বিমান বাংলাদেশের ক্ষতি সাধন ও অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Picsart_22-10-23_09-37-32-574.jpg

বিমান বাংলাদেশের ক্ষতি সাধন ও অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাগর চৌধুরীঃ দুদক বিমান বাংলাদেশের বিভিন্ন অভিযোগে তদন্ত করে আসছে। সেই তদন্তের সূত্র ধরেই আজ একটি মামলার অনুমোদন দিয়েছে।

মামলাঃ দুদক সজেকা ঢাকা মামলা নং ১ / ৬.২.২০২৩
বিষয়: এজাহার। আসামী (১) ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ (৬২), সাবেক পরিচালক ফ্লাইট অপারেশন্স, (২) মোঃ শফিকুল আলম সিদ্দিক (৬৩) , সাবেক ডেপুটি চীফ ইঞ্জিনিয়ার, (৩) মোঃ আবদুর রহমান ফারুকী (৫৫), মহা-ব্যবস্থাপক, (৪) শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ (৫৫), সাবেক মূখ্য প্রকৌশলী, (৫) দেবেশ চৌধুরী (৬৩) সাবেক মূখ্য প্রকৌশলী, (৬) গোলাম সারওয়ার (৭৩), Airworthiness Consultant, CAAB, (৭) মো: সাদেকুল ইসলাম ভূঞা (৫১) প্রকৌশলী, (৮) কামাল উদ্দিন আহমেদ (৫২), ডিজিএম , (৯) জনাব এ আর এম কায়সার জামান (৫৬) , প্রধান প্রকৌশলী, (১০) জনাব শরীফ রুহুল কুদ্দুস (৫৩) প্রিন্সিপাল ইঞ্জি.(কাস্টমার সার্ভিস) , (১১) মো: নজরুল ইসলাম শামিম(৬৫), সাবেক ক্যাপ্টেন , (১২) জনাব জিয়া আহমেদ (৪৯) উপমহাব্যবস্থাপক (এওসি, এসিপি) (১৩) কাজী মোসাদ্দেক আলী(৬৫) , সাবেক চিফ পার্সার , (১৪) মো: শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক (৫০) , ফ্লাইট পার্সার, (১৫) জনাব মো: আজাদ রহমান,(৫৭) , ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, (১৬) জনাব মো: আব্দুল কাদির(৫৭), সাবেক ব্যবস্থাপক , (১৭) জনাব মো: শাহজাহান(৬৩) , সাবেক উপপ্রধান প্রকৌশলী ,(১৮) জনাব মো: জাহিদ হোসেন(৫৭), সাবেক ইঞ্জিনিয়ার অফিসার , (১৯) জনাব মো: ফজলুল হক বসুনিয়া(৫৭) , সহকারী ব্যবস্থাপক , (২০) জনাব মো: আতাউর রহমান(৫১) , ব্যবস্থাপক (২১) জনাব মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল হক (শাহিন) (৬৫), চীফ পার্সার , (২২) নাম: শাহনাজ বেগম ঝর্ণা(৫০), ফ্লাইট পার্সার, (২৩) গাজী মাহমুদ ইকবাল(৫৯), সাবেক চিফ ইঞ্জিনিয়ার, বিমান বাংলাদেশ, এয়ার লাইনস লি: ঢাকাগণ পুর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে ও ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক প্রতারণার মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অপরকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটো এয়ারক্রাফট লীজ গ্রহণ ও পরবর্তীতে রি-ডেলিভারি পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি: এর সর্ব মোট ১১৬১ (এগারো শত একষট্টি কোটি) টাকার ক্ষতি সাধন পূর্বক আত্মসাৎ করে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।


ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ: দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার নথি নং ০০.০১.০০০০.৫০২.০১.০১৯.২২ মূলে প্রাপ্ত অভিযোগ অনুসন্ধানকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স লি: এর ২০১২ সালে প্রণীত ১০ বছর মেয়াদী বিজনেস প্ল্যান(২০১৩-২০২৩) এবং ২৬/১১/২০১২ এ গৃহীত অন্তবর্তীকালীন Fleet Requirement Plan (২০১২/১৩-২০১৯/২০ সাল) অনুযায়ী দুইটি উড়োজাহাজ বা এয়ারক্রাফট লীজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

বিমানের বোর্ড অব ডিরেক্টর এবং এমডি এর সমন্বয়ে বিমানের ১১৬ তম সভায় বি ৭৭৭-২০০ইআর উড়োজাহাজ লীজ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিমান লীজ গ্রহণের জন্য ১১/০৯/২০১৩ তারিখে দরপত্র আহবান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় । যার প্রেক্ষিতে ৪(চারটি) বিডার (১) Jesco Aviation, USA (২) Euro Atlantic, Portugal (৩) Standard Chartered, london এবং (৪) Egypt Air Holding Co. Egypt অংশগ্রহণ করে এবং ৩০/১০/২০১৩ তারিখে উক্ত দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়। উই: কমান্ডার এম.এম. আসাদুজ্জামান, পরিচালক (ইঞ্জি.) এর সভাপতিত্বে ১৪ সদস্য সমন্বয়ে গঠিত টেকনো ফিন্যান্সিয়াল সাব-কমিটি Egypt Air Holding Co. রেসপন্সিভ করে ২৩/১০/২০১৩ তারিখে প্রতিবেদন দাখিল করে । কমিটির দাখিলকৃত প্রতিবেদনে ৪ টি বিডারের মধ্যে কনফিগারেশনের তুলনামূলক আলোচনা করলে দেখা যায় Egypt Air ছাড়া বাকী ৩ টি বিডারই বিশ্বের মধ্যে উন্নতমানের উড়োজাহাজ সরবরাহকারী কোম্পানি। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে আর্থিক ক্যাটাগরীতে রেসপনসিভ হয়েছে Egypt Air ১ম সর্বনিম্ন এবং Standard Chartered ২য় সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দুটির মধ্যে Egypt Air এর ইঞ্জিন ছিলো P&W(Pratt & Whitney company) ইঞ্জিন যা, ছিলো অনেক পুরোনো এবং দুর্বল যার স্পেয়ার পার্টস পাওয়া খুব কঠিন এবং Standard Chartered এর ইঞ্জিন (Rolls Royce trent কোম্পানি) যা, Egypt Air এয়ার অপেক্ষা অনেক ভালো ছিলো । এখানে Standard Chartered যেহেতু বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠান এবং Imediate lowest bidder ছিলো তাই এখানে একটা নেগোসিয়েশনের সুযোগ ছিলো। তদুপরি বর্ণিত সময়ে Standard Chartered সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে চলমান ছিলো আর Egypt Air ৭ মাস ধরে স্টোরেজে অব্যবহৃত/মজুদ ছিলো। এতদ্সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে বিমান বাংলাদেশ Biman Bangladesh Airlines মিশরের Egypt Air Holding Co. থেকে লীজ গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

বাংলাদেশ বিমান চুক্তির পূর্বে উড়োজাহাজ দুইটির ফিজিক্যাল ইন্সপেকশনের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যার ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, পরিচালক ফ্লাইট অপারেশন্স এর নেতৃত্বে ০৮(আট) সদস্য সমন্বয়ে একটি পরিদর্শন দল গঠন করা হয় । তারপর দুটি Boeing (১) 777-200 ER(MSN-32629, Reg: SU-G8X, A/C S2-AHK & (২) MSN 32630, REG: SU-GBY, A/C S2-AHL) এয়ারক্রাফট ড্রাই লীজ নেয়ার জন্য Biman Bangladesh Airlines এর পক্ষ থেকে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ক্যাপ্টেন ইশরাতের উড়োজাহাজ দুইটির Technical অবস্থা পর্যবেক্ষণে মিশরের কায়রোতে যান। পরিদর্শন টিম পরিদর্শন শেষে ১২/১১/২০১৩তারিখে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে, পরিদর্শন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, কিছু AD ওপেন আছে অর্থাৎ Compliance Report of Airworthiness Directives (AD) অনুসারে এয়ারক্রাফট দুটোর বেশকিছু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বাকী রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী AD’s অসম্পূর্ণ থাকলে এয়ারক্রাফট তার উড্ডয়ন যোগ্যতা হারায় মর্মে প্রতীয়মান হয়। পরিদর্শন টিম অসৎ উদ্দেশ্যে AD এর কি কি কাজ বাকি আছে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি । অন্যদিকে দেখা যায় এয়ারক্রাফট দুইটির Maintenance Check Cycle & Aircraft /Maintenance Schedule ইজিপ্ট এয়ার টিমকে দেখাতে পারেনি। এছাড়াও প্রতিবেদনে ইঞ্জিনে তেল ক্ষরণ হচ্ছে মর্মে উল্লেখ করা হয়। দরপত্র অনুযায়ী এয়ারক্রাফট Engine/APU (Auxiliary power unit) কমপক্ষে ৪০০০ সাইকেল অবশিষ্ট থাকতে হবে কিন্তু লীজকৃত এয়ারক্রাফট দুইটির মধ্যে ১টি এয়ারক্রাফট MSN 32629 এর ইঞ্জিন ৩৬১৫ টি সাইকেল অবশিষ্ট ছিলো এবং MSN 32630 এয়ারক্রাফটির ইঞ্জিন ২১০০ টি সাইকেল অবশিষ্ট ছিলো যা, সম্পূর্ণ ভাবে দরপত্রের উল্লিখিত শর্তবিরোধী । ইন্সপেকশন টিম অসৎ উদ্দেশ্যে তাদের প্রতিবেদনে বেশিরভাগ জরুরী কম্পোনেন্টগুলো To be verified During Delivery time উল্লেখ করেছেন। এত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও টিম ইজিপ্ট থেকে এয়ারক্রাফট লীজের বিষয়ে unanimously(সর্বসম্মতক্রমে) একমত পোষণ করে লীজের পক্ষে মতামত দিয়েছে।

“C” চেক একটি বিমানের Airworthiness বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয় কিন্তু দেখা যায় ইজিপ্ট এয়ারের চেকগুলো মেয়াদউত্তীর্ণ ছিলো। বিমান ডেলিভারীর পূর্বে বিমানের “C’’ চেক তদারকীর জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দেবেশ চৌধুরীর নেতৃত্বে বিগত ২৮/০১/২০১৪ তারিখে ৪ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল ১০ দিনের জন্য মিশরের কায়রো গমন করে। পরবর্তীতে “C’’ চেকের সময় ফাইন্ডিংস আসায় আরো ১০ দিন অবস্থান করে। এত ফাইন্ডিংস থাকা সত্ত্বেও ১১ মার্চ, ২০১৪ তারিখে ইজ্পিট এয়ারের পক্ষে মো: হাছান এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর পক্ষে এমডি কেভিন জন স্টিল এর মধ্যে ০৫(পাঁচ) বছরের জন্য ড্রাই লীজ ভিত্তিতে চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি মোতাবেক এয়ারক্রাফট ডেলিভারি করা হয় যা মো: শফিকুল আলম সিদ্দিক এর নেতৃত্বে Acceptance টিম ২০ মার্চ ২০১৪ তারিখে ১ম এয়ারক্রাফট এবং ০৫ মে ২০১৪ তারিখে ২য় এয়ারক্রাফট দরপত্রে বর্ণিত স্পেসিফিকেশন মোতাবেক গ্রহণ করে এবং Acceptance certificate প্রদান করে। উক্ত সার্টিফিকেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এ ধরণের এয়ারক্রাফট অপারেটরে খুবই দক্ষ এবং নিজেরা সন্তোষজনকভাবে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কিন্তু সার্টিফিকেট অনুযায়ী মেরামতের কিছু বিষয় অসম্পূর্ণ ছিলো অর্থাৎ যা পরবর্তীতে করা হবে মর্মে জানালে টিম মেনে নিয়ে ফরমায়েশী সার্টিফিকেট প্রদান করেন। অর্থাৎ Acceptance টিম অসৎ উদ্দেশ্যে ত্রুটিপূর্ণ ও মেরামত অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তা বাংলাদেশ বিমান বহরের সাথে যুক্ত করার জন্য সন্তোষজনক মর্মে মতামত প্রদান করে। যার ভিত্তিতে এয়ারক্রাফট দুইটি বাংলাদেশ বিমান বহরে সংযুক্ত করা হয়।

উড়োজাহাজ দুইটি ৫ (পাঁচ) বছরের জন্য লীজ নেওয়া হলেও লীজ গ্রহণের পর মাত্র ১১ মাস পরিচালনা করার পর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারী হতে আগষ্ট মাস পর্যন্ত লীজকৃত উড়োজাহাজ দুইটির ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সে নিয়ে মেরামত করতে না পারায় (MSN 32630)S2-AHL উড়োজাহাজটি ১৮/১২/২০১৬ তারিখ থেকে গ্রাউন্ডেড হয়। উড়োজাহাজগুলো সচল রাখার জন্য ইজিপ্ট এয়ার থেকে পুনরায় আরো ৪(চারটি) ইঞ্জিন লীজ নেওয়া হয় এবং সেগুলোও নষ্ট হয়ে যায়। এয়ারক্রাফটগুলো রি-ডেলিভারির জন্য দরপত্র আহবান করা হলে মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি হিসেবে গাজী মাহমুদ ইকবাল, ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি হিসেবে ইজিপ্টএয়ার থেকে লীজকৃত উড়োজাহাজগুলোর রি ডেলিভারির জন্য ঠিকাদার নিয়োগে সময় টেন্ডার ডকুমেন্টস এর শর্তভঙ্গ করে অনৈতিকভাবে নন রেস্পন্সিভ Vietnam airlines engineering limited company (VAECO) কে রেস্পনসিভ করে। দরপত্রের শর্ত ব্যত্যয় ঘটিয়ে উক্ত নন রেসপনসিভ ঠিকাদারের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি কিনে বিমানের ৩৪,৮২,৯০,১৩৮ (চৌত্রিশ কোটি বিরাশি লক্ষ নব্বই হাজার একশত আটত্রিশ) টাকা ক্ষতিসাধন করে। যদি কমার্সিয়ালি সেটেলম্যান্ট এর মাধ্যমে উড়োজাহাজগুলো ফেরত দেওয়া যেতো তাহলে ক্ষয়-ক্ষতি এড়ানো যেতো কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্য এবং দুর্বল চুক্তির কারণে ফেরত দিতে না পারায় লীজের সময় সম্পন্ন করে এয়ার ক্রাফটগুলো ফেরত দেওয়া হয় এবং গ্রাউন্ডেড অবস্থায়ও সম্পূর্ণ ভাড়া প্রদান করতে হয়। মিশর হতে গ্রহণকৃত একটি এয়ারক্রাফট ২৩/১০/২০১৯ তারিখে এবং ২য় এয়ারক্রাফট ০৯/১২/২০১৯ তারিখে ফেরত প্রদান করে।

বাংলাদেশ বিমান নিয়মিত ফ্লাইট চালুর স্বার্থে ও ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ইজিপ্ট এয়ার থেকে উড়োজাহাজ বা এয়ারক্রাফট লীজ গ্রহণ করে। লীজ গ্রহণকৃত উড়োজাহাজ হতে বাংলাদেশ বিমান সর্বমোট ২৩২৯(দুই হাজার তিনশত উণত্রিশ কোটি ) টাকার ব্যবসা পরিচালনা করে। অন্য দিকে বর্ণিত উড়োজাহাজ দুইটি পরিচালনার নিমিত্ত ফ্লাইট অপারেশন ব্যয় হয় ১৩৩৯ ( এক হাজার তিনশত উণচল্লিশ কোটি) টাকা, যার মধ্যে শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেইনটেইন ব্যয় ১২৬৫( এক হাজার দুইশত পঁয়ষট্টি কোটি) টাকা, ফিক্সড ওভারহেড চার্জ ৪২৩ ( চারশত তেইশ কোটি ) টাকা, সেলস এন্ড সার্ভিস ব্যয় ৪৬৩ ( চারশত তিষট্টি কোটি) টাকা, নতুন করে ইঞ্জিন লীজের জন্য ব্যয় হয় ১৪৪(একশত চুয়াল্লিশ কোটি) টাকা, সর্বমোট (১৩৩৯+১২৬৫+৪২৩+৪৬৩)= ৩৪৯০ কোটি টাকা, অর্থাৎ বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স লি: ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হওয়ার পরিবর্তে সর্বমোট ( ৩৪৯০¬¬-২৩২৯)= ১১৬১(এক হাজার একশত একষট্টি) কোটি টাকা ক্ষতি সাধনসহ আত্মসাৎ করা হয়েছে ।

এমতাবস্থায়, উড়োজাহাজ দুইটি সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য গঠিত টিম ও Technical Acceptance টিমসহ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেইনটেইন কাজে সম্পৃক্ত (১) ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ(৬২), পরিচালক ফ্লাইট অপারেশন্স (সাবেক), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: বাড়ি নম্বর: ৮১/এ, রোড: ০৬ ডিওএইচএস, বনানী, ডাকঘর: ঢাকা, ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা-১২১৬, স্থায়ী ঠিকানা: ৬১, লোয়ার খান জাহানআলী রোড, থানা+জেলা: খুলনা,

(২) মোঃ শফিকুল আলম সিদ্দিক (৬৩), ডেপুটি চীফ ইঞ্জিনিয়ার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা+স্থায়ী ঠিকানা : বাড়ি নং-৫৭, রোড নং-১২, সেক্টর নং-১৩, উত্তরা, ঢাকা।

(৩) মোঃ আবদুর রহমান ফারুকী(৫৫), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, মহা-ব্যবস্থাপক(মুদ্রণ ও প্রকাশনা), বর্তমান ঠিকানা+স্থায়ী ঠিকানা : ৪৫, লেক সার্কাস, কলাবাগান, ঢাকা-১২০৫,

(৪)শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ (৫৫), সাবেক মূখ্য প্রকৌশলী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: বাড়ী নং-০২, রোড নং-০১, সেক্টর-০৭, উত্তরা, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: সাতরাপাড়া, পোকারিহাতি, থানা: চাটখিল, জেলা: নোয়াখালী,

(৫) দেবেশ চৌধুরী (৬৩), সাবেক মূখ্য প্রকৌশলী(এমসিসি এন্ড এলএম), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: ৩৫/৩/সি, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া (আবুল হোটেলের পশ্চিম পাশে), মালিবাগ, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা-পুখুরিয়া, পোঃ, থানা ও জেলা-নেত্রকোণা,

(৬) গোলাম সারওয়ার (৭৩), Airworthiness Consultant, CAAB, বর্তমান ঠিকানা : বাড়ী নম্বর-৩২/এ, ফ্ল্যাট নং-৪১৩, রোড-০১, সেক্টর-০৬, উত্তরা, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা- গ্রাম-মহিষ বাথান, রাজশাহী কোর্ট, জেলা-রাজশাহী

(৭) মো: সাদেকুল ইসলাম ভূঞা (৫১), প্রকৌশলী কর্মকর্তা, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বর্তমান ঠিকানা: এইচ-৭৬১, আর-২৩, বিএল-জি, বসুন্ধরা ৫ম তলা, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা-গ্রাম- হাপানীয়া, পোঃ লক্ষীধরপাড়া, থানা-রামগঞ্জ, জেলা-লক্ষীপুর,

(৮) কামাল উদ্দিন আহমেদ (৫২), ডিজিএম (জিএসই,ওপিএস),বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: ৫ ই/ প্রান্তিক টাওয়ার,স্বর্ণালি গার্ডেন, মিরপুর-১৩, ঢাকা-১২২৯, স্থায়ী ঠিকানা-মধুপুর, পোঃ ইমানপুর, থানা-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা, জেলা-কুষ্টিয়া,

(৯) জনাব এ আর এম কায়সার জামান (৫৬) , প্রধান প্রকৌশলী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: হাউজ নং ১২, রোড-১৬, সেক্টর- ১৪, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০, স্থায়ী ঠিকানা: বাড়ী নং ৪৯, সেরইল মটপুকুর, পো:ঘোড়ামারা, থানা: বোয়ালিয়া, জেলা: রাজশাহী,

(১০) জনাব শরীফ রুহুল কুদ্দুস (৫৩), প্রিন্সিপাল ইঞ্জি.(কাস্টমার সার্ভিস), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: ৮১/৭, নয়া পল্টন মসজিদ গলি, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা: বাড়ি নং সি-১১, রোড নং-১৭১, খুলনা জিপিও, থানা: খালিশপুর, জেলা: খুলনা,

(১১) মো: নজরুল ইসলাম শামিম(৬৫) সাবেক ক্যাপ্টেন ড্যাস-৮-৪০০, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা:ফ্ল্যাট নং ৩এ, বাড়ি ৪৭৪, রোড ৬, ডিওএইচএস, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম+ পো: জারিয়া ঝঞ্জাইল, থানা: পূর্বধলা, জেলা: নেত্রকোনা,

(১২) জনাব জিয়া আহমেদ (৪৯),উপমহাব্যবস্থাপক (এওসি, এসিপি), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, ফ্ল্যাট নং ৩এ, বাড়ি নং -৯, রোড-১৭, সেক্টর-১৩, উত্তরা, ঢাকা ১২৩০, স্থায়ী ঠিকানা: আমিনা মঞ্জিল নতুন বাজার, পো:+থানা: ইশ্বরদী, জেলা: পাবনা,

(১৩) কাজী মোসাদ্দেক আলী(৬৫), সাবেক চিফ পার্সার (কাস্টমার সার্ভিস) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা : বাড়ি নং ১১৬, রোড নং ১০, ব্লক-এফ, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ভাটারা, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: চৌগাছি, পো: কুঠিচৌগাছি, থানা: শ্রীপুর, জেলা: মাগুরা,

(১৪) মো: শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক (৫০), ফ্লাইট পার্সার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা+স্থায়ী ঠিকানা : ফ্ল্যাট ডি-৩, হাউজ: ১৩/এ (রূপায়ন ভিউ), রোড ২/এ, সেক্টর-৫, উত্তরা,

(১৫) জনাব মো: আজাদ রহমান(৫৭) (পি-৫৩০৯০), ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কর্পোরেট প্ল্যানিং, বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স লিমিটেড, বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা ৩১৬/এ খিলগাঁও তিল্পাপাড়া, রোড-১১, ঢাকা,

(১৬) জনাব মো: আব্দুল কাদির(৫৭) , সাবেক ব্যবস্থাপক, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: হাররদিয়া, পো+থানা- মনোহরদী, জেলা- নরসিংদী,

(১৭) জনাব মো: শাহজাহান(৬৩) ,সাবেক উপপ্রধান প্রকৌশলী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: ২৬/১ লেক সার্কাস, ফ্ল্যাট-৫এ, কলাবাগান, ধানমন্ডি, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম+পো: মুসাপুর, থানা: কোম্পানীগঞ্জ,জেলা: নোয়াখালী,

(১৮) জনাব মো: জাহিদ হোসেন(৫৭) , সাবেক ইঞ্জিনিয়ার অফিসার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা +স্থায়ী ঠিকানা: এপার্টমেন্ট-এফ-১, ট্রপিক্যাল ডলি ও সিনা হোমস্, জিএ-১২৫/এ, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২,

(১৯) জনাব মো: ফজলুল হক বসুনিয়া (৫৭) পি- ৩৫৯১৫, পেশা: সহকারী ব্যবস্থাপক পরিকল্পনা, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: ৬/সি, মায়াকানন কটেজ, কোর্টবাড়ী, ফাইদাবাদ, দক্ষিণ খান, ঢাকা-১২৩০, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম- নেফার দরগা, ডাকধ কাঠালবাড়ী, থানা ও জেলা: কুড়িগ্রাম,

(২০) জনাব মো: আতাউর রহমান (৫১)ব্যবস্থাপক (এসিপি), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম- জয়লা জুয়ান, পোস্ট- কল্লানিস, থানা- শেরপুর, জেলা- বগুড়া, বর্তমান ঠিকানা: ৩৪ মল্লিকা হাউজিং, মিল্কভিটা রোড, মিরপুর-৭, থানা: পল্লবী,

(২১) জনাব মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল হক(শাহিন) (৬৫), সাবেক চীফ পার্সার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি:, বর্তমান ঠিকানা: ৬৮ হাজী আফসার উদ্দিন রোড, রায়েরবাজার, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা: বাড়ী-১১৬, রোড-১০, ব্লক-এফ, বসুন্ধরা, ঢাকা- ১২২৯,

(২২) জনাব শাহনাজ বেগম ঝর্ণা(৫০), ফ্লাইট পার্সার, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম- খাজুরিয়া (কান্দাপাড়া), পোষ্ট- ভাকুর্তা, থানা- সাভার, জেলা- ঢাকা, বর্তমান ঠিকানা: হাউজ ১১ (এ৩), রোড-২৬, সেক্টর-০৭, উত্তরা, ঢাকা,

(২৩) জনাব গাজী মাহমুদ ইকবাল(৫৯), চিফ ইঞ্জিনিয়ার (ইঞ্জিনিয়ারং সার্ভিসেস) বর্তমান ঠিকানা: বাসা নম্বর-২২৪, রোড নং-৮, ব্লক-সি , বসুন্ধরা, আবাসিক এলাকা, ঢাকা। স্থায়ী ঠিকানা: পিতা- গাজী অহিউদ্দিন, গ্রাম- বাসাভোগ, ডাকঘর+ থানা- শ্রীনগর, জেলা- মুন্সিগঞ্জ।

আসামীগণ পরস্পর যোগসাজশে ও ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক প্রতারণার মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অপরকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটো এয়ার ক্রাফট লীজ গ্রহণ ও পরবর্তীতে রি-ডেলিভারি পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি: এর সর্ব মোট ১১৬১ (এগারো শত একষট্টি কোটি) টাকার ক্ষতি সাধন পূর্বক আত্মসাৎ করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫(২) ধারায় একটি নিয়মিত মামলা রুজুর অনুরোধ করা হলো।

দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর স্মারক নং ০০.০১.০০০০.৫০২.০১.০১৯.২২-৪১২৫ তারিখ: ০২/০২/২০২৩খ্রি. মূলে মামলা দায়েরের অনুমোদন প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য যে, অভিযোগের অনুসন্ধানপূর্বক প্রাথমিক সত্যতা প্রাপ্তির পর মামলা দায়েরে কিছুটা বিলম্ব হয়।
মামলার তদন্তকালে অভিযোগের সাথে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আইন আমলে আনা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন মামলাটি তদন্তের ব্যবস্থা করবে।

ঘটনাস্থল : বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স লি:, কুর্মিটোলা, ঢাকা।

ঘটনার তারিখ: ২৬/১১/২০১২ খ্রি. থেকে ০৯/১২/২০১৯ খ্রি. পর্যন্ত।

আরও সংবাদ পড়ুন।

বিমানের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস; ৫ জনকে আটক

আরও সংবাদ পড়ুন।

১১০০ কোটি টাকা অনিয়ম – বিমানের পরিচালকসহ ৮ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top