পোশাকের ভেতর অবিকল মানুষ – শাহানা সিরাজী

PicsArt_10-03-01.12.07.jpg

পোশাকের ভেতর অবিকল মানুষ – শাহানা সিরাজী

পোশাকের অন্তরালে কাঁদে একজন অনুভূতিপ্রবণ মানুষ আর দশটি সাধারণ মানুষের মতো পোশাকী মানুষটির মনেও জাগে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব,ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বিরুদ্ধে ঘৃণা। যে ঘৃণা রূপ নেয় সিপাহী বিপ্লবে। ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ কিংবা ব্রিটিশদের তাবেদারেরা যাকে বলে সিপাহী বিদ্রোহ! প্রতিটি আন্দোলনে পোশাকী মানুষই এগিয়ে আসে। দেশের হালচাল বিপদ আপদে পোশাকী মানুষেরাই এগিয়ে আসে। লবণের দাম বেড়েছে বলে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মানুষকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অস্থির করে তুলেছে তখন কিন্তু এ পোশাকী মানুষেরাই জনতার পাশে দাঁড়িয়েছে সংখ্যায় যতো নগন্যই হোক। অথচ কতো অনায়াসে আমরা বলি, বস, ট্রলারে একজন মহিলা আর একজন পুলিশ!

গল্পটি যখন এ ভাবেই প্রবাহিত হচ্ছে তখন আমার ক্যামেরায় বন্দী হলো একজন পুলিশ। চারদিকের মানুষ রাংরাং পাখির মতো চেঁচাচ্ছে আর পালাচ্ছে। পুরো গ্রামজুড়ে রটে গেলো বানিয়ালে পুলিশ এসেছে!

বারেক,সাদেক, খোকা তোরা পালা। পুলিশ তখন ব্যস্ত সেই কবিকে নিয়ে। যতœ করে পদ্মার বুক ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা ছোটপদ্মা পাড়ি দিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। পোশাকী হাতটির কোমলতায় কলমিফুলও হার মেনেছে। কবি বাম পায়ের ব্যথা লুকিয়ে সহাস্যে হাতটি ধরে। পোশাকী মানুষটি কিছুটা সলজ্জ কিছুটা বিব্রত কিছুটা পুলকিত কণ্ঠে বলে,” ধরতে পারবো তো?”
কবি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে, “ধরতে পারবে কিন্তু ধরে রাখতে পারবে কি না সে বিষয়ে সন্দেহ আছে।”

পোশাকী লোকটির অস্ত্রের মুখ থেকে বুলেট সরে গেলো। ট্রিগারে তখন কম্পিত আঙুল। ভুল হয়ে যেতে পারে!
কবি চিৎকার করে আকাশের সাথে কথা বলে,ও আকাশ,এতো বিশাল বুকে আমার জায়গা কোথায়?
আকাশ ততোধিক জোরে ফেরৎ দেয়, জায়গা নিজে করে নাও! কবি চুপ। পোশাকী সজলও চুপ। কবির আঁচল উড়ে সজল স্থির থেকে আঁচল এগিয়ে দেয়। কবি এলোমেলো, কবির চোখ কেবল আকাশবুকে সাগর। একটি সহাস্য মুখ,একটি উজ্জ্বল তারা একটি অভিমানী মুখ,কবির বুকের ভেতর তোলপাড় করে। মোচড় মারে। কবি এলোমেলো। একটি উদাস হাওয়া চুপি চুপি ছুঁয়ে যায়। সজল পাশাপাশি হাঁটে মৃদৃ কন্ঠে বলে, ভাবিনি এমন সুন্দর সময় আসবে, সত্যি তুমি অসাধারণ!

কবি ফিরে তাকায়, কিছু বললো! হাসি বিস্তৃত হয়। সজল মোবাইল ক্যামেরায় ক্লিক ক্লিক ছবি তুলতেই থাকে। কবির কানে সজলের কোন কথাই প্রবেশ করে না। বহু দূর থেকে একটি মোলায়েম শব্দ ঢেউ খেলে যায়, সোহানা, সোহানা !

সোহানা চমকে ওঠে, ওহ্! তুমি! কখন এলে? একদম ভুলে গেলে! সেদিনের চটপটির টেবিল,ওদিনের ডিঙিটেবিল! জোছনা রাতের চাঁদের কামড়! সে দিন ঝাল খেতে গিয়ে চোখ ভাসিয়েছিলাম। তুমি হাসতে হাসতে বললে, লেগেছে? ধুম এক ঘুষি মেরে বলেছিলাম, ঠিক তোমার মতো!
শ্রাগ করে বললে, আমি ঝাল!
-তুমি ঝাল-টক-মিষ্টি? তোমাতেই আমার যতো সৃষ্টি।’
হাসতে হাসতে সোহানা গড়িয়ে পড়ে। সজল বিস্মিত হয়,একী মানবী নাকি দেবী! এমন উদাস-উ™£ান্ত হাসি, এমন কুয়াশা মাখা চাহনী, এমন চপল নির্ঝরিণীর উচ্ছ¡াস যার ভেতর গড়িয়ে পড়ে সে না জানি কেমন যাপিত কোলাহলে! ‘এদিকে দেখো, দাঁড়াও, পেছনের সবুজ তোমাকে ডাকছে।’ সোহানা সম্বিত ফিরে পায়। ‘ও হ্যাঁ।’ গাঢ় সবুজের কালাইক্ষেত, বুনোকলমির অশান্ত ঢেউ সোহানাকে আরো ছুঁয়ে যায়। সে দৌড়তে দৌড়তে এগিয়ে আসে, সজলের হাত ক্লিক ক্লিক চঞ্চল হয়ে ওঠে। নানান আয়োজনে সোহানার কতো ছবি সজলের হাতে বন্দি হয় নাকি সজল নিজেই বন্দি হয়! পোশাক থেকে উপচে পড়া কলাই সৌরভ যেন বসন্তের নবীন ডাক! সজল সোহানার পাশে এসে দাঁড়ায়, সেল্ফি হবে? যেখানে আকাশ মাটির সাথে লুকোচুরি খেলে সেখানে না হয় কিছু সময় অধীর হবে! আলগোছে সোহানাকে জড়িয়ে দাঁড়ায়। বামহাতে হালকা জড়িয়ে কোমর ডান হাতে মোবাইল। সোহানার চোখ সুদূর দিগন্তে যেখানে একান্তই তুমি। দরজায় বেজে যাচ্ছে কলিং বেল।
-কে? তুমি? অবশেষে ফিরলে? কতোদিন দেখি না ও মুখের হাসি। কতোদিন চুলায় গরমজল হয় না! লম্বাচুলের বিণুনী দুলিয়ে চোখের জলে ভাসতে ভাসতে কতো কী অনুযোগ তোলে।! জানো কবিতা প্রায় লেখা ছেড়েই দিয়েছি। আমার হাসতে ইচ্ছা করে না। আলমিরা কবে খুলেছি ঠিক মনে নেই। আচ্ছা এতো দিন কোথায় ছিলে? কে তোমাকে শ্যাম্পু করে দিয়েছে? কে রান্না করেছে পছন্দের খাবার? পান বানিয়ে কে বলেছে খাবে নাকি?

সজল আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে কানে কানে বলে, সোহানা, পদ্মার বুকে জেগে থাকা এ চরই আমার বুক। এখানেই পা রাখো। বাতাসে সজলের মুখ জড়িয়ে যায় সোহানার চুলে। পরম আবেশে হাত বুলিয়ে যায় এলোভেরায় ধোয়া নরম চুলে। আহ্! আর একটু থাকুক খুব কাছে। গাঙচিলের উড়োউড়িতে সোহানার ঘোর কাটে। সাপের মতো পেচানে সজলকে দেখে কিছুটা বিস্ময় কিছুটা অনুরাগ তাকে ছুঁয়ে যায়! মুখে হাসি চোখে আবীরালো নিয়ে চেয়ে থাকে সজলের পোশাকের দিকে। পোশাক পারে না হৃদয়ের দাম দিতে! তারপরই হি হি হেসে ওঠে…

চায়ের তৃষ্ণা সোহানার এক বদ অভ্যাস! ভর দুপুরে পদ্মার এ চরে চা কোথায় মিলে! সোহানা আঙুল উঁচিয়ে বলে, ওখানে থাকতে পারে। চলো যাই। সজল এতোক্ষণে যেন খেই হারায়। এ চঞ্চল হরিণী আজ কোন ঘাটে নিয়ে যায়! এ দিক ওদিক তাকায়। দূরে দু একটি বাড়ি স্থির দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িগুলোকে ঘিরে কলাপাতার লুকোচুরি। ধঞ্চে গাছের নিবু নিবু প্রাণ বলে দিচ্ছে একদিন তাদেরও ছিলো ভরা যৌবন। পদ্মার জলের সাথে তাদের নিবিড় সম্পর্ক। হেমন্তের যৌবন মাঠে মাঠে ফসলের রঙিন হাসি হয়ে দোল লাগায় সোহানার মনে। কৃষাণীর উদোমবাহুতে শিশির ভেজা খড়ের ঘ্রাণ মাতাল করে আগামীর ¯^প্নকে। সোহানা আরো বেশি আনমনা হয়ে পড়ে। তোমাকে অনেক দিন দেখি না। আচ্ছা, তুমি কী শুনতে পাও না রোদের আহŸান? ভেজা মাঠের মাটি তাকে আরো জড়িয়ে রাখে। সজল কপাল থেকে চুল সরিয়ে দেয়, চুলগুলো তিলপড়া মুখটি ঢেকে রাখে। হাতের আঙুল ছুঁয়ে যায় কপাল- নাক- চিবুক। মুখে বলে ওই যে চায়ের দোকান। সোহানা টঙ দোকানটি দেখেই লাফিয়ে ওঠে। চা খাবো। সাথে আঙুলি। সজল যেতে চায় না। পাবলিক প্লেসে যেতে চায় না। সোহানার পীড়াপীড়িতে বাধ্য হয় দোকানে বসতে। দোকানী পোশাক দেখেই ভয় পায়। আশেপাশের লোকজন তটস্থ! সোহানা হাসতে হাসতে বলে,ভয় পাচ্ছো কেন সবাই, এই পুলিশ এখন নিজেই এরেস্টেড।৷

তার হাসিতে কেউ অংশ নেয়নি কারণ সজলের পোশাক। এমন কী সজল নিজেও হাসতে পারেনি! একবার নিজের পোশাকের দিকে তাকালো আর একবার সোহানার মুখে। তারপরই কী এক অব্যক্ত বেদনায় মুখটি নীল হয়ে উঠলো। সে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। সোহানার কবিচোখ কিছুই এড়ায় না। বিড়বিড় করে বললো পোশাকের আড়ালে লুকিয়ে আছে অবিকল সংবেদশীল মানুষ। কর্তব্য পালন করতে করতে হারিয়ে গেছে বর্ণিল সময়! রোদে আমিও পুড়ি, ঝড়ে আমিও পড়ি! হাজার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। আমিও যে মানুষ! আমার নিরাপত্তাও যে লাগে! আমারো যে ছাতার নিচে দাঁড়াতে মন চায়! আমারো যে ইচ্ছা জাগে- ও কবি, আমি তোমায় ভালোবাসি বলতে! থানায় কতো নারী কতো পুরুষ কতো রঙে আসে। আমারো ইচ্ছা করে পরম অনুরাগে চোখের জল মুছে কাছে রাখতে। সোহানার অনুসন্ধানী চোখে সবই ধরা পড়ে। ঠিক সে সময় সজল সচল হয়ে উঠলো। এক লোক যার পিঠে কুঁজ কিন্তু চোখগুলো ধূর্তের প্রতীক। তাকে ধরেই কষে গুণে গুণে চার চড় মারলো। সোহানা চমকে উঠেই চিৎকার করে, কী হচ্ছে?৷

সজল পকেট থেকে ওয়ারেন্ট পেপার বের করে বললো, ইউ আর আন্ডার এরস্টে! কুঁজো লোকটি মাথা নিচু করে বসে আছে। কিন্তু চোখ খুঁতখুঁতে। চান্স পেলেই যেন ভাগবে…

সোহানা বিস্মিত হয় এ জনই পোশাকী মানুষটিকে এখানে পাওয়া গেলো! সোহানা তখনো চায়ে চুমুক দেয়নি। টিমটিম বিস্কিটের প্যাকেট খুলে সজলের হাতে দিতেই দেখলো তার চোখ জ¦ল জ¦ল করছে। অস্থিরতা তাকে গ্রাস করছে। এক্ষুণি তাকে ফিরতে হবে। কোমরে রাখা ফোন বেজে উঠলো। কোডিং ভাষা ব্যবহার করে কী বললো তা না বুঝলেও বোঝা গেছে কুঁজো লোকটির ধরা পড়ার খবর পৌঁছ গেছে। ঠিক তক্ষুণি পাশের জুপড়ি বাড়ি থেকে কান্নার রোল শোনা গেলো, ‘তাইনেরে কইছি আমনে এসব করিয়েন না তাইনে হুনে না। অহন আবার জেলে যাইবো।’
সজল যেন শুনেছেই না। অপরাধী নেয়ার জন্য পুলিশের গাড়ি চলে এসেছে।

কুঁজো লোকটি সোহানার পাশেই বসে আছে। একটা বিস্কিট হাতে দিয়ে বললো, কী করেছো তুমি?
নির্বিকার উত্তর -‘বাবার’ চালান পার করে দিই। প্রতি ছালানে এক হাজার টাকা পাই। তাতে মনার মায়ের কষ্ট কমে।
-মনা কে?
-আমার মাইয়া। টুতে পড়ে। মেলা খরচ। মনার মা মাইনষের বাসায় কাম করে। আমি কিচ্ছু করতে পারি না। সে এতো কষ্ট করে আমার ভালো লাগে না। আর কোন কাম কইরতে পারি না। কুঁজ্য়ো অনেক ব্যথা হয়।
মনার মা এসে পাশে দাঁড়ায়।
-ওইখানে কেমনে থাইকবেন আমনে? ওই কুঁজে ব্যথা উডলে কী কইরবেন? সজলের দিকে করুণ চোখে তাকায়। সজল অন্য দিকে মুখ ফেরায়। এখন সোহানার উপস্থিতি তার কাছে গৌণ। একমাত্র মনোযোগ কুঁজো লোকটিরই দিকে!
সোহানা জানতে চায়, তোমার নাম কী?
-রাজা।
-রাজা?
হ্যাঁ। বাপ মার একমাত্র সন্তান আমি । তাই নাম রাইখছে রাজা। রাজা তো নয় হেজা! ভাত পাই না খাইতে! আবার রাজা!

রাজার চোখে পানি। ‘কুঁজের চিকিৎসা কইরতে কইরতে বাপে জমিজমা সব বেচি খাইছে। বাপে মরছে,মায়ে মরছে। ভিক্ষা করি খাইতাম। মনার মায়ে হাল ধইচ্ছে। ঝুপড়িতে লই আইছে।’

চারদিকে লোকের সমাগম বেড়েছে। মুহূর্তেই খবর রটে গেছে মনার বাপ ধরা পড়েছে। কেউ বলছে-হ,কুঁজ নিয়ে কেমনে খারাপ কাজ করেছে! কেউ বলে পেটের দায়ে কী জানি কী করেছে! জমির খুশি হয়েছে। যাক বাবা, রাজা এবার জেলে যাবে। মনার মা এবার শুধুই আমার হবে। জমির মনার মার পাশে এসে বলে, কাঁন্দিস না, আঁই আছি না!
মনার মা জমিরের ইঙ্গিত স্পষ্ট বোঝে। একবার জমিরের দিকে তাকায় তো একবার রাজার দিকে আবার কাঁদে। সোহানার কোন কিছুই দৃষ্টি এড়ায় না। রাজা চুপচাপ পুলিশের গাড়িতে ওঠে। সজল সোহনার দিকে অপ্রস্তুত চোখে তাকায়, যাবে কী ভাবে?
সোহানার ঢেউ থেমে যায়। খুব তীক্ষè কন্ঠে বলে, রাজা খুব অন্যায় করেছে। বাবার চালান বহন করেছে। কিন্তু রাজা না থাকলেও এ চালান বন্ধ হবে না।
-জানি।
তাহলে এ রাজাকেই নিয়ে যাবে?
-হ্যাঁ। আইনের চোখে সেই অপরাধী । সাজা তাকেই পেতে হবে। সজল নির্বিকার। রাজাকে চালান দেয়ার সাথে সাথে এ মাসে তার অপরাধী ধরার টার্গেট পূর্ণ হবে।
সোহানা উদগ্রীব। রাজাকে ছেড়ে দিতে হবে। সমাজে অপরাধীরা উঁচু তলায় থাকে । নিচুলার মানুষদের তারা প্রয়োজন মতো ব্যবহার করে। এখন হয়তো তারা রাজাকে চিনবেই না।

তুমি জানো কারা তোমাকে দিয়ে রাজার চালান পার করে?
-না। জানি না। তয় শুইনছি যে বেডা মূলে হে বেডার মেলা টাকা। হে লাগে বড়ো রাজনীতিবিদ অইবো। ক্ষমতা আছে। মাইনষে কয় এমপি।
সজল ধমক মারে, এই থাম। সাথে এক লাথি। পোশাকের দিকে তাকিয়ে আবারো সজল মন খারাপ করে।
শালার পোশাক! ইচ্ছা করে ছিঁড়ে ফেলি! সত্য বলার উপায় নেই। ততোক্ষণে হর্ন বাজাতে বাজাতে পুলিশের গাড়ি হাজির সাথে সিপাহী। যেন অনেক বড়ো কোন অপরাধীকে ধরেছে! ফোন আবার বেজে উঠেছে
। কোডিং বাসা বোঝার সাধ্যি সোহানার নেই। তবে মারাত্মক কোন কিছু হতে যাচ্ছে তা কিন্তু বুঝতে পারলো। সজল রাজার পাচায় তিন লাথি মেরে বললো , যা ভাগ। দৌড়া। দেখি কতো জোরে দৌড়তে পারিস। মনার মা হাউমাউ করে চিৎকার দিয়ে উঠলো। ‘ও পুলিশ ভাই, আমনে হেতেন রে জেলে নেন। আল্লাহর দোয়াই মারিয়েন না।’

সোহানা আর কিছু ভাবতে পারছে না। সজলের চোখ ভেজা। রাজা দৌড়ছে পেছনে সাতজন পুলিশ বন্দুক নিয়ে দৌড়ছে। সজল চিৎকার করে হুকুম দিচ্ছে। ফলো হিম এন্ড ফায়ার! বামহাতে চোখ মুছে একবার সোহানার দিকে তাকালো, বললো, সরি। আই এ্যাম অনলি ক্যারিং দ্য অর্ডার! পদ্মার বুকে জেগে ওঠা চর যেন সতর্ক হয়ে উঠলো। সব বাড়ির দরজা বন্ধ হলো। দমকা হাওয়ায় ধূলি উড়লো, আধমরা পদ্মার জলে সাঁতারে ব্যস্ত চরের দুরন্ত কিশোরেরা থমকে গেলো। চারদিকে আর্তনাদ শোনা গেলো ‘রাজারে ক্রসফায়ারে দিছে রে।’

শাহানা সিরাজী
ইন্সট্রাক্টর ( সাধারণ)
পিটিআই, মুন্সীগঞ্জ
কবি, প্রাবন্ধিক ও কথা সাহিত্যিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top