মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজে – এক ব্যক্তি পরপর দু’বারের বেশি সভাপতি হতে পারবেন না

Picsart_24-03-23_16-12-55-092.jpg

কলেজ পর্যায়ের পরিচালনা কমিটিকে বলা হয় গভর্নিং বডি এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটিকে বলা হয় ম্যানেজিং কমিটি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিল সংগ্রহ, শিক্ষক নিয়োগ (বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ বা এনটিআরসিএর সুপারিশে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ হয়। তবে অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পুরো ক্ষমতা কমিটির হাতে), বরখাস্ত, বাতিল বা অপসারণ, নৈমিত্তিক ছুটি মঞ্জুর করা ইত্যাদি পরিচালনার কাজ কমিটির হাতে।

উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত বাজেটসহ বার্ষিক বাজেট অনুমোদন, সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ, সংরক্ষিত ও সাধারণ তহবিল, অন্যান্য তহবিল, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বিলে সই করাসহ মোটামুটি প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ কাজই হয় পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে।

সাগর চৌধুরীঃ একই ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে পারবেন না।

দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার পর অবশেষে বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক করা হচ্ছে।

একই সঙ্গে এক ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি সভাপতি হতে পারবেন না।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা সংশোধন করে শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের আইনি মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে। তারা আশা করছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক মতামত পাওয়া যাবে। এর পরই আদেশ জারি হবে।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি গঠনের অনুমোদন দিয়ে থাকে শিক্ষা বোর্ডগুলো। জানতে চাইলে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের সমন্বয় কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমে বলেন, সভাপতি হওয়ার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক করা এবং কেউ একাধারে দুবারের বেশি সভাপতি হতে না পারার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। এখন আদেশ জারির অপেক্ষায় আছেন তাঁরা।

দেশে বর্তমানে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ৩৫ হাজারের বেশি। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ৩০ হাজার। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে। এর মধ্যে কলেজ পর্যায়ের পরিচালনা কমিটিকে বলা হয় গভর্নিং বডি এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটিকে বলা হয় ম্যানেজিং কমিটি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিল সংগ্রহ, শিক্ষক নিয়োগ (বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ বা এনটিআরসিএর সুপারিশে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ হয়। তবে অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পুরো ক্ষমতা কমিটির হাতে), বরখাস্ত, বাতিল বা অপসারণ, নৈমিত্তিক ছুটি মঞ্জুর করা ইত্যাদি পরিচালনার কাজ কমিটির হাতে। উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত বাজেটসহ বার্ষিক বাজেট অনুমোদন, সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ, সংরক্ষিত ও সাধারণ তহবিল, অন্যান্য তহবিল, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বিলে সই করাসহ মোটামুটি প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ কাজই হয় পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে।

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি হয় ১১ থেকে ১৪ সদস্যের। এর মধ্যে একজন সভাপতি থাকেন। শিক্ষার্থীর অভিভাবক ছাড়াও সভাপতি হওয়া যায়। উচ্চমাধ্যমিক স্তরের কমিটিও একই রকমের।

বর্তমানে ২০০৯ সালের প্রবিধানমালায় চলছে বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি। বর্তমানে কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ নেই। ফলে যে কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারেন। একসময় স্থানীয় সংসদ সদস্যরা তাঁদের চাওয়া অনুযায়ী নিজ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতেন। কিন্তু ২০১৬ সালে উচ্চ আদালতের রায়ের পর সংসদ সদস্যরা পদাধিকারবলে সভাপতি হতে পারেন না। যদিও বাস্তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের পছন্দের ব্যক্তিরাই পরিচালনা কমিটির সভাপতি হয়ে থাকেন। সাধারণত স্থানীয় সংসদ সদস্যদের আত্মীয়স্বজন, ঘনিষ্ঠজন, অনুসারী বা দলীয় নেতা-কর্মীরা পরিচালনা কমিটির বিভিন্ন পদে বসছেন।

কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে স্নাতক ডিগ্রি হতে হয়। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এটি করা যায়নি। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে উচ্চমাধ্যমিক করার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমে বলেন, শুধু সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করলেই মৌলিক পরিবর্তন হবে না। তাঁর মতে, যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার মতো গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ না হন, তাহলে যতই উচ্চশিক্ষিত হোক না কেন সেটি ভালো কিছু হবে না।

আরও সংবাদ পড়ুন।

কোচিং শিক্ষকদের নিয়ে কঠোর মাউশি; কোচিং করায় শিক্ষকদের বিষয়ে প্রশিক্ষনে নিষেধাজ্ঞা

আরও সংবাদ পড়ুন।

কোচিং ব্যবসা পরিহারের নিদের্শ রাষ্ট্রপতির

আরও সংবাদ পড়ুন।

আজ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে – এনটিআরসিএ

আরও সংবাদ পড়ুন।

এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ করেন – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আরও সংবাদ পড়ুন।

কেন রোজায় খোলা রাখা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ? শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি বলছে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top