শীর্ষ দূর্ণীতিবাজ রাজউকের কর্মচারীদের নাম জেনে নিন

শীর্ষ দূর্ণীতিবাজ রাজউকের কর্মচারীদের নাম জেনে নিন

অপরাধ প্রতিবেদকঃ রাজউকের জোন ৬-এ কর্মরত নান্নু নব্বই দশকের মাঝামাঝি উপ-ইমারত পরিদর্শক হিসেবে রাজউকে যোগ দেন। সে সময় বেতন পেতেন ৪ হাজার ৩০০ টাকা। পরে পদোন্নতি পেয়ে ইমারত পরিদর্শক ও প্রধান ইমারত পরিদর্শক হন। চাকরিরত অবস্থায়ই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেন। এখন বেতন পান প্রায় ৬০ হাজার টাকা।

২০১৯ সালের ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের ২৩ তলা ভবন এফআর টাওয়ারের নবমতলায় অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়। ওই মামলায় তৎকালীন ইমারত পরিদর্শক নান্নুর নাম ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ যায়।

নান্নুর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুর্নীতির একাধিক মামলার বিচার ও তদন্ত চলমান।

জাফর সাদেক, অনিয়ম-দুর্নীতি করেও কিছুই হয় না যার: দুর্নীতি, অনিয়ম, ফাইল গায়েব আর প্রতারণার ঘটনায় চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রাজউকের অফিস সহকারী জাফর সাদেক। বর্তমানে জামিনে আছেন। রাজধানীর শান্তিনগরে ৩৩ নম্বর পীর সাহেবের গলির মেহমান টাওয়ারের ছয়তলায় (ফ্ল্যাট নং ৬/এ) ১ হাজার ৬০০ স্কয়ার ফিট আয়তনের প্রায় কোটি টাকার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাস করেন জাফর। আফতাবনগরের ডি ব্লকের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ২৯ নম্বর প্লটে সাড়ে তিন কাঠা জমির ওপর আটতলা বাড়িও আছে তার। মাসে ভাড়া পান দেড় লাখ টাকা। এক্স-প্রিমিও ব্র্যান্ডের গাড়ি ব্যবহার করেন তিনি। জাফর সাদেকের স্ত্রী তাসলিমা আক্তারের নামে নয়াপল্টনের গাজী ভবন শপিং কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় একটি দোকান আছে। দোকান থেকে প্রতি মাসে ভাড়া পান ৪৫ হাজার টাকা। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানাধীন সিজিয়ারা বাজারের মকিমপুর গ্রামেও ১২ শতক জমি আছে জাফরের।

জাফরের আরেক স্ত্রীর নাম রিপা। রিপার নামে বনশ্রীতে আছে পাঁচতলা বাড়ি। এলিয়ন ব্র্যান্ডের দুটি প্রাইভেটকার ব্যবহার করেন তিনি।

পূর্বাচল সেলে কর্মরত জাফর সাদেক। সরকারি চাকরির ১৬তম গ্রেডে পিএ হিসেবে রাজউকে যোগদান করেছিলেন ২০০৬ সালে। সে সময় বেতন পেতেন প্রায় ৮ হাজার টাকা। এখন বেড়ে তার বেতন স্কেল দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার টাকা। বেতন পান ৪৫ হাজার টাকা।

শুধু জনতা ব্যাংকের এক হিসাবেই জাফরের আছে ২৭ লাখ টাকা। মোট পাঁচটি ব্যাংক হিসাব আছে তার। ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা জাফর কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করেন না। অফিসকে না জানিয়ে থাইল্যান্ড ভ্রমণ করলেও কিছুই হয়নি তার।

ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের নেতা থাকা অবস্থায় ২০০৫ সালে পল্টনে আওয়ামী লীগের মিছিলে গুলি চালিয়ে সে সময় আলোচিত হয়েছিলেন জাফর সাদেক। এখন অবশ্য রাজউকে জাফরের পরিচয় আওয়ামী লীগপন্থি হিসেবে।

চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেও অফিস করেন আবুল বাশার শরীফ: রাজউকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবুল বাশার শরীফ গত বছরের ২৫ আগস্ট চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। বিভিন্ন প্লটের ফাইল গায়েব করার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয় তাকে। জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতা বাশার শরীফের বিরুদ্ধে ঠিকাদারি, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য প্ল্যান পাস, প্লট জালিয়াতি, প্লটের ফাইল গায়েব, নকশা জালিয়াতি, ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের শারীরিক ভাবে হেনস্তাসহ সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে আছে।

২০২১ সালের ১ মার্চ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজউক শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন বাশার। কমিটির মেয়াদ চলতি বছরের মার্চে শেষ হলেও নতুন কমিটি গঠন হয়নি। মানিকনগর পুকুরপাড়ে (৬৬/২/৩ ওয়াসা রোড) ২ হাজার ৬০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে তার। ব্যবহার করেন টয়োটা নোয়া গাড়ি।

বরখাস্ত প্রসঙ্গে শরীফ বলেন, ‘ফাইল নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে ব্যস্ত আছি। কিছুদিন পর রায় হবে। ফেঁসে যেতে পারি। এজন্য জেলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে ফ্ল্যাট-গাড়ি থাকার তথ্য অস্বীকার করেন বাশার শরীফ।

আরও সংবাদ পড়ুন।

৩০ হাজার নথি গায়েব রাজউকের, অনুসন্ধানে দুদক

আরও সংবাদ পড়ুন।

হাইকোর্ট – রাজউক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চান

আরও সংবাদ পড়ুন।

রাজউক কি কোটিপতি বানানোর কারখানা! অবৈধ কোটিপতি কারা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top