যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকর্মীদের কোভিড-১৯ মোকাবেলার সরঞ্জাম দিয়েছে
সাগর চৌধুরীঃ বাংলাদেশে
নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সহায়তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স (এফএসসিডি)এর পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন) লে: কর্ণেল জুলফিকার রহমান এবং সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের কাছে অত্যাবশ্যকীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) হস্তান্তর করেন।
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তুতি ও এই রোগ ছড়িয়ে পড়া রোধে দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং রোগ সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি, কাল্পনিক ও ভুল ধারণা দূর করা এবং নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা প্রতিটি বাংলাদেশী নাগরিককে সাহসিকতার সাথে বীরের মতো সেবা দিচ্ছেন এফএসসিডি-সহ সেই সকল প্রথম সাড়াদানকারী সম্মুখ সারির মানুষদের সহায়তা করার চলমান সরকারি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ২২ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে।
আজ ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস যে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামগুলো হস্তান্তর করেছে তার মধ্যে রয়েছে ১,০০০টি কেএন৯৫ সার্জিক্যাল মাস্ক, ২০০ মিলিলিটারের ৮০০ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৫০০ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লোভস, ৩০০টি ঝুঁকিপূর্ণ উপকরণ রোধক (হ্যাজম্যাট) স্যুট, ১০০টি সুরক্ষামূলক মাস্ক এবং ৫০টি মেডিকেল গগলস।
এই সকল উপকরণ ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশী কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সকল ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামগুলো (পিপিই) স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া রোধে কর্মরত এফএসসিডি-র সম্মুখসারির কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করবে। পিপিই থাকায় এফএসসিডি-র সম্মুখসারির কর্মীরা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় দ্রুত ও নিরাপদে সাড়া দিতে পারবে।
ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে করে বাংলাদেশের যেকোন স্থানের জরুরি মেডিকেল সরঞ্জাম ঘাটতি চিহ্নিত করা ও ঘাটতি দূর করা যায়; সম্মুখসারির কর্মী ও নির্ধারিত কোভিড-১৯ চিকিত্সা কেন্দ্রগুলোতে পিপিই ও অন্যান্য চিকিত্সা সরঞ্জাম সরবরাহ করা এই কাজেরই অন্তর্ভুক্ত।
আজকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত পিপিই সরঞ্জাম প্রদান বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের নেয়া অনেক উদ্যোগের একটি, যা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অব্যাহত অঙ্গীকারের প্রকাশ।
এই পদক্ষেপ দুই দেশের পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে এবং একটি অবাধ ও স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করতে দুই দেশের শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এই মহামারী মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বিশ্বব্যাপী জরুরি স্বাস্থ্য, মানবিক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিওদের মাধ্যমে ৯০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই তহবিল বিশ্বের ১২০টিরও বেশি দেশে জনস্বাস্থ্য শিক্ষার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সুরক্ষা, এবং পরীক্ষাগার, রোগের সার্ভিল্যান্স ও জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেয়ার সামর্থ্য বাড়ানোর মাধ্যমে মানুষের জীবন বাঁচাবে।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ২২ মিলিয়ন ডলারের এই সহায়তা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য বিগত ২০ বছরে দেয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি স্বাস্থ্য সহায়তার সাথে যুক্ত হলো, যা বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য মানসম্পন্ন জীবনরক্ষাকারী স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা ও অঙ্গীকারের বিষয়টিই তুলে ধরে।
ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানীয় পর্যায়ে এলাকাবাসীর মধ্যে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া রোধে কর্মরত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স (এফএসসিডি)-এর সম্মুখসারির কর্মীদের অত্যাবশ্যকীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) দিতে পেরে গর্বিত।
বর্তমান সঙ্কট মোকাবেলায় এফএসসিডি-র প্রথম সাড়াদানকারী সম্মুখসারির কর্মীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
তারা মানুষের সেবায় এগিয়ে আসা অন্যান্য পেশাজীবী — স্বাস্থ্যসেবাদানকারী, পুলিশ, সাংবাদিক ও ফটোসাংবাদিক, মুদি, ওষুধের দোকান ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং যারা বেসরকারি ও কমিউিনিটি সংগঠনগুলোতে কাজ করছেন — তাদের সাথে মিলে প্রতিদিন অসাধারণভাবে মানুষের সেবা দিচ্ছেন।
যেমনটা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিলার বলেছেন, “আপনারা সবাই সত্যিকারের নায়ক … আমাদের সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা আপনাদেরই প্রাপ্য।”