ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশীদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বহাল

Picsart_22-10-24_09-08-24-860.jpg

ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশীদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বহাল

আদালত প্রতিবেদকঃ অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বরখাস্ত ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশীদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছে হাই কোর্ট।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেয় বলে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানিয়েছেন।

তিন কোটি ১৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার দায়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর বজলুর রশীদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। এছাড়া তাকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

যে তিন কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য এ মামলায় এসেছে, তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত দেন বিচারক।

গত বছরের ২ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল করেন বজলুর রশীদ। পাশাপাশি জামিনের আবেদনও করেন তিনি। পরদিন আপিল শুনানির আবেদন গ্রহণ করে হাই কোর্ট।

বজলুর রশীদের ৫ বছর জেল

১৯৯৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বজলুর রশীদ ঢাকায় সর্বশেষ কারা সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার আগে ডিআইজি হিসেবে ছিলেন রাজশাহীতে।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দেশের শীর্ষ এক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা স্থানান্তর করতে ডিআইজি প্রিজনস (হেডকোয়ার্টার্স) বজলুর রশীদ অভিনব এক পন্থা বেছে নিয়েছেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে শতাধিক ধাপে তিনি পাঠিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। টাকা তুলেছেন তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহার।

এজন্য প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে সিম তোলা হয়েছে এবং সরাসরি নিজে টাকা না পাঠিয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে ওই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

এরপর এই কারা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুদকের তলবে হাজির হলে ওই বছর ২০ অগাস্ট তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে। পরে তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য রূপায়ন হাউজিং এস্টেটের সঙ্গে বজলুর চুক্তি করেন।

এরপর ২০১৮ সালের ৭ জুন পর্যন্ত ৫৪ হাজার টাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে চেকে পরিশোধ করেন। আর বাকি তিন কোটি ৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা পরিশোধ করেন নগদে।

২০২০ সালের ২৬ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাসিরউদ্দীন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। সব মিলিয়ে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয় সেখানে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঢাকার সিদ্বেশ্বরী রোডে রূপায়ন হাউজিংয়ের স্বপ্ন নিলয় প্রকল্পের দুই হাজার ৯৮১ বর্গফুট আয়তনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন বজলুর রশীদ। এর দাম হিসেবে পরিশোধ করা তিন কোটি ৮ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি প্রদর্শন করতে পারেননি।

“এমনকি অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়সংক্রান্ত কোনো তথ্যও তার আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেননি। ফলে তার এই পরিশোধিত তিন কোটি ৮ লাখ টাকা জ্ঞাতআয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।”

ওই বছরের ২২ অক্টোবর আদালত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই কারা কর্মকর্তার বিচার শুরুর আদেশ দেয়। তার দুই বছরের মাথায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন।

আরও সংবাদ পড়ুন।

কারা অধিদপ্তরের পাঁচ কারা-উপমহাপরিদর্শককে বদলি

আরও সংবাদ পড়ুন।

বরখাস্ত কারা ডিআইজি বজলুর রশীদের ৫ বছরের কারাদণ্ড

আরও সংবাদ পড়ুন।

ফেনী-এর জেল সুপারের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ – দুদকের অভিযান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top