নিজের সন্তান বিক্রি করলেন বাবা। নবজাতককে ১ লাখ টাকায় বিক্রির চুক্তি করেন।
নগর প্রতিবেদকঃ সন্তান জন্ম নেওয়ার পরপরই বাবা আদর আলী নবজাতককে এক লাখ টাকায় বিক্রির চুক্তি করেন। মাদক কেনার টাকা যোগাড় করতেই তার এই সিদ্ধান্ত। সন্তান বিক্রির চুক্তিপত্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মায়ের কাছে পাঠানো হয়। সন্তান বিক্রির কথা শুনে আর্তনাদ করে ওঠেন বিউটি আক্তার। সন্তান বিক্রি করবেন না বলে জানিয়ে দেন। বিউটির মা-ও নাতিকে বিক্রি করতে দেবেন না বলে তর্কে জড়িয়ে পড়েন আদর আলীর সঙ্গে। হাসপাতালের আনসার সদস্যরা আদর আলীকে আটক করেন। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শিশুটির ক্রেতা পালিয়ে যান। শনিবার ঢামেক হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
আদর আলীর গ্রামের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার সালগাড়িয়া তালবাগান এলাকায়। তৃতীয় স্ত্রী বিউটিকে নিয়ে তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুর সিটি কলোনীতে বাস করেন। শনিবার দুপুরে ঢামেক হাসপাতালে স্বাভাবিকভাবেই বিউটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন।
নবজাতকের নানী ইয়ারুন বেগমের অভিযোগ- আদর আলী গাড়ি চালক এবং মাদকাসক্ত। দুপুরে সন্তান জন্ম নেওয়ার পরপরই আনোয়ার নামে একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন আদর। তার কাছে এক লাখ টাকায় ওই সন্তান বিক্রির চুক্তি করা হয়। পরে ওয়ার্ডের ভেতর বিউটির কাছে একটা কাগজে স্বাক্ষর করতে পাঠান সন্তানের বাবা। এ নিয়ে ওয়ার্ডের মধ্যেই তর্ক শুরু হয়। ইয়ারুন বেগম বলেন, শিশুটির ক্রেতা আনোয়ার তার বোনের ছেলে। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের গাউসিয়া এলাকায়।
নবজাতকের মা বিউটি বলেন, সংসারে অভাবের কারণে মাঝেমধ্যেই তার স্বামী সন্তান বিক্রি করার কথা বলতেন। তিনি সন্তান বিক্রি করতে রাজি নন।
হাসপাতালের আনসার ক্যাম্পের ইনচার্জ প্লাটুন কমান্ডার আব্দুর রউফ জানান, নবজাতক বিক্রির খবর পেয়ে শিশু ওয়ার্ডের সামনে থেকে আদর আলীকে আটক করা হয়। পরে তাকে পুলিশ ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়। তিনি হাসপাতালের ভেতরেই সন্তান বিক্রির দেনদরবার করছিলেন। ক্রেতা পালিয়ে যান।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই মো. মাসুদ জানান, পারিবারিকভাবে বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়। যে কারণে আদর আলীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।