ভোলার দৌলতখানে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও দূর্নীতি
অপরাধ প্রতিবেদকঃ ভোলার দৌলতখানে মজিববর্ষ উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও দূর্নীতি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নে বর্তমানে ২১৪ টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। যা গতকাল বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে উদ্বোধনের পর গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গতবুধবার সরেজমিনে গেয়ে দেখা গেছে, এসব ঘর নির্মাণে নিম্ম—মানের ইট ও কাঠ ব্যবহার করা হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এসময় নির্মাণ শ্রমিকরা বলেন, প্রথমে ভালো ইট আসলেও পরবর্তীতে দুই নাম্বার ইট আসে। এসময় নির্মাণ কাজের শ্রমিকরা হাতে টিপ দিয়ে ইট ভেঙে দেখান।
চরপাতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের রহিমা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। জীবিকার তাগিদে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চলে। পরিবারের চার সদস্যের মধ্যে সবাই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এক মেয়ে সালমার জন্য মুজিববর্ষের একটি ঘর অবেদন করি, কিন্তু অর্থের কাছে তাও হেরে যায়।
তিনি আরও বলেন, যার টাকা আছে সে ঘর পেয়েছে। আমরা টাকা দিতে পারেনি, তাই ঘর পাইনি।
একই ওয়ার্ডের সেরাজল হকের ছেলে মোসলেউদ্দিন জানান, নিরিহ মানুষরা ঘর পাইনি। অথচ যাদের ঘর আছে,তারা ঘর পেয়েছে। যারা ১০/৩০ হাজার টাকা দিয়েছে তারাই ঘর পেয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েকটি চক্র মুজিববর্ষের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ১০/১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চরখলিফা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সৈয়দ ইসলাম জানান, স্থানীয় ফারুক নামের একজনকে ১২ হাজার টাকা দিয়েছি। সে ঘরের খরচ বাবদ নিয়েছে। একই অভিযোগ করেছেন অনেকে।
জমি বিক্রেতা মাহবুব মুঠো ফোনে জানান, ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা জমির মূল রয়েছে। কিন্তু আমাদের ৯০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা দিয়েছে। বিষয়টি আমি প্রশাসনিক উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। এর কোন সুরাহ করেনি। এব্যাপারে আমি আইনের আশ্রয় নিবো।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এইচ এম আনসার বলেন, নিম্মমানের ইটির বিষয়ে আমিও স্যার কে কয়েকবার বলেছি। এব্যাপারে স্যারের সাথে কথা বলতে বলেন তিনি।
এব্যাপারে দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার মুঠো ফোনে বলেন, তুমি কোন বিষয়ে জানতে চাইলে আমার সামনে আসো।
দৌলতখান উপজেলার সচেতন মহল বলেন, দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার এই ভাষায় কথা বলতে পারেন না। তিনি রাষ্ট্রের কর্মচারী। কর্মচারী হয়ে রাষ্ট্রের নাগরিকের সাথে অশোভন আচরন করতে পারেন না। তাছাড়া রাষ্ট্রের টাকার হিসাব যে কোন নাগরিক চাইতেই পারে। কিন্তু সেই হিসাব তিনি দিতে বাধ্য।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো: তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
আরও খবর পড়ুন