তজুমদ্দিনে ইট ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, হুমকির মুখে পরিবেশ

Picsart_23-01-21_16-58-31-800.jpg

তজুমদ্দিনে ইট ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, হুমকির মুখে পরিবেশ

উপজেলা প্রতিনিধিঃ ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার ইট ভাটা গুলোতে অবৈধভাবে প্রকাশ্যে বনের কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। সরকারি নিয়ম নীতি না মেনে সম্প্রতি ইটভাটা গুলোতে কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। কিন্তু এতে প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই। যেন দেখেও না দেখার ভান করছে প্রশাসন।

নির্দিষ্টভাবে ১২০ ফুট চিমনির মাধ্যমে ইট পোড়ানোর নিয়ম থাকলেও দু’একটি ছাড়া কয়েকটি ইট ভাটা সেই নিয়মও মানছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার ৪নং চাঁচড়া ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ড সংলগ্ন কাটাখালিতে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে গড়ে তোলা হয়েছে লম্বা চিমনির মেসার্স ৫০৫ ব্রিক নামের ইটভাটা। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।

পাশাপাশি রয়েছে তার ভাটায় অবৈধ করাত কল। সরকারী বিধি মোতাবেক ইটভাটা তে করাতকল থাকার নিয়ম নেই সেখানে ক্ষমতার দাপটে ৫০৫ ব্রিকের মালিক আবু তাহের চেয়ারম্যান ভাটাটিতে করাত কল দিয়ে কাঠ চেরি করছে। রাস্তার পাশেই কৃষি জমিতে দিন দুপুরে বনের কাঠ ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে এই ইট ভাট।

জানা যায়, একবার ইট পোড়াতে প্রায় চার হাজার মণ কাঠ পোড়াতে হয়। এসব কাঠ জোগাড় হচ্ছে আশপাশের সংরক্ষিত বন থেকেই। ফলে উজাড় হয়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল। এতে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বাড়ছে। পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন ইট ভাটা গুলো গড়ে উঠলেও তা নিয়ে কারও যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।

তজুমদ্দিনের এর অবৈধ ইট ভাটার মালিকরা দাবি করেছেন, তাদের পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উৎকোচ দিয়ে ইট ভাটা চালু রাখতে হচ্ছে। অবৈধ ইট ভাটা চালু রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তারা বলেন, শুরুতে তারা ড্রাম চিমনি পদ্ধতির ভাটায় ইট পোড়াতেন। পরে সরকার ১২০ ফুট উঁচু চিমনি দিয়ে ইট ভাটা তৈরির নির্দেশনা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেশিরভাগ ইট ভাটা ১২০ ফুট উঁচু চিমনিতে রূপান্তরিত করা হয়।

ইট ভাটা গুলোতে কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে ইট ভাটার মালিক আবু তাহের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের জানান, কয়লার সংকটের কারণে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি করেন। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়লার চেয়ে কাঠের দাম কম হওয়ায় ইট ভাটা গুলোতে প্রতিনিয়ত বেপরোয়াভাবে পোড়ানো হচ্ছে অবৈধ কাঠ।

এ ব্যাপারে ইট ভাটার ম্যানেজার জাহিদের সঙ্গে মুটোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বিগত কয়েকবছর আগে ভোলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অবরোধের মুখে পড়তে হয়েছিল। পরে অনেক দেনদরবার করে সে যাত্রায় আর অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। অভিযান না চালানোর জন্য রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের চাপও রয়েছে অনেক ক্ষেত্রে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top