ইউএনও; এসি ল্যান্ড সহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

Ban_Govt4.jpg

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম, আখাউড়ার সাবেক ইউএনও, এসি ল্যান্ড সহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

অপরাধ প্রতিবেদকঃ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও গাফিলতির অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার ও এসি ল্যান্ড সাইফুল ইসলামসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপের আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিসহ ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

জেলা প্রশাসকের দেওয়া তথ্যমতে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের অনিয়মের অভিযোগে সাবেক ইউএনও রুমানা আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ও বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস কুমার চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি চট্টগ্রামে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। এর আগে এ অভিযোগে ইউএনও ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) রাঙামাটি ও বান্দরবানে বদলি করা হয়।

গত ২২ মে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) প্রকাশ কান্তি চৌধুরী স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে রোমানা আক্তারকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় এবং এসি ল্যান্ড সাইফুল ইসলামকে বান্দরবানের থানচি উপজেলায় বদলি করা হয়।

গত ২২ মে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) প্রকাশ কান্তি চৌধুরী স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে রোমানা আক্তারকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় এবং এসি ল্যান্ড সাইফুল ইসলামকে বান্দরবানের থানচি উপজেলায় বদলি করা হয়।

জেলা প্রশাসক মো. শাহ্গীর আলম বলেন, বর্তমান সরকার অনেক বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর একটি আবেগের জায়গা। তাই প্রধানমন্ত্রীর আবেগের আশ্রয়ণ প্রকল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম ও গাফিলতি সহ্য করা হবে না।

জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল সকাল নয়টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্প সরেজমিন পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহ্গীর আলম। এ সময় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম নিয়ে গঠিত জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সে সময় তাঁরা গ্রেড বিমে ১২ মিলিমিটার ব্যাসের চারটি রডের স্থলে কোথাও কোথাও ১০ মিলিমিটারের তিনটি রড এবং লিংটারে ১০ মিলিমিটার ব্যাসের চারটি রডের স্থলে ৮ মিলিমিটারের তিনটি করে রড দেওয়ার বিষয়টি দেখতে পান।

তাঁরা আরও দেখতে পান, অনেক ঘরের লিংটারে কোনো রডই দেওয়া হয়নি। প্রতিটি ঘরের গ্রেড বিম ও লিংটারে ৬ ইঞ্চি পরপর রডের রিং থাকার নিয়ম রয়েছে, যা মানা হয়নি। এসব অনিয়ম পেয়ে ওই প্রকল্পের ৮৮টি ঘরের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাতটি উপজেলার ৮৩৪টি ঘর উদ্বোধন করবেন। সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব ঘর উদ্বোধন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) কীর্তিমান চাকমা, প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনজুরুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে আখাউড়ার সাবেক ও রাঙামাটির বাঘাইছড়ির বর্তমান ইউএনও রুমানা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিভাগীয় মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যার আপনাদের যেভাবে বলেছেন, প্রতিবেদনে সেভাবে তিনি উল্লেখ করেছেন।’

ওই অভিযোগের বিষয়ে আখাউড়ার সাবেক অ্যাসি ল্যান্ড ও বান্দরবনের থানচি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমেকে বলেন, ‘বিভাগীয় মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি কোনো কাগজ হাতে পাইনি।’ তিনি এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

আরও সংবাদ পড়ুন

টেকনাফ ইউএনওর বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ; বিভাগীয় ব্যবস্থার আশ্বাস ডিসির

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top