বাংলাদেশে এইডস রোগী শনাক্তে রেকর্ড – হাসপাতালগুলো চিকিৎসা দিতে চায় না

Picsart_23-12-01_11-35-57-053.jpg

রক্তের শিরায় মাদক গ্রহণকারী, যৌনকর্মী, সমকামী এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইডস বেশি শনাক্ত হতো। এখন সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ রোগ শনাক্ত হচ্ছে।

1.বাংলাদেশে এইডস রোগী শনাক্তে রেকর্ড।
2. হাসপাতালগুলো চিকিৎসা দিতে চায় না।
3. বিশ্ব এইডস দিবস আজ
4. রোগী শনাক্তের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ

স্বাস্থ্য প্রতিবেদকঃ এক বছরে ১ হাজার ১০০ এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর আগে কোনো বছর এত রোগী দেখা যায়নি। এ নিয়ে এইডসে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল প্রায় ১১ হাজার। এর আগে ২০২০ সালে রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৯৪৭ জন। এবার ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর চেয়ে সাধারণ মানুষ এইচআইভিতে বেশি সংক্রমিত হয়েছে। প্রতিবছরের মতো রোগী শনাক্তের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইচআইভি এইডসের ২০২৩ সালের সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণে এসব তথ্য মিলেছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শনাক্ত হওয়া রোগী চিকিৎসা না নেওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এইডস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় পরীক্ষা ও চিকিৎসাসেবার পরিধি বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। এ পরিস্থিতিতে আজ শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস। অন্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও পালিত হবে দিবসটি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘কমিউনিটির আমন্ত্রণ এইডস হবে নিয়ন্ত্রণ’। দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ১০০ জন এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। এইডস/এসটিডি প্রোগ্রামের তথ্য অনুযায়ী, দেশে আনুমানিক সাড়ে ১৪ হাজার রোগী রয়েছে। এসব রোগীর ৩৭ শতাংশ এখনও শনাক্তের বাইরে। আর চিকিৎসার বাইরে রয়েছে ২৩ শতাংশ রোগী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, রোগী শনাক্তের দিক থেকে ঢাকার পরে রয়েছে রাজশাহী বিভাগ। এর পরে চট্টগ্রাম বিভাগ। তবে সম্প্রতি সিরাজগঞ্জে অস্বাভাবিক হারে এইডস রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত এক বছরে সেখানে ১৪৪ এইডস রোগী মিলেছে। যাদের মধ্যে ৯৮ শতাংশই সুঁই-সিরিঞ্জের মাদকসেবী। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইডস/এসটিডি প্রোগ্রামের সিনিয়র ম্যানেজার (ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়) মো. আখতারুজ্জামান বলেন, একসময় শিরায় মাদক গ্রহণকারী, যৌনকর্মী, সমকামী এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইডস বেশি শনাক্ত হতো। এখন সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ রোগ শনাক্ত হচ্ছে। 

সারাদেশে ১৩ কেন্দ্রে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও এইডস রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে। এই হাসপাতালে জ্বর, মাথাব্যথা, ফুসকুড়ি বা গলা ব্যথা ও অন্যান্য জটিল রোগে লক্ষণ নিয়ে আসা ১০ শতাংশ ব্যক্তির এইচআইভি এইডস শনাক্ত হয়েছে। এ কেন্দ্রে শনাক্ত হওয়া ৬৬ শতাংশই বিদেশ থেকে আসা। তাদের সবাই পূর্ণাঙ্গ সুস্থতার প্রতিবেদন নিয়ে বিদেশ নিয়েছিলেন। তবে আসার ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকটা বাধাহীনভাবেই তারা দেশে ঢুকছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইডস প্রতিরোধ কর্মসূচির তথ্য বলছে, বছরে নতুন শনাক্তদের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অভিবাসী অথবা তাদের পরিবারের। মধ্যপ্রাচ্যসহ কয়েকটি দেশে প্রবেশের আগেই এইচআইভি পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে আক্রান্ত হয়ে দেশে ফেরত আসার পর তাদের শনাক্তে বিমানবন্দরে ব্যবস্থা নেই।

২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে আসা ১ হাজার ৫৪২ সন্দেহ ভাজন ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে ১০ শতাংশের এইডস শনাক্ত হয়েছে। ২০২২ সালে এ হার ছিল ৬ শতাংশ। 

শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির ৬৬ শতাংশই বিদেশ ফেরত। ২১ শতাংশ সমকামী। এইডস শনাক্ত হওয়া ১২ শতাংশ যক্ষ্মার রোগী। এদের ৬ শতাংশ রোহিঙ্গা। ৫ শতাংশ ব্যক্তির মা-বাবা থেকে এইচআইভি হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসকরা বলছেন, এইচআইভি পজিটিভ ৯৮ শতাংশ মা সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারেন।

সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে এইডস রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আরিফুল বাশার বলেন, এ হাসপাতালে জটিল রোগীর সেবা দেওয়া হয়। তবে সংকট হলো, এসব রোগীর চিকিৎসায় যে ধরনের ল্যাব সুবিধা থাকা জরুরি, তা নেই। অনেক সময় এইডস আক্রান্ত রোগীর অস্ত্রোপচার ও হার্টের রিং পরানো প্রয়োজন হলেও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো চিকিৎসা দিতে চায় না।

আরও সংবাদ পড়ুন।

জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত লক্ষ্য অর্জনে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আরও সংবাদ পড়ুন।

কমিউনিটি ক্লিনিকের বৈশ্বিক স্বীকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর সন্তোষ প্রকাশ

আরও সংবাদ পড়ুন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ জালিয়াতি – নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও সাবেক পরিচালকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top