২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা পেপারবুকের অপেক্ষায় রাষ্ট্রপক্ষ৷
আদালত প্রতিবেদকঃ দেশের ইতিহাসে কালো অধ্যায় একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দুই মামলায় ৪৪ আসামির জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য হাইকোর্টে অপেক্ষমাণ আছে। এরই মাঝে প্রায় সাত মাস পার হলেও নিয়ম অনুসারে পেপারবুক প্রস্তুত না হওয়ায় এ মামলার শুনানি শুরু করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীগণ।
সেই মামলার পেপারবুক প্রস্তুতের জন্য সংশ্লিষ্ট শাখার একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার নেতৃত্বে দু’জন মুদ্রাক্ষরিক পেপারবুক টাইপের কাজ করছে।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. সাইফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন wnews360.com গণমাধ্যমে।
সেই সময়ের ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আইভি রহমান সহ ২৪ জন নিহত হন; আহত হন কয়েকশ’ নেতাকর্মী। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে শ্রবণশক্তির ব্যাপক ক্ষতি হয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
ওই ঘটনায় হত্যা, হত্যা চেষ্টা, ষড়যন্ত্র ও এ ঘটনায় সহায়তা করা সহ বিভিন্ন অভিযোগে একটি এবং বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনে আরও একটি মামলা করা হয়।
দেশের বিচার ব্যাবস্থার দীর্ঘ নাটকীয়তার পর ওই দুই মামলার ওপর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর রায় দেন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক, শাহেদ নূরউদ্দিন।
রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, লুৎফুজ্জামান বাবর সহ ১৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তারেক রহমান সহ মোট ১৯ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া রায়ে তিন সাবেক আইজিপিসহ ১১ সরকারি কর্মকর্তার বিভিন্ন মেয়াদের লঘুদণ্ড দেয় এই ট্রাইব্যুনাল।
রায় ঘোষণার পর ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর এ মামলায় আসামিদের জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্স সংবলিত প্রায় ৩৭ হাজার তিনশ’ ৮৫ পৃষ্ঠার নথি অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে।
১৩ জানুয়ারি এ মামলা শুনানির জন্য গ্রহণ করে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
প্রায় আট মাস সময় অতিবাহিত হলেও মামলার পেপারবুক এখনও প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, পেপারবুক তৈরিতে কোনও নিয়ম নেই যে, আমরা তাগাদা দিতে পারি। তবে পেপারবুক তৈরি হলে আদালতের কাছে আমরা দ্রুত শুনানি শুরুর জন্য আবেদন করতে পারব।
এ মামলায় তারেক রহমানসহ কম সাজা পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের সাজা কম বা বেশি (যাবজ্জীবন) তাদের বিষয়ে নির্দেশনা না আসায় আমাদের (অ্যাটর্নি জেনারেল) অফিস তাদের বিরুদ্ধে কোনও আপিল করেনি।
এছাড়াও তারেক রহমানকে বিচারিক আদালত কোন যুক্তিতে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে, সেটা পেপারবুক না দেখে বলা সম্ভব না।