বুদ্ধিজীবীতে ২৫ বছর কবর সংরক্ষণে খরচ ৩৩ লাখ
বিশেষ প্রতিবেদকঃ ২০০৩ সালের শুরুতে জনাব আহমেদ (ছদ্মনাম) তার বাবার কবর দিয়েছিলেন মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। তখন কবরটি সংরক্ষণের জন্য তিনি ২৫ হাজার তিন টাকা ত্রিশ পয়সা ফি প্রদান করেন। বর্তমানে এই কবরস্থানে স্থায়ীভাবে কবর সংরক্ষণের উপায় নেই। তবে ২৫ বছরের জন্য লিজ নেওয়ার সুযোগ আছে, এজন্য গুণতে হবে ৩৩ লাখ টাকা।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় কবরস্থান রায়েরবাজারে। এখানে বর্তমানে সংরক্ষিত কবর বা সীমিত সময়ের জন্য কবর লিজেরও সুযোগ নেই। সরকারি ফি ৫০০ টাকা প্রদান করে যে কেউ অস্থায়ী কবর নিতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কবরস্থানটি আয়তনে বিশাল হওয়ায় অস্থায়ী কবরও অনায়াসে অন্তত ১০ বছর টিকে থাকবে।
রাজধানীর আরেকটি বড় কবরস্থান আজিমপুরে। এখানে ১০ বছর, ১৫ বছর, ২০ বছর ও ২৫ বছর মেয়াদে কবর লিজের সুযোগ আছে। এর জন্য খরচ হবে যথাক্রমে ৫ লাখ, ১০ লাখ, ১৫ লাখ ও ২০ লাখ টাকা। এখানে অস্থায়ী কবরের সরকারি রেজিস্ট্রেশন ফি এক হাজার টাকা। তবে নীতিমালা সাপেক্ষে আগের সংরক্ষিত কবরে পরিবারের মানুষকে পুনঃকবর দেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে ফি দাঁড়াবে ৫১ হাজার টাকায়। জুরাইন ও খিলগাঁও কবরস্থানেও একই পরিমাণ খরচ লাগবে।
মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানেও পুনঃকবরের সুযোগ আছে। এখানে খরচ হবে ২০ হাজার ৫০০ টাকা। কবর লিজ নিতে চাইলে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর আবেদন করতে হবে। এ নিয়ম আজিমপুর, জুরাইন ও খিলগাঁও কবরস্থানের জন্যও প্রযোজ্য।
রায়েরবাজার কবরস্থানের প্রধান গোরখোদক লিয়াকত আলী জানান, স্থায়ী কবর দেওয়ার উপায় এখন আর নেই। লিজও নেওয়া যায় না। ৫০০ টাকা দিয়ে অস্থায়ী কবর দেওয়া যায়। তবে কবরস্থানটি অনেক বড় হওয়ায় অন্তত ১০ থেকে ১৫ বছর টিকে থাকবে অস্থায়ী কবর।
আজিমপুর কবরস্থানের মোহরার মাওলানা হাফিজুর রহমান জানান, চার ক্যাটাগরিতে লিজ নেওয়া যাবে। তবে আগে কারও সংরক্ষিত কবর থাকলে সেখানে পরিবারের মানুষকে কবর দেওয়া যাবে। নীতিমালা অনুযায়ী যার নামে কবর তার ছেলে-মেয়ে, আপন ভাই-বোন, মা-বাবা ও স্বামী বা স্ত্রীকে কবর দেওয়া যাবে।
বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের ঠিকাদার আবুল খায়ের জানান, পুনঃকবরের ফি ২০ হাজার ৫০০ টাকা। অস্থায়ী কবরের রেজিস্ট্রেশন ফি ৫০০। তবে এর বাইরে বাঁশ, চাটাই, গোরখোদকদের খরচ আছে। সেগুলো বাবদ সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা লাগে। আর লিজ নিলে ২৫ বছরের জন্য খরচ ৩৩ লাখ টাকা।
কবরস্থানের ২৫ বছরের জন্য খরচ ৩৩ লাখ টাকা