চরফ্যাশনে প্রাথমিকের সোয়া ৪ কোটি টাকা সুষম বন্টনে লুটপাট! শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-দূর্নীতির অভিযোগ
চরফ্যাশন উপজেলা প্রতিবেদকঃ ঘুষ-দুর্নীতি আর অনিয়মের অভিযোগ চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। শিক্ষকরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন দুর্নীতিবাজ এই শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, উৎকোচ ছাড়া কোনো কাজ হয় না অফিসে।
কোনভাবেই মিলছে না প্রতিকার। ধাপে ধাপে বাড়ছে তার উৎকোচ বাণিজ্যের চাহিদা। আওয়ামীলীগ হাজারী গঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর ফরাজী তার ঘুষ বাণিজ্য বন্ধে তাকে বদলির জন্য স্থানীয় এমপি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক ভোলা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেছেন। ফলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খাঁন তাকে পুর্ব কর্মস্থল দাকোঁপ উপজেলার অনিয়ম দুর্নীতি ঘুষ বাণিজ্য সহ ৩ শিক্ষক কে জিম্মি করে ব্যংক থেকে গৃহঋনের টাকা মাসিক পরিশোধ শেষে বেতন ভাতাদি ৬২ হাজার ৭ শত টাকা পরিশোধ করে বাকী ৭ হাজার ৩ শত টাকায় চরফ্যাশনে জীবনযাপন প্রশ্নবিদ্ধ এবং চরফ্যাশনে ঘুষ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি, অফিসে হোমিওপ্যাথি চেম্বারে পরিনত করা মর্মে ২২-৪৬০ স্বারকে চিঠি দিয়ে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে কেন তাকে চাকরিচ্যুত বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে না জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া তিনি আইন বর্হিভূত নবজাতীয়করন শিক্ষকদের ২২ লক্ষ টাকা শ্্রান্তিভাতা প্রদানের নামে সরকারি অর্থ অপচয় করার অভিযোগ করেছেন উক্ত সচিব। অভিযোগে সিনিয়র সচিব আরও উল্লেখ্য করেন যে, অফিসে বসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করা সরকারী চাকুরী বিধিমালা পরিপন্থী।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও সিনিয়র সচিব’র আদেশ ও উপেক্ষিত অহিদুল ইসলামের কাছে।
২১-২২ অর্থ বছরে চরফ্যাশন প্রাথমিকে ৪ কোটি ১৯ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা বিভিন্ন খাতে বরাদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যর মাধ্যমে সুষম বন্টনে লুটপাট করেছেন গুটি কয়েক প্রধান শিক্ষক মিলে। গত ১২ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ দূর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে বিভিন্ন দপ্তরে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ হলেও এখন পযর্ন্ত তার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। এ কারনেই দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি ।
চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতসহ নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার না হওয়ায় শিক্ষকরা হতাশায়। এছাড়াও অনলাইনে শিক্ষক বদলীর অর্থ বাণিজ্যর অভিযোগ রয়েছে।এসব বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ভূক্তভোগী শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগের এযাবৎ তদন্ত হয়নি। জানা গেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তার রয়েছে ঘনিষ্টজন।
অভিযোগগুলোর সূত্রে জানা যায়,সরকারীভাবে চরফ্যাশন উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে ৪ কোটি ১৯ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা ২০২১-২০২২ইং অর্থবছরের ক্ষুদ্র মেরামত কাজের বিভিন্ন বরাদ্ধ আসে। এর মধ্যে ১০২ টি বিদ্যালয়ের নামে ২ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ আসে। ৬টি বিদ্যালয়ের নামে নীড বেজ বাবদ বিদ্যালয় প্রতি বরাদ্দ আসে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ২১৩ টি প্রতিষ্টানের নামে ¯িøপবরাদ্দ বাবদ বিদ্যালয় প্রতি ৫০ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। ২১২ টি বিদ্যালয়ের নামে প্রাক- প্রাথমিক বরাদ্দ বাবদ বিদ্যালয় প্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। ২১২টি বিদ্যালয়ের নামে কোভিডকালে বিদ্যালয় প্রতি ১২ হাজার টাকা বরাদ্ধ আসে। ওয়াস বøক বাবদ বিদ্যালয় প্রতি ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বরাদ্ধ আসে। বরাদ্ধকৃত টাকা উত্তোলন করতে হলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অফিস সহকারী ছাত্তারের মাধ্যমে ঘুষ দিতে হয় বিদ্যালয় প্রতি ১০ হাজার টাকা। নীড বেজ থেকে বিদ্যালয় প্রতি ৭ হাজার ৫ শ’ টাকা। রুটিন মেইনটেন্যান্স থেকে বিদ্যালয় প্রতি ২ হাজার টাকা। প্রাক- প্রাথমিক থেকে ৫শ’ টাকা।
ওয়াসবøক থেকে বিদ্যালয় প্রতি ৫শ’ টাকা। মহামারী কোভিড -১৯এর সময়ে বরাদ্দ থেকে বিদ্যালয় প্রতি ৫ শ’ টাকা। টাকা দিলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মোশাররফ হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টার অফিসারের প্রত্যায়নের মাধ্যমে কাজের মান সন্তোষজনক এই মর্মে প্রত্যায়ন সংযুক্ত করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে আবেদনের মাধ্যমে চেক প্রদান করলে বরাদ্ধকৃত টাকা উত্তোলন করা হয়। টাকা না দিলে মিলত না প্রত্যায়ন।
এ বিষয়ে অফিস সহকারী ছাত্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান স্যারের সাথে কথা বলেন। আমি কোন কথা বলব না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ঘুষ বাণিজ্য, শিক্ষকদের জিম্মি করে টাকা আদায় সহ অপকর্ম নিয়ে লেখালেখি হলে মঙ্গলবার দুপুরে সকল প্রধান শিক্ষকদের তার কার্যালয়ে নিয়ে অলিখিত সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক নেতা জানান, স্যার খুব ভাল। তিনি না থাকলে এসব প্রকল্পর কাজ করা সম্ভব হতনা। কিছু প্রধান শিক্ষকের মন মত কাজ না করায় এগুলো রটাচ্ছে।
চরফ্যাশন উপজেলা শিক্ষা অফিসার অহিদুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজে কোন শিক্ষকের কাছে থেকে আমি কোন টাকা নেইনি।আমার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের অভিযোগ সত্য নয়।
ব্যা্কং থেকে নেয়া গৃহঋণের টাকা কেটে নেয়ার পর বেতন ভাতাদির ৭ হাজার ৩ শত টাকায় কিভাবে মাসিক ব্যয় নির্বাহ করেন জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে কোন জবাব না দিয়ে চেয়ার ছেড়ে চলে যান।