ঘূর্ণিঝড় মোখা-ভোলা থেকে কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী স্থানে আঘাত হানার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ
আবহাওয়া প্রতিবেদকঃ আবহাওয়াবিদগণ জানিয়েছেন, আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে প্রলয়ঙ্করী শক্তিতে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে মোখা। এরই সঙ্গে গতকাল জানা গেল, আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ। কানাডার সাস্? কাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, আমেরিকার নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় মোখার ভোলা থেকে কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ। তবে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে কোথায় এটি আঘাত হানতে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ উপকূলে আঘাত শুরু করার সম্ভাব্য সময় ১৪ মে দুপুরের পর থেকে মধ্যরাত্রির মধ্যে। মোখার মূলকেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় ১৪ মে দিবাগত রাত ১২ টা থেকে ভোর ৬ টা।
ঘূর্ণিঝড়ের পিছনের অর্ধেক অংশ উপকূলে অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় ১৫ মে ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত। উপকূলভাগে আছড়ে পড়ার সময় এর সম্ভাব্য বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পরে ১৬০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার।
চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৭ থেকে ১০ ফটু উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ঘূর্ণাবর্তটি তৈরি হয়েছিল দু’দিন আগে। গতকাল সন্ধ্যায় সেই একই স্থানে এই ঘূর্ণাবর্তটি পরিণত হয়েছে নিম্নচাপে। এর প্রভাবে আন্দামান ও নিকোবরে দুর্যোগ নামতে চলেছে। বর্তমানে কলকাতা থেকে ১৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই নিম্নচাপটি। এই সপ্তাহেই এটি স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে।
আজ ৯ মে সেটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর এই নিম্নচাপ উত্তর দিকে এগোতে থাকবে। তারপর মধ্য বঙ্গোপসাগরের কাছে আগামী ১০ মে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এরপর মোখা এগোতে শুরু করবে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ছেড়ে। ১১ মে পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছবে। এরপর এটি ধীরে ধীরে ফিরে এসে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে যাবে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলের দিকে।
এদিকে সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাপপ্রবাহ বাড়ছে।
দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশজুড়ে ফের বইছে তীব্র তাপদাহ। অসহনীয় গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই গরম থাকতে পারে অন্তত আরও তিনদিন। এরপর বৃষ্টিবাদল হলে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুরে মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যায় এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে, সাগরে ঘূর্ণাবর্ত পরিস্থিতির কারণে দেশের আবহাওয়া তপ্ত হয়ে উঠেছে। সাধারণত সাগরে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে শীতল বাতাস সেই কেন্দ্রমুখী হয়। ফলে বাতাসের সঙ্গে জলীয় বাষ্প চলে যায়। বিপরীত দিকে সাগরের দিক থেকে জলীয় বাষ্পের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে স্থলভাগে জলীয় বাষ্পের স্বল্পতা তৈরি হয়ে তাপদাহ শুরু হয়। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, আরও অন্তত ৩ দিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
ঢাকার তাপমাত্রার রেকর্ড ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস; ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
আরও সংবাদ পড়ুন।