ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জসিম উদ্দীনের অবৈধ সম্পদের খোঁজে – দুদক

Picsart_24-01-28_15-41-33-020.jpg

অপরাধ প্রতিবেদকঃ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দীনের প্রায় শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মুখোমুখি হয়েছেন । চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শহরে দুটি ৬ তলা বাড়ি, ১০০ একরের বেশি জমি ও মার্কেটসহ বেশকিছু সম্পদের মালিকানা রয়েছে তার। যা তিনি নিজের নামে ছাড়াও স্ত্রী, ভাই ও শ্যালকের নামে গড়েছেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দীনের বাবা ছিলেন দিনমজুর। এই চাকরি করে শত কোটি টাকার মালিক কীভাবে হলেন। আলাদীনের আশ্চার্য প্রদীপের সন্ধান ছাড়া এতো সম্পদের মালিক হওয়া যায় না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, জসিম উদ্দীন এক সময়ে কুমিল্লায় ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে কারণে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত বছরের শেষের দিকে দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান শুরু করা হয়।

সম্প্রতি অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান রুবেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

অনুসন্ধান পর্যায়ে চট্টগ্রাম ও সীতাকুণ্ডের সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, ভূমি অফিস, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সরকারি-বেসরকারি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। যা বর্তমানে যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

অত্যন্ত সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা একজন কর্মকর্তা কীভাবে এতো সম্পদের মালিক হয়েছেন, সেটাই অনুসন্ধানের লক্ষ্য! নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদের মালিকানা ও সম্পদ অর্জনের সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এক সময়ে কুমিল্লায় সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে হিসেবে এটা কুমিল্লা থেকে অনুসন্ধান চলছে। যতটুকু নথিপত্র পাওয়া গেছে, তাতে অবৈধ সম্পদের সত্যতা রয়েছে। তবে অভিযোগে যা বলা হয়েছে, তার সবটুকু সত্য নয়। অনুসন্ধান শেষে হলে বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জসিম উদ্দীন সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা হলেও তার বাবার পরিচয় সন্দ্বীপ। তবে সম্পদের অভিযোগ মূলত সীতাকুণ্ডের সম্পদকে ঘিরেই। জসিম উদ্দিনের বাবা ছিল সামান্য দিনমজুর। তার শ্বশুর ছিলেন সরকারি ফায়ার সার্ভিসের একজন ফায়ার ম্যান। তার বড় ভাই সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। তার ছোট ভাই সরকারি ছোট পর্যায়ের চাকরি করে। রানা প্লাজার ঘটনার পর সরকারি কিছু নিয়ম গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানকে বেঁধে দেওয়ার পর থেকে জসিম এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মূলত অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রচুর সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রামে সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ফায়ার ফাইটিং লাইসেন্স দেওয়া ও নবায়ন এবং ফায়ার ফাইটিংয়ের সব ইকুইপমেন্ট নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে বাধ্য করানো তার অসৎ উপার্জনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন। তবে জসিম উদ্দীন নিজের নামে সম্পত্তি কম ক্রয় করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

তিনি প্রায় সব সম্পত্তি বউ, শালা, ভাইয়ের মেয়েসহ নিকট আত্মীয় স্বজনের নামে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। অভিযোগে জসিম উদ্দীন একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মালিকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড স্টেশন কলেজ রোডে কালি মন্দিরের সামনে গড়ে ওঠা বদিউল আলম নিউ মার্কেট, সীতাকুণ্ডের মধ্যম মহাদেবপুরের (কলেজ রোড), ৬ তলা ভবন, জসিম নিজ নামে সীতাকুণ্ড মধ্যম মহাদেবপুর চৌধুরী পাড়া এলাকায় তার নির্মাণাধীন ৫ তলা ভবন।

অন্যদিকে স্ত্রী পারভীন আক্তারের নামে সীতাকুণ্ডের চৌধুরী পাড়ায় ৬ তলা ভবন, কলেজ রোডে এসপি মার্কেট, স্ত্রীর নামে ১০০০ শতাংশ জমি, অন্য জায়গায় ২ শতাংশ জমিসহ দোকান রয়েছে।

এছাড়া জসিম উদ্দীনের বড় ভাইয়ের নামে সীতাকুণ্ডে চৌধুরী পাড়ার পূর্ব পার্শ্বে খরিদকৃত প্রায় ২৪ শতাংশ জমি ও চট্টগ্রাম ইপিজেডের ভেতরে বড় ভাইয়ের ছেলের নামে একটি কারখানা রয়েছে। আর জসিম উদ্দীনের শ্যালক মো. সেলিমের নামে ৮০০ শতাংশ ও ৫০০ শতাংশ জমি এবং দুটি নোহা গাড়ি ও ২টি প্রাইভেট কারের মালিকানা রয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

আরও সংবাদ পড়ুন।

যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকর্মীদের কোভিড-১৯ মোকাবেলার সরঞ্জাম দিয়েছে

আরও সংবাদ পড়ুন।

চট্রগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ – ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মীসহ নিহত ৩১

আরও সংবাদ পড়ুন।

কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৯ ইউনিট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top