নিজে দুর্নীতি করবো না, এটা হতে পারে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধার একটি নিদর্শন – মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্

PicsArt_03-17-03.56.31.jpg

নিজে দুর্নীতি করবো না, এটা হতে পারে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধার একটি নিদর্শন -মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্

বিশেষ প্রতিবেদকঃ আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আলোচনা সভার শুরুতেই দুদক চেয়ারম্যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জাতির পিতার তিন সন্তানসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত শহীদদের এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সকল শহীদ ও সম্ভ্রব হারানো মা-বোনদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

এসময় দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ বলেন, অজপাড়াগাঁয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, সুবিধা বঞ্চিত অনগ্রসর অঞ্চল থেকে কেবল সাহস এবং চারিত্রিক দৃঢ়তার কারণেই বঙ্গবন্ধু এই পর্যায়ে উঠে এসেছেন। আমার কাছে মনে হয়, বঙ্গবন্ধুকে এখনও সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। যতদিন যাবে, ততই জাতির পিতা সঠিকভাবে মূল্যায়িত হবেন।

বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টি সম্পর্কে বলতে গিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আজকের বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২০৬৪ মার্কিন ডলার, সেখানে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১১৩০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৫.২ শতাংশ, পক্ষান্তরে পাকিস্তানের ০.৪ শতাংশ, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার- যা পাকিস্তানের মাত্র ২০.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের গড় আয়ু যেখানে ৭২ বছরেরও বেশি তা পাকিস্তানের ৬৭ বছর, বাংলাদেশের শিশু মৃত্যু প্রতি হাজারে ২৫ জন, অপরদিকে পাকিস্তানে ৫৯ জন, প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের হার ৯৮ শতাংশ, পাকিস্তানে তা ৭২ শতাংশ। এর মানে কি? এর অর্থ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন, দেশ স্বাধীন না হলে উন্নয়ন হবে না। এখানেই বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা। উন্নয়নের এ অভিযাত্রায় সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়শিয়ার সাথে বাংলাদেশও বঙ্গবন্ধুর নের্তৃত্বে যাত্রা শুরু করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে, বাংলাদেশ আজ এসব দেশের কাতারেই থাকতো।

তিনি বলেন, আমরা যদি বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসি , তাহলে তার আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে স্ব-স্ব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধু সারা জীবন অন্যায়-অবিচারে বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তিনি দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর এমন একটি রাজনৈতিক জীবন রয়েছে, যার বিরুদ্ধে তাঁর শত্রæরাও দুর্নীতির একটি অভিযোগ করতে পারে নাই। দেশের দুর্নীতি কতটা কমাতে পারবো সেটা ভবিষ্যৎ বলবে, তবে আজ আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে পারি-নিজে দুর্নীতি করবো না। নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে দুর্নীতি দমনে স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবো। এটাই হবে জাতির পিতার প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ সম্মানের নিদর্শন।

আলোচনা সভায় দুদক কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান বলেন, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যখন চিন্তা করি ,তখন মানসপটে ভেসে ওঠে-একটি তর্জনী, বজ্রকণ্ঠ ও একটি মুষ্টিবদ্ধ হাত। এর ভাষা হচ্ছে অন্যায়-অবিচার-নিপীড়ন-নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার একটি কণ্ঠ। স্বাধীনতার আগেই এই ভূখÐের নাম বাংলাদেশ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। আবার আমাদের জাতীয় সংগীত – “আমার সোনার বাংলা”- এটিও তিনি স্বাধীনতার আগেই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন।

দুদক কমিশনার মোঃ জহুরুল হক বলেন, জাতির পিতা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতা ছিলেন বলেই ১৯৭৩ সালেই বাংলাদেশ আইটিইউ-এর সদস্য পদ গ্রহণ করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিত্তি তিনিই স্থাপন করে দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালেই বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেন। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো ৮০’র দশকেই বাংলাদেশ নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে পারতো। যদিও তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৮ সালে সেই স্যাটেলাইট আমাদের হয়েছে।

দুদক সচিব ড. মোহা: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনো দিন অন্যায়কে মেনে নেননি। সকল সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি খোকা থেকে শেখ মুজিব, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়েছেন। তিনি একসময় ছিলেন জাতির সম্পদ, আজ তিনি আন্তর্জাতিক সম্পদে পরিণত হয়েছেন।

দুদক মহাপিরচালক মোঃ জহির রায়হানের সঞ্চালানায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক মহাপিরচালক মোঃ রেজানুর রহমান, দুদক পরিচালক মোঃ মনিরুজ্জামান খান, দুদকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ কামরুল আহসান, দুদক সজেকা রাজশাহীর উপপরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top