তাপমাত্রা আরও বাড়বে – আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস

Picsart_24-04-21_19-53-50-332.jpg

সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহের দাপট কমছেই না। উলটো দিনে দিনে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। সারা দেশে জারি আছে হিট অ্যালার্ট।

হিট স্ট্রোকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গাজীপুর, নরসিংদী, রংপুর, সিলেট, মেহেরপুর ও ঝালকাঠিতে এক জন করে, চট্টগ্রামের পটিয়ায় তিন জন এবং দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দুই জন মারা গেছেন।

আবহাওয়া বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিচ্ছেন, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে তাপমাত্রা শত বছরের রেকর্ড ভাঙতে পারে। যশোর, চুয়াডাঙ্গা, ঈশ্বরদী অঞ্চলে ৪৪ ডিগ্রিতে পৌঁছতে পারে তাপমাত্রা।

বিশেষ প্রতিবেদকঃ আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গা, যশোর এবং পাবনার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া খুলনা বিভাগের বাকি অংশ, রাজশাহী জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ চলছে। একই সঙ্গে দেশের বাকি অংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল ৬ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির ওপরে। রাজশাহীতে ৪১.৫, ঈশ্বরদীতে ৪২, টাঙ্গাইলে ৪০.৪, যশোরে ৪০.২, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ৩৮.২ থাকলেও ৪২ ডিগ্রি অনুভূত হয়েছে।

দেশ জুড়ে যেন বইছে মরুভূমির ‘লু হাওয়া’। তাপের এই ঊর্ধ্বমুখী পারদে ওষ্ঠাগত প্রাণ। প্রচণ্ড গরম, অতিরিক্ত আর্দ্রতা আর প্রকৃতিতে বাতাসের উপস্থিতি না থাকায় পরিস্থিতি দিনদিন অসহ্য হয়ে উঠছে। দুর্বিষহ সময় পার করছেন রাজধানীবাসীও। প্রচণ্ড খর রোদের কারণে ঘরবাড়ি তপ্ত হয়ে উঠছে, রাস্তা থেকে গরম বাতাস গায়ে জ্বালা ধরাচ্ছে। বাড়িতে কিংবা কর্মস্থলে ফ্যানের বাতাসেও তপ্তপ্রাণ জুড়াচ্ছে না। তীব্র গরমে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন কর্মজীবী মানুষজন। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও রিকশা-ভ্যান চালকরা দুর্বিষহ গরমে তাদের কর্মব্যস্ততা হারিয়ে ফেলেছেন।

আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম জানান, গতকাল বেলা ৩টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা বিভাগের বেশ কিছু জেলার ওপর দিয়ে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিদ্যমান রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা এমনই থাকবে। ২৭ ও ২৮ তারিখের দিকে গিয়ে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

এদিকে তাপপ্রবাহে দুর্ভোগ এড়াতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দেশের স্কুল-কলেজ। করোনাকালীন দুর্যোগের মতো অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ইতিমধ্যে অনলাইন ক্লাসের ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ, আবহাওয়াবিদ এবং নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা বলছেন, যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে আগামী কয়েক বছর গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রার এমন বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন প্রধান ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে তাপমাত্রার এমন বৈরী আচরণের জন্য অপরিকল্পিত নগরায়ণেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। দেশি এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলো বলছে, শুধু ঢাকাতেই বছরে অসহনীয় গরম দিনের সংখ্যা গত ছয় দশকে অন্তত তিন গুণ বেড়েছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স ঐ সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি। গরম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে সংস্থাটি বলছে, গত ২৮ বছরে ঢাকা থেকে ২৪ বর্গকিলোমিটারের সমআয়তনের জলাধার ও ১০ বর্গকিলোমিটারের সমপরিমাণ সবুজ কমে গেছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ আদিল খান মনে করেন, এটা শুধু ঢাকার চিত্র নয়। জেলা-উপজেলা পর্যায়েও পুকুর বা জলাধার ভরাট করে পরিকল্পনাহীন ভবন উঠেই চলেছে। নগরগুলোর প্রতিটি ভবন পরিকল্পিত না হলে এবং এলাকাগুলোতে সবুজের ভারসাম্য আনা না হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে।

আরও সংবাদ পড়ুন।

হিট অ্যালার্ট জারি – শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ল ৭ দিন

আরও সংবাদ পড়ুন।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল দশা; ডাক্তার ও নার্সদের ক্ষমতার দাপট কোথায় ?

আরও সংবাদ পড়ুন।

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ তৈরি হতে পারে – আবহাওয়া অধিদপ্তর

আরও সংবাদ পড়ুন।

সারাদেশে ঝড়ের আভাস; বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে

আরও সংবাদ পড়ুন।

হিট স্ট্রোকে স্বাস্থ্যের যত্ন কীভাবে নেবেন? দুই চিকিৎসকের পরামর্শ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top