নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী ঢাকায়

নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী ঢাকায়

বিশেষ প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজনে যোগ দিতে ঢাকা পৌঁছেছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী।

আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।

নেপালের কোনো প্রেসিডেন্টের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরে বিদ্যা দেবীর সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিব ছাড়াও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রয়েছেন।

বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাকে স্বাগত জানানো হয় ২১ বার তোপধ্বনি দিয়ে। নেপালের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি অভ্যর্থনা মঞ্চে পৌঁছালে তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি দল এ সময় গার্ড অব অনার দেয়।

গার্ড পরিদর্শন শেষে নেপালের প্রেসিডেন্টকে লাইন অব প্রেজেন্টেশনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা।

এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, তিনবাহিনী প্রধান, আইজিপি এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

নেপালের প্রেসিডেন্টের সফর উপলক্ষে বিমানবন্দর এলাকা সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। টার্মিনালের উপরে এবং সামনে বাংলাদেশ ও নেপালের বিপুল সংখ্যক পতাকা দিয়ে সাজানো হয়।

ভিভিআইপি টার্মিনালের দুই পাশে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের দুটি বড় ছবি স্থাপন করা হয়েছে এবং টার্মিনালের উপরে বড় করে লেখা হয়েছে ‘স্বাগতম হে সম্মাননীয় অতিথি’।

বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী বিমানবন্দর থেকেই সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে রওনা হন মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

দুই দিনের এই সফরের প্রথম দিন বিকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথিত হিসেবে বক্তব্য দেবেন নেপালের প্রেসিডেন্ট। ওই অনুষ্ঠানের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও থাকবেন।

তার আগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নেপালের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সূচি রয়েছে।

বিকালে প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের কর্মসূচি রয়েছে বিদ্যা দেবি ভাণ্ডারীর। বৈঠকের পর তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।

সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যাবেন নেপালের রাষ্ট্রপতি। সেখানে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি; জাদুঘর পরিদর্শনের কর্মসূচিও রয়েছে তার।

দুপুরের পর ঢাকাস্থ নেপাল দূতাবাসের অনুষ্ঠানে যোগ দেনে বিদ্যা ভাণ্ডারী। বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে তার।

বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী নেপালের দ্বিতীয় এবং প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। রাজতন্ত্র থেকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় রূপান্তরের পর দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন রাম বরণ যাদব।

২০১৫ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির (ইউএমএল) ভাইস-চেয়ারপার্সন এবং দেশটির প্রতিরক্ষার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার আমন্ত্রণে ২০১৯ সালে নেপাল সফর করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে এরমই মধ্যে বাংলাদেশের এই উদযাপনে যোগ দিয়েছেন।

আগামী বুধবার ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং শুক্রবার স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা আসার কথা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top