বরিশাল বিভাগের স্বতন্ত্রবিহীন ৫ আসনের নৌকার কান্ডারি হলেন আ স ম ফিরোজ (পটুয়াখালী-২), তোফায়েল আহমেদ (ভোলা-১), আলী আজম (ভোলা-২), আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ (বরিশাল-১) এবং আমির হোসেন আমু (ঝালকাঠি-২)।
রাজনৈতিক প্রতিবেদকঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭৬টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এসব নেতার আসনে দলীয় বা অন্য কোনো নেতা ভোটযুদ্ধে অংশ নেননি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকায় এসব আসনের হেভিওয়েট প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে। আসনগুলোতে নেই নির্বাচনি আমেজ।
নির্ভার প্রার্থীরাও তেমন একটা যাচ্ছেন না ভোটের মাঠে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জন করায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের শঙ্কা দূর করতে দলের মনোনয়নবঞ্চিতদের নৌকার বিরুদ্ধে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী হওয়ার নির্দেশনা দেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশের পর আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিতদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার হিড়িক পড়ে। নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাই শেষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৪টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮২ জন।
তথ্যানুয়ায়ী, ৩০০ আসনের মধ্যে ১৭৪ আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। এই ১৭৪ আসনের মধ্যে আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই ৭৬ আসনে। ফলে এ আসনগুলোর প্রার্থীদের জয় একরকম নিশ্চিত বলেই ধরা হচ্ছে। ৭৬ আসনের মধ্যে ৭০টিতে আওয়ামী লীগ এবং বাকি ৬টি আসনে অন্যান্য দলের প্রার্থীরা জয়ের পথে এগিয়ে আছেন।
আসনগুলোতে আছেন ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা (রাজশাহী-২)। তিনি ১৪ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে এ আসনে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন। আরও আছেন জাতীয় পার্টির এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১), এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (পটুয়াখালী-১), জাতীয় পার্টির এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫) এবং ময়মনসিংহ-৫ আসনে সালাহ উদ্দিন আহমেদ (মুক্তি)। মহাজোটের মিত্র হিসেবে জাতীয় পার্টিকে যে ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগ ছাড় দিয়েছে এর মধ্যে এই চারটি আসন রয়েছে।
দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা আসনগুলো থেকে তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। টাঙ্গাইল-৮ আসনে স্বতন্ত্র না থাকলেও এখানে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা আছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনুপম শাহজাহান জয়। আসনটিতে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন জাতীয় পার্টির মো. রেজাউল করিম।
স্বতন্ত্রবিহীন ৭০ জন নৌকার মাঝির মধ্যে রংপুর বিভাগে আছেন তিনজন। এরা হলেন- রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন (পঞ্চগড়-২), রমেশ চন্দ্র সেন (ঠাকুরগাঁও-১) এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি (রংপুর-৪)।
রাজশাহী বিভাগে স্বতন্ত্রবিহীন নৌকার মাঝি নয়জন। এরা হলেন- মজিবর রহমান মজনু (বগুড়া-৫), মো আবদুল ওদুদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), আসাদুজ্জামান আসাদ (রাজশাহী-৩), তানভীর শাকিল জয় (সিরাজগঞ্জ-১), জান্নাত আরা হেনরী (সিরাজগঞ্জ-২), আবদুল আজিজ (সিরাজগঞ্জ-৩), শফিকুল ইসলাম (সিরাজগঞ্জ-৪), আহমেদ ফিরোজ কবির (পাবনা-২) এবং গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স (পাবনা-৫)।
খুলনা বিভাগের নির্ভার মাঝির তালিকায় আছেন ৫ জন। এরা হলেন- জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান (মাগুরা-১), বীরেন শিকদার (মাগুরা-২), মাশরাফি বিন মর্তুজা (নড়াইল-২) এবং শেখ হেলাল উদ্দিন (বাগেরহাট-১) এবং নারায়ণ চন্দ্র চন্দ (খুলনা-৫)।
বরিশাল বিভাগের স্বতন্ত্রবিহীন ৫ আসনের নৌকার কান্ডারি হলেন আ স ম ফিরোজ (পটুয়াখালী-২), তোফায়েল আহমেদ (ভোলা-১), আলী আজম (ভোলা-২), আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ (বরিশাল-১) এবং আমির হোসেন আমু (ঝালকাঠি-২)।
ময়মনসিংহ বিভাগের স্বতন্ত্রবিহীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আছেন চারজন। তারা হলেন- নূর মোহাম্মদ (জামালপুর-১), আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম (জামালপুর-৩), ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল (ময়মনসিংহ-১০), সাজ্জাদুল হাসান (নেত্রকোনা-৪)।
ঢাকা বিভাগের ১৭টি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে নামেননি।
আসনগুলোতে নৌকার মাঝি হলেন- রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক (কিশোরগঞ্জ-৪), স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক (মানিকগঞ্জ-৩), প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান (ঢাকা-১), মোহাম্মদ সাঈদ খোকন (ঢাকা-৬), মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম (ঢাকা-৭), আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম (ঢাকা-৮), সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯), ফেরদৌস আহমেদ (ঢাকা-১০), মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন (ঢাকা-১১), আসাদুজ্জামান খান (ঢাকা-১২), আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক (ঢাকা-১৩), শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার (ঢাকা-১৫), শামীম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৪), আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (গোপালগঞ্জ-৩), নূর-ই আলম চৌধুরী (মাদারীপুর-১), শাজাহান খান (মাদারীপুর-২) এবং নাহিম রাজ্জাক (শরীয়তপুর-৩)। সিলেট বিভাগে স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই ছয়টি আসনে। ভাগ্যবানের এই তালিকায় আছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন (সিলেট-১), শফিকুর রহমান চৌধুরী (সিলেট-২), ইমরান আহমেদ (সিলেট-৪), মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান (মৌলভীবাজার-৩), মো আবদুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪) এবং মো আবু জাহির (হবিগঞ্জ-৩)। স্বতন্ত্রবিহীন আসন সবচেয়ে বেশি আছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এই বিভাগে স্বতন্ত্রবিহীন নৌকার মাঝির আসন সংখ্যা ২১। তারা হলেন- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪), ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), মো আবদুস সবুর (কুমিল্লা-১), ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন (কুমিল্লা-৩), প্রাণ গোপাল দত্ত (কুমিল্লা-৭), স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম (কুমিল্লা-৯), অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (কুমিল্লা-১০), আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ (চাঁদপুর-১), রফিকুল ইসলাম (চাঁদপুর-৫), আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের (নোয়াখালী-৫), মোহাম্মদ আলী (নোয়াখালী-৬), এস এম আল মামুন (চট্টগ্রাম-৪), তথ্য ও স¯প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৭), শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম-৯), ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৩), আশেক উল্লাহ রফিক (কক্সবাজার-২), সাইমুম সরওয়ার কমল (কক্সবাজার-৩), শাহীন আক্তার (কক্সবাজার-৪), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (পার্বত্য খাগড়াছড়ি), দীপংকর তালুকদার (পার্বত্য রাঙামাটি) এবং বীর বাহাদুর উ শৈ সিং (পার্বত্য বান্দরবান)।
আরও সংবাদ পড়ুন।
ভোটকেন্দ্র কারচুপি, অনিয়ম ও পেশি শক্তিমুক্ত রাখার নির্দেশ – সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যানবাহন নিয়ে মিছিল-শোডাউন নয়, মাইক চলবে ৬ ঘণ্টা