আচরণবিধি ভঙ্গ করলে প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারি – ইসি’র

Picsart_23-12-02_09-11-04-660.jpg

আচরণবিধি ভঙ্গ করলে প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারি – ইসি’র

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি ভঙ্গ করলে প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রবিবার এই হুঁশিয়ারি প্রার্থীদের মধ্যে প্রচার করতে সব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক প্রার্থীকে আচরণবিধি ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে শোকজ করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি।

৯ জন প্রার্থীকে শোকজ করা হয়। নির্বাচনি মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা দৃশ্যমান এবং তালিকা ধরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, দেশের নির্বাচনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে ইইউ। তারা নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচনের পরের পরিবেশও দেখবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সমাবেশ করতে চাইলে অনুমতি লাগবে বলে জানান তিনি।

আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমের সদস্যসহ সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নির্বাচনি এজেন্টকে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এর সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং ঐ বিধান ভঙ্গের দায়ে প্রদেয় শাস্তি, বিশেষ করে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলকরণের বিষয় অবগত করানো নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের আগাম প্রচারসামগ্রী সরানোর ব্যবস্থা নিতে মহাপুলিশ পরিদর্শককে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চিঠির অনুলিপি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এসেছে। 

এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন উপলক্ষে আইন ও বিধি অনুযায়ী সারা দেশ থেকে পোস্টার, ব্যানার, গেট, তোরণ ইত্যাদি প্রচারসামগ্রী অপসারণের নিমিত্তে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন টিম ও সেল গঠন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাঠ প্রশাসনের তৎপরতা দৃশ্যমান করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় তিনটি টিম ও সেল গঠনের জন্য বলা হয়েছে। দুটি ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম, নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠনের কথা বলা হয়। একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠনের জন্য বলা হয়েছে।

তালিকা ধরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের নির্দেশ :নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসীদের তালিকা করে সে অনুযায়ী গ্রেফতারের ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। একই সঙ্গে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ৩০০ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এসংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠানো হয়। নির্দেশনায় সুনির্দিষ্ট পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে। সব শ্রেণির ভোটার যাতে তাদের ভোটাধিকার অবাধ ও নির্ভয়ে প্রয়োগ করতে পারেন, তার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও স্থানীয় আস্থাভাজন কর্মীদের সঙ্গে সত্বর একটি এবং প্রয়োজনবোধে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে।

আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আইন ও বিধিগত দিক উল্লেখপূর্বক সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করতে হবে। কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তা অবিলম্বে তদন্তপূর্বক প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনি এলাকার সব স্তরের ভোটারদের এবং বিশেষ করে নারী ভোটারদের নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে ভোটদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ইচ্ছাকে প্রাধান্যঃ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীরা দলের প্রতীক পাবেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে তাদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। 

ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯-এর উপবিধি (১) অনুসারে তপসিল-৩-এ উল্লিখিত প্রতীক সমূহ থেকে যত দূর সম্ভব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ইচ্ছাকে বিবেচনায় রেখে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দ করতে হবে। একই প্রতীক বরাদ্দের জন্য একাধিক প্রার্থী দাবি জানালে রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাদের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রতীক পছন্দের আহ্বান জানাতে  পারেন। যদি তারা সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হন, তবে লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন।

দলের প্রার্থী কে, জানাতে হবে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যেঃ রাজনৈতিক দলগুলো কোনো আসনে একাধিক প্রার্থী দিয়ে থাকলে, সংশ্লিষ্ট সেই দলের কোন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তা প্রার্থীরা প্রত্যাহারের শেষ দিন, অর্থাৎ ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানাতে হবে।

দেশের নির্বাচনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে ইইউ—ইসিঃ নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশের নির্বাচনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচনের পরের পরিবেশও দেখবে। ইইউর বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

আওয়ামী লীগ সমাবেশ করলে ইসির অনুমতি লাগবেঃ আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই সমাবেশ করতে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। রবিবার ইইউ নির্বাচনি বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ নিয়ে আমরা এখনো চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে আমরা বিষয়টি দেখব। জনসভা করতে হলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিলে কী হবে, তা আইনে বলা আছে।

আরও সংবাদ পড়ুন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই ৩২টি আসনে; ইউএনও-ওসিদের বদলির সিদ্ধান্ত ইসির

আরও সংবাদ পড়ুন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ২৯টি দল, নির্বাচনে বিএনপিসহ ১৫ দল বাইরে

আরও সংবাদ পড়ুন।

মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর; ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top