মেডিকেল ভর্তি প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত চিকিৎসক ও চেয়ারম্যান সহ গ্রেপ্তার ৯ জন

Picsart_22-12-11_08-35-29-199.jpg

মেডিকেল ভর্তি প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত চিকিৎসক ও চেয়ারম্যান সহ গ্রেপ্তার ৯ জন

অপরাধ প্রতিবেদকঃ বিভিন্ন সময় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলার নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানসহ পাঁচ চিকিৎসক আছেন। সিআইডির দাবি, ইউপি চেয়ারম্যান প্রশ্নফাঁসের গুরুত্বপূর্ণ হোতাদের একজন।

বৃহস্পতিবার সিআইডির মুখপাত্র পুলিশ সুপার আজাদ রহমানের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অব্যাহত অভিযানের অংশ হিসেবে গত সোমবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত দিনাজপুর, নীলফামারী ও ঢাকায় পৃথক অভিযান চালানো হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন, নীলফামারীর সৈয়দপুরের বিটস কোচিংয়ের পরিচালক আবদুল হাফিজ, চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ রাসেল, সোহানুর রহমান সোহান, তৌফিকুল হাসান এবং রায়হানুল ইসলাম সোহান ও বকুল রায়। এই সাতজন ছাড়া ঢাকায় পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চিকিৎসক ফয়সাল হোসেন বাদশা ও ইবরার আলমকে।

সিআইডির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তাদের কাছে থেকে চক্রের অন্যান্য সদস্য ও অসাধু উপায়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নাম পাওয়া গেছে।

সিআইডি জানায়, এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূইয়া মুন্নুর গোপন ডায়েরি থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা অন্য সদস্যদের বিষয়ে জানতে পারে সিআইডি। গ্রেপ্তার ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ ২০১০ সাল থেকে তিনি প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত। তিনি চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীমের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী।

২০১৭ সালের মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের একটি মামলায় সাজ্জাদ এজাহারনামীয় আসামি। তিনি উত্তরবঙ্গের অসংখ্য শিক্ষার্থীকে অনৈতিক উপায়ে মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে কোটি টাকার বেশি আয় করেছেন। 

আবদুল হাফিজ কোচিং সেন্টারের পাশাপাশি একটি বেসরকারি হাসপাতালের মালিক। সোহানুর রহমান ২০১৩ সালে হাফিজের কাছে থেকে প্রশ্নপত্র পেয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলে ভর্তি হন। পরে বিসিএস স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে পার্বতীপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন।

ফয়সাল আহমেদ চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেনের মাধ্যমে ২০১০ সালে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এরপর যক্ষা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সার্ভেইলান্স মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ফয়সাল নিজেও পরে প্রশ্নফাঁসের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। 

তৌফিকুল ইসলাম রংপুর মেডিকেল থেকে পাশ করেছেন। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত চিকিৎক জিল্লুর হাসান রনির তিনি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিলেন। রনিকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। একই মেডিকেল থেকে পাস করা ইবরার আলমও সহযোগী ছিলেন রনির। ইবরার ২০১৩ ও ২০১৫ সালের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে রনির মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে সরবরাহ করেন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছে।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামি রায়হানুল ইসলাম সোহান ও বকুল রায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বাসিন্দা। দুজনই একই স্কুলে পড়ার সুবাদে ঘনিষ্ট ছিলেন। রায়হানুল ২০১৫ সালে এক মামার মাধ্যমে মেডিকেলের ফাঁসকৃত প্রশ্ন পান ও বকুলকে সরবরাহ করেন। বকুল ভর্তিচ্ছু চার ছোট ভাইয়ের কাছে সে প্রশ্নপত্র বিক্রি করেন। ওই চারজনই বিভিন্ন মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছেন।

সাইফুল আলম বাদশা ২০১০ সালে সাজ্জাদ হোসেনের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এরপর প্রশ্নফাঁস ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। ২০১৩ ও ২০১৫ সালে তিনি একাধিক শিক্ষার্থীকে প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে মেডিকেল ভর্তি করান। 

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছে থেকে আলামত হিসেবে ৯টি মোবাইলফোন, দুটি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জব্দ করেছে সিআইডি।

আরও সংবাদ পড়ুন।

সিআইডি জনগণের আস্থা ও ভালবাসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আরও সংবাদ পড়ুন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সিআইডির পরিদর্শকের নেতৃত্বে ডাকাতি

আরও সংবাদ পড়ুন।

সিআইডি’র পুলিশ সুপার মুনির হোসেন’কে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালো সরকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top