বোরহানউদ্দিনের মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে অবৈধ জালে সয়লাব; মৎস্য কর্মকর্তা ঘাট থেকে চাঁদা তোলে

Picsart_24-01-31_01-09-59-101.jpg

বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধিঃ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে অবৈধ বিহুন্দি জালে ১ থেকে ২ ইঞ্চি জাটকা ইলিশ (ইলিশের পোনা)নিধনের মহাউৎসব চলছে। দেখার কেউ নেই!

প্রতি কেজি জাটকা ইলিশ (ইলিশের পোনা) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১ শত টাকা। প্রায় ১ শত থেকে ১২০টি জাটকা ইলিশ (ইলিশের পোনা) হয় ১ কেজি।

বিভিন্ন সময়ে সরেজমিনে গিয়ে ঘাট গুলোতে এমন চিত্র দেখা গেছে। তেতুলিয়া নদীর কাচারীর খাল নামক স্থান ও দরুনের খাল মাছ ঘাট এলাকায় প্রায় ১শত বিহুন্দি জাল ও অবৈধ কারেন্ট জালে নিধন হচ্ছে এসব জাটকা ইলিশ (ইলিশের পোনা)।

প্রতিদিন রাতে ও দিনে তেতুলিয়া নদীতে অবৈধ বিহুন্দি জাল, চড়গেড়া জাল,খুটিজাল জাটকা ইলিশ (ইলিশের পোনা) নিধন করছে জেলেরা। ভোর রাতে ঘাট গুলোতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মন জাটকা ইলিশ (ইলিশের পোনা) পাইকারি বিক্রি হয়।

ক্রয়কারী পাইকার কাচারির হাট বাজার ও আকবর ভিটা নামক স্থানসহ বিভিন্ন বাজারে সন্ধ্যায় খুচরা বাজারে বিক্রি ও পটুয়াখালী জেলায় ট্রলার যোগে পাচার করছে জাটকা ইলিশ (ইলিশের পোনা)।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় সাংবাদিক ও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ মুক্তিযোদ্ধারাও জাটকা নিধনের মহাউৎসবের অভিযোগ করলেও ঘাট গুলোতে কোস্ট গার্ডসহ নৌ পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের কোন অভিযান দেখা মেলেনি।

ফলে নির্বিঘ্নে অবৈধ বিহুন্দি জাল ও কারেন্ট জালে জাটকা ইলিশ (ইলিশের পোনা) নিধনের চলছে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা’র কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযান করবেন বলে জানান। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ বিভিন্ন ঘাট থেকে মৎস্য কর্মকর্তা নামে -বেনামে চাঁদা তোলেন। মৎস্য কর্মকর্তাকে এসব বিষয়ে জানানো হলেও তিনি পদক্ষেপ গ্রহন করেন না। বরং যারা অবৈধ ভাবে মৎস্য আহরন করে তাদের কাছে খবর পৌঁছে দেয়।

অন্যদিকে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রায়হান উজ্জামান জাটকা নিধনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

তবে, স্থানীয় জেলেরা গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা প্রতিটি ঘাট থেকে চাঁদা তোলেন নিয়মিত। ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের মধ্যেও কানাঘুষা চলে মনোজ কুমার সাহা’র এই ঘুষ বানিজ্য নিয়ে।

ঘটনা -১

দৌলতখান উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা বোরহানউদ্দিন উপজেলা সিমানায় অভিযান পরিচালনা করে, খুটিজাল, চরগেড়া জাল, নৌকা সহ অবৈধ ভাবে মাছ ধরার অপরাধে জেলেদের আটক করে জরিমানা করে এবং নৌকা নিলামে বিক্রি করে দেয়। কিন্তু বোরহানউদ্দিন মৎস্য কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন নি। অবৈধভাবে ঝাটকা আহরন ও ক্রয় বিক্রয় হলেও তিনি পদক্ষেপ নেন না৷ অজানা কারণে নিরব থাকেন।

ঘটনা -২

তজুমদ্দিন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসাননগর ইউনিয়নের সুইসগেট,খাসমহল ও হাকিমুদ্দিন মাছঘাটের সিমানা থেকে অবৈধ জাল ধরে নিয়ে যায় কিন্তু বোরহানউদ্দিন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করে নি। অবৈধ মৎস্য আহরন কারীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন নি। অদৃশ্য কারণে নিরব ছিলেন তিনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন বিসিএস মৎস্য কর্মকর্তা কতটা নিচে নামলে, সাচড়া ইউনিয়নের দরুনের খালে অবৈধ সুবিধা দিতে, মনির ডাকাতের কাছ থেকে কত ঘুষ নিয়েছেন! ঘটনা গোপনে ঘটালেও এটা এখন সবাই জানে!

দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় জন্য বোরহানউদ্দিন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে সরকার বেতন দেয়, ঘুষ খেয়ে, নাক ডুবিয়ে ঘুমানোর জন্য বেতন দেয় না।

স্থানীয় সচেতন মহল ভোলা জেলার জেলা প্রশাসক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবং বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি গুরুত্ব বিবেচনায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য বিশেষ অনুরোধ জানায়।

আরও সংবাদ পড়ুন।

দৌলতখানে অবৈধভাবে মাছ ধরার অপরাধে ৭ জেলের জরিমানা ও ৯টি নৌকা জব্দ

আরও সংবাদ পড়ুন।

ভোলায় মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে অবৈধ মাছ ধরছে; প্রশাসন নিবর

আরও সংবাদ পড়ুন।

৭০ টি অবৈধ মশারি জাল, ৫০০ টি অবৈধ খুঁটি জাল, অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ ও ধ্বংস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top