ঘুসের টাকাসহ দুদক মহাপরিচালকের পিএ গৌতম ভট্টাচার্য ও দুই সহযোগী আটক

Picsart_23-06-24_09-43-57-968.jpg

ঘুসের টাকাসহ দুদক মহাপরিচালকের পিএ গৌতম ভট্টাচার্য ও
দুই সহযোগী আটক

অপরাধ প্রতিবেদকঃ নানা রকম তথ্যের সত্য ও মিথ্যায় চাপা একরাশ কালো ধোঁয়ায় ক্ষীন আলোয় জানা গেল, রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সহকারীকে (পিএ) সহ দুইজনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

শুক্রবার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুস নেওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির নাম গৌতম ভট্টাচার্য। তিনি দুদক মহাপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. মোকাম্মেল হকের পিএ। গৌতমের ঘুস বাণিজ্যের দুই সহযোগীকেও আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

জানা যায়, দুদক কর্মকর্তাদের সই জাল করে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা, ঢাকার উত্তরার ব্যবসায়ী আশিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের একটি চিঠি তৈরি করেন গৌতম ভট্টাচার্য। এরপর অভিযোগটি নথিভুক্ত করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তার কাছে ৫০ লাখ টাকা ঘুস দাবি করেন। বিষয়টি জানতে পেরে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন ডিবি কর্মকর্তারা। এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন শুক্রবার ঘুসের টাকা লেনদেন করা হবে। এ তথ্য শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরই অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান। মতিঝিলের হিরাঝিল হোটেলে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুসের টাকা আনতে যান গৌতম ও তার দুই সহযোগী। ওই দুজনও দুদক কর্মকর্তার পরিচয় দেন। যদিও তারা দুদকের কেউ নন। একটি মিষ্টির প্যাকেট ভর্তি টাকা লেনদেনের সময় হাতেনাতে তাদের আটক করা হয়। তবে কত টাকা জব্দ করা হয়েছে তা নিশ্চিত করা যায়নি।

ভিন্ন একটি সূত্র জানিয়েছে, দুদকের নামে চাঁদাবাজির বেশ কিছু অভিযোগ আসে কমিশনের কাছে। ভুয়া চিঠি বানিয়ে দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে এই চাঁদাবাজ সিন্ডেকেট চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। এরপর বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ঘুস লেনদেনের ফাঁদ পেতে অভিযান চালায় ডিবি।

দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ঘুসের টাকাসহ আটক হওয়া ৪১৯ ধারার অপরাধ। এই অপরাধ দুদকের তফশিলভুক্ত নয়। ফলে পুলিশ গৌতমের বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে আদালতে সোপর্দ করবে। এরপর দুদক বিভাগীয় মামলা করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করবে। বিভাগীয় মামলার তদন্ত শেষে দোষ প্রমাণিত হলে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হতে পারে।

জানা যায়, বিসিএস ১৭ ব্যাচের কর্মকর্তা যুগ্মসচিব মো. মোকাম্মেল হক গত মার্চ মাসে দুদকের মহাপরিচালক (মানি লন্ডারিং) পদে যোগ দেন। তার ব্যক্তিগত সহকারী পদে কাজ করেন গৌতম ভট্টাচার্য। ২০২৩ সালে সাঁটলিপিকার-কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে দুদকে যোগ দেন গৌতম।

অভিযানে অংশ নেওয়া ডিবির একজন কর্মকর্তা গৌতম ভট্টাচার্য ও তার দুই সহযোগীকে আটকের কথা স্বীকার করলেও মামলা করার আগে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি। এখানেই নানা রকম কানাঘুষার ও সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তবে আরেকটি সূত্র বলছে, দুদকের সুনাম রক্ষায় বিষয়টি নিয়ে যাতে মামলা না করা হয় তা নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ে দেনদরবার চলছে। বিষয়টি দুদকের সম্মানে আঘাত হেনেছে বলেও জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়ররা।

মহাপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. মোকাম্মেল হকের পিএ গৌতমের বিষয়ে জানতে চাইলে, অনেকেই বিষয়টি নানা ছুতোয় এড়িয়ে যান।

আরও সংবাদ পড়ুন।

মোকাম্মেল হক দুদকের নতুন মহাপরিচালক

আরও সংবাদ পড়ুন।

চোখ-কান খোলা রাখবে দুদক – দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ

আরও সংবাদ পড়ুন।

জনসচেতনতাই রুখবে দুর্নীতি – দুদক সচিব মাহবুব হোসেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top