ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লুটপাট হামলার অভিযোগ

তজুমদ্দিনে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লুটপাট হামলার অভিযোগ ও কবর থেকে লাশ উঠিয়ে নেওয়ার হুমকি

উপজেলা প্রতিনিধিঃ ভোলার তজুমদ্দিনে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দোকানপাট ভাংচুর,লুটপাট সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক মানুষকে আহত করার খবর পাওয়া গেছে।

২২জুন মঙ্গলবার রাত প্রায় ৮টার সময় উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ০৩নং ওয়ার্ড পাটোয়ারী দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

২১জুন সোমবার সদ্য সমাপ্ত হওয়া ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর ইউনিয়নের ০৩নং ওয়ার্ডের মোরগ প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী তৈয়ব মাষ্টার ও তালা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ শরীফ মিয়ার সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় দু-পক্ষের প্রায় অর্ধ শতাধিক কর্মী সমর্থক আহত হয়।

স্থানীয়রা জানায়, মোরগ প্রতীকের প্রার্থী তৈয়ব মাষ্টার নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে তার দুই ছেলে রিয়াজ ও রিপন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বিপক্ষ প্রার্থী শরীফের লোকজনকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো। এক পর্যায়ে মঙ্গবার রাতে তৈয়ব মাষ্টারের ছেলে রিয়াজ ও রিপনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তালা প্রতীকের প্রার্থী শরীফের সমর্থকদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট চালায়। এসময় তারা মহিলাদের কাপড় খুলে নিয়ে বিবস্ত্র করে ইজ্জতহানী করার চেষ্টা চালায়। শরীফের নির্বাচনী অফিস ও অফিসে টানানো থাকা প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি নিচে ফেলে চেয়ার টেবিলের সাথে ভাংচুর করা হয়। মোরগ প্রতীকে ভোট না দেওয়ার কারণে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতাকে তার বাবার কবর তৈয়ব মাষ্টারের এলাকা ঘোষেরহাওলা থেকে উঠিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রুমা বেগম জানায়, মানুষের হৈচৈ ডাক চিৎকার শুনিয়া আমরা বাসা থেকে বের হয়ে এসে দেখি মেম্বারের ছেলে রিয়াজ ও রিপনের সাথে অনেকগুলো মানুষ এসে আমাদের এলাকার বিভিন্ন মানুষের ঘরে হামলা চালাচ্ছে। মহিলাদের রক্তমাখা কাপড় চোপড় ছিঁড়ে হাতে করে নিয়ে যাচ্ছে। এসময় সাথে থাকা তৈয়ব মাষ্টারের ছেলে রিপন চিৎকার করে সবাইকে বলে যাচ্ছিলো তজুমদ্দিনের পুলিশ প্রশাসন সব আমাদের পকেটে থাকে। তোরা যারা যারা তালায় ভোট দিছোস সবগুলোকে এলাকা ছাড়া করবো। এরপর থেকে এদের ভয়ে এলাকার নিরিহ অনেক মানুষেরা তাদের স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আতংকের মধ্য দিয়ে বসবাস করছি। আমরা প্রশাসনের কাছে আমাদের নিরাপত্তা চাই।

তালা প্রতীকের প্রার্থী শরীফ মিয়া জানায়, নির্বাচনের আগে ও পরে তৈয়ব মাষ্টার ও তার ছেলেরা আমার লোকজনদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো। এক পর্যায়ে ভোটের পরদিন রাতে পাটোয়ারী দোকান বাজারে রিয়াজ ও রিপন একদল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার কর্মী সমর্থকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় বাধা দিতে আসলে আমার ছেলেকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয় ও আমার কর্মী নুরে আলম, সোহাগ ও মাকসুদ সহ অন্যদেরকে কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে আমার মা ও স্ত্রী কাছে আসতে চাইলে তাদেরকেও জখম করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে তাদেরকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন হাসপাতালে নিয়ে যান।

মোরগ প্রতীকের প্রার্থী তৈয়ব মাষ্টার জানায়, শরীফ আমার ছেলেদেরকে পথে ঘাটে বিভিন্ন সময় মানহানিকর কর্থাবার্তা বলে হুমকি দিয়ে আসছিলো। সন্ধ্যায় শরীফের লোকজন আমার লোকদের সাথে বাজে আচরণ করলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে আমি তজুমদ্দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

তজুমদ্দিন থানার ওসি তদন্ত এনায়েত হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top