাভবান হয়ে বদলিঃ সরকারের বিধিতে উল্লেখ আছে উপসহকারী কৃর্ষিকর্মকর্তা বা so কে নিজ জেলার নিজ উপজেলায় বদলী করা যাবে না।

কিন্তু স্থানীয় অফিসের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন, ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রহন করে so দের নিজ উপজেলায় বদলি করেছেন। একাধিক জনকে নিজ নিজ উপজেলায় বদলি করেছেন। তিনি নিয়েছেন নানা বিধ অর্থনৈতিক সুবিধা।

স্থানীয় ভোলা জেলার বিভিন্ন so দের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির অর্থের বিনিময়ে বদলী ও পদায়ন করেছেন। যা সরকারি চাকুরী আইনে অপরাধ।

সরকারের বরাদ্দ হারভেষ্টার মেশিন বিক্রিঃ শেখ হাসিনা সরকার কৃষকদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য ধান কাটার মেশিন হারভেষ্টার, ভর্তুকি মুল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরন করার জন্য দিয়েছেন। কিন্তু ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির সেই মেশিন কতিপয় দূর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্মতার সাথে যোগসাজশ করে, ভূয়া কৃষকের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এই মেশিনগুলো ভূয়া কৃষকের নামে বরাদ্দ করে, কস্পানির সাথে আঁতাত করে, মেশিনের কাগজ বিক্রি করেছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।

রাতের অন্ধকারে যখন সেই সব মেশিন তজুমদ্দিন উপজেলা থেকে বের করে নিয়ে আসে বোরহানউদ্দিন উপজেলায়, সেখান থেকে রাতের অন্ধকারে মেশিনগুলো অজানা গন্তব্য নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবিরের মুঠোফোনে একাধিকবার জানানো হয়, কিন্তু মেশিনগুলো ভোলা থেকে পাচার হওয়া ঠেকানোর কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। সেই ঘটনার পরের দিন সকালে তার অফিসের সামনের গেটে সাংবাদিকরা হাসান ওয়ারিসুল কবিরকে রাতের ভিডিও দেখালেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেন নি। যা একজন জেলা কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্বে চরম অবহেলা। সরকারের সম্পদ ও সম্পত্তি বেহাত করেছেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে তিনি এমন অবহেলা করতে পারেন না।

তজুমদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলায় চার্জ গ্রহন করে, ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির এই সব অবৈধ কাজের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। একাধিক হারভেষ্টার মেশিন তিনি অবৈধভাবে বিক্রী করেছেন। যা সরকারের আইন অমান্য করেছেন। সরকারের অর্থ ও সম্পদ আত্মসাৎ করেছেন। আইনে দন্ডনীয় অপরাধ করেও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন।

এই সব বিষয়ে কোন কৃষক বা সাংবাদিক তাকে জানালে, তথ্য দাতার সাথেও তিনি সু ব্যহার করেন নি। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাক্তি ও সংসদ সদস্যদের পিএস দ্বারা হুমকি ও দামকি দিয়েছেন। রিপোর্ট যেন না হয় সেজন্য গণমাধ্যম কর্মীকেও নানা ভাবে হেনস্তা করেছেন। রিপোর্টারকে নানা ভাবে করেছেন হয় রানি।

দৌলতখান উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়রার কাছে কৃষকদের মাঝে ধান কাটার মেশিন হারভেষ্টার বিতরনের তালিকা চাইলেও তিনি এই প্রতিবেদককে তালিকা দেন নি। বরং তিনি বলেন, ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবিরের কাছে এসব তথ্য সংরক্ষিত আছে, আপনি সেখান থেকে নিয়ে নিন।

এদিকে, তজুমদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল এর কাছে কৃষকদের মাঝে ধান কাটার মেশিন হারভেষ্টার বিতরনের তালিকা চাইলেও তিনি এই প্রতিবেদককে তালিকা দেন নি। তিনি বলেন, আমি অল্প কয়েক মাস জয়েন করেছি। তাছাড়া আপনি যে তথ্য চেয়েছেন! সেটা আমি এখানে জয়েন করার আগের তথ্য। আমি এখানে জয়েন করার পর এমন কোন মেশিন বিতরন করা হয় নি। এই উপজেলার চার্জে ছিলেন,

ভোলা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে জানতে ফোন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ভোলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির স্যার ভোলা সদরের চার্জে ছিলেন।

তিনি ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সরকারের টাকা উত্তোলন করেছেন? এমন প্রশ্নে বলেন, সেটা আপনি স্যারের কাছে প্রশ্ন করেন।

চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুকের কাছে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমি শারীরিক ভাবে একটু অসুস্থ আছি। প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, চরফ্যাশন উপজেলায় আমি দায়িত্ব বুজে নিয়েছি। স্যারের বিষয়ে আমি কি বলব। তিনি আমার সিনিয়র অফিসার।

আরও সংবাদ পড়ুন।

কৃষি কর্মকর্তা কাজ না করেই ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ

আরও সংবাদ পড়ুন।

কৃষি তথ্য সার্ভিস – তিন কর্মকর্তার সিন্ডিকেট, লুটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা!

আরও সংবাদ পড়ুন।

ভোলায় কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবিরের দূর্নীতির শেষ কোথায়?

আরও সংবাদ পড়ুন।

সার আত্মসাতের অভিযোগে – সাবেক এমপি পোটন সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আরও সংবাদ পড়ুন।

কৃষিঋণ বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ

আরও সংবাদ পড়ুন।

৮ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ

আরও সংবাদ পড়ুন।

সারা দেশে ৭৫টি বীজ সংরক্ষণাগার নির্মাণ করবে সরকার

আরও সংবাদ পড়ুন।

রবি মৌসুমে ১০ ফসলের উৎপাদন বাড়াতে ১৮৯ কোটি টাকার প্রণোদনা

আরও সংবাদ পড়ুন।

দুই হাজার কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরন

আরও সংবাদ পড়ুন।

কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হাজার কোটি টাকা

আরও সংবাদ পড়ুন।

রক্ষকই ভক্ষক – কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পে একাধিক অনিয়ম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top