ইকবাল মাহমুদ কতজনকে ‘দায়মুক্তি’ দিয়েছেন, জানতে চায় হাইকোর্ট

PicsArt_03-11-12.17.05.jpg

ইকবাল মাহমুদ কতজনকে ‘দায়মুক্তি’ দিয়েছেন, জানতে চায় হাইকোর্ট

অপরাধ প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি দমন কমিশনের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ অবসরে যাওয়ার আগের পাঁচ মাসে দুদকের অনুসন্ধান থেকে কতজনকে ‘দায়মুক্তি’ দিয়েছেন, তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।

‘দায়মুক্তি’ দিয়ে থাকলে কেন তা দেওয়া হয়েছে, তাদের নাম, ঠিকানা সহ তালিকা আগামী ১১ এপ্রিলের মধ্যে দুদককে দিতে বলা হয়েছে।

দুদকে ‘অনুসন্ধান বাণিজ্য’- শিরোনামে গত ১৪ মার্চ দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন নজরে আসার পর মঙ্গলবার স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেয় বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ।

সেই সঙ্গে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবেদককে এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

ইকবাল মাহমুদ ২০১৬ সালের ১০ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন। প্রায় পাঁচ বছর তিনি দায়িত্ব পালন করে গত ৯ মার্চ তিনি বিদায় নেন।

এদিকে সরকারি সংস্থা সাধারণ বীমা করপোরেশনে ১০ বছর ধরে ‘জায়িয়াতি’ এবং ২৬ কোটি টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে সংস্থাটির অবস্থান কী, তা জানতে চেয়েছে আদালত। সাধারণ বীমা কর্তৃপক্ষকে তা লিখিতভাবে ১১ এপ্রিলের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত ‘১০ বছর ধরে জালিয়াতি, ২৬ কোটি টাকা আত্মসাত’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন নজরে আনার পর হাই কোর্টের একই বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এ প্রতিবেদনের প্রতিবেদককেও যাবতীয় তথ্য আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন দুটি আদালতের নজরে আনেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন মানিক। তিনি বলেন, “আজ সকালে দুটি পত্রিকার দুটি প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনলে আদালত দুটি প্রতিবেদনের বিষয়েই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দিয়েছেন।”

‘দুদকে ‘অনুসন্ধান বাণিজ্য’ শিরোনমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ের আগে ‘দুর্নীতির বহু রাঘব বোয়ালকে’ ছেড়ে দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

“তাদের দায়মুক্তি আড়াল করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন কিছু নিরীহ ও দুর্বল ব্যক্তিকে। সব মিলিয়ে শেষ ৫ মাসে তিনি ২ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি (দায়মুক্তি) দেন। তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রের।

“সূত্রটি জানায়, ইকবাল মাহমুদ বিদায় নেয়ার আগে স্বীয় কৃতকর্মের অনেক দালিলিক প্রমাণই যথাসম্ভব ‘নিশ্চিহ্ন’ করে যান। এর পরও এ প্রতিবেদকের হস্তগত হয় বেশকিছু নথি। সে অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই শতাধিক দুর্নীতির অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

“সূত্রমতে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলো সত্যিকারার্থে অনুসন্ধান হয়নি। হয়েছে অনুসন্ধান-বাণিজ্য। কথিত ‘নথিভুক্তি’ কিংবা ‘অনুসন্ধান পরিসমাপ্তি’র নেপথ্যে রয়েছে কোটি কোটি টাকার লেনদেন।”

আর বীমা করপোরেশনের জালিয়াতি নিয়ে মঙ্গলবার প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক হিসাব খুলে রাষ্ট্রীয় সংস্থা সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি) আয় থেকে ২৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র।

“চক্রটির নেতৃত্ব দিয়েছেন এ সংস্থারই প্রধান কর্যালয়ের অডিট অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগের ব্যবস্থাপক আবুল কাশেম। ১০ বছর ৬ মাস ধরে এ কাণ্ড ঘটে চললেও এসবিসি ছিল পুরোপুরি অন্ধকারে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top