বাংলার ছাত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা – মোল্লা জালাল

PicsArt_12-28-08.49.11.jpg

বাংলার ছাত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা – মোল্লা জালাল

ভাবতে অবাক লাগে বাংলায় লেখাপাড়া করা একজন মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বুঝেন তা এদেশের বড়বড় ডিগ্রীধারি বাঘা বাঘা ইঞ্জিনিয়াররা কল্পনাও করতে পারেন না কেন। সিলেটে বন্যার পানি দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য তিনি বলে দিলেন, ‘সড়ক কেটে দাও’। পরে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের প্রশ্নে বললেন, ‘সড়কের ভাঙ্গা অংশ মেরামত নয়, ব্রীজ কালভার্ট বানাও’। আবার রেল ক্রসিং এর জায়গায় ‘আন্ডার এবং ওভার পাস’ করতে বললেন। কত সহজ এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের দূরদর্শী নির্দেশনা। এগুলো শুনে আমাদের দেশের তথাকথিত ইঞ্জিনিয়াররা কি লজ্বা পায়না। না, দিনের পর দিন ‘চুরির রাস্তা’ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকায় তারা শংকিত হয়!

আমলাতন্ত্রের মধ্যে যাদের এখনো হুঁসজ্ঞান আছে তাদের দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। মনে রাখা দরকার ‘লোভের জিব্বা’ মাটি দিয়ে গড়ায়, মুখে তার জায়গা হয়না। দেশের সাধারণ মানুষ এখন অনেক কিছুই বুঝে। কিভাবে কি হয়, কারা কি করে। মানুষের সামনে অনুশীলনীয় দৃষ্টান্ত না থাকায় মূল্যবোধের এত অবক্ষয়। ফলে সমাজে কান্ডজ্ঞানহীন ‘ভাইরাল জেনারেশন’ বাড়ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নামে সরকারের একটি ডিপার্টমেন্ট আছে। যাদের কাজ শুধু বালুর বস্তা পানিতে ফেলে ভাউচার বানানো। এই ডিপার্টমেন্টের জন্য বরাদ্ধের ৯৫ ভাগ টাকা শুধু পানির নীচে যায়। এটার সুবিধা হচ্ছে, কোথায় কয় বস্তা বালু ফেলানো হচ্ছে তার হিসাব কেউ পায়না। তাই ৫০ বস্তা বালু ফেলে ৫ হাজার বস্তার ভাউচার বানানো পানির মত সহজ।

সারাদেশে এই ডিপার্টমেন্টের একটি কাজও নেই যার স্থায়ীত্ব আছে। তাই এদের সব প্রজেক্ট বন্ধ করে দিয়ে শুধু খাল-বিল,নদী-নালা ড্রেজিং করার কাজে নিয়োজিত রাখলে কিছুটা হলেও কাজের কাজ হবে।

বেশি আগের কথা নয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে যে কথাগুলো বলেছেন তার সঠিক বাস্তবায়ন হলে দুনিয়ায় কারো সাধ্যি নেই বাংলাদেশকে পিছনে ফেলে রাখে।

তিনি বলেছেন, কৃচ্ছতা সাধনের কথা। বলছেন অপরিকল্পিত ব্যয় বন্ধ করতে। সরকারি কর্মচারিদের বিদেশ সফরের লাগাম টেনে ধরা, উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহনের আগে প্রকল্প এলাকার পরিবেশ-প্রতিবেশ খেয়াল করা, দেশের প্রতিইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনা, কৃষিজমি রক্ষায় যত্রতত্র শিল্প স্থাপন করতে না দেওয়া, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে উৎসাহিত করাসহ সর্বশেষ সিদ্ধান্ত রাত ৮ টার পর সারদেশে দোকান-পাট, শপিং মল বন্ধ রাখা। কিন্তু তাঁর সিদ্ধান্তের কোনটাই শতভাগ সফল হতে দেওয়া হবেনা।

প্রধানমন্ত্রী ‘পদ্মা’ সেতু’ নির্মানের বিষয়ে যদি বেসরকারি অভিজ্ঞ লোকদের নিয়ে পরামর্শক কমিটি না করতেন তবে কিয়ামতের আগেও জাতি পদ্মা সেতুর মুখ দেখতে পেতোনা।

সামনে কোরবানির ঈদ। এই সময়ে বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখার ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্রের উচিৎ হবে কূটচাল না চেলে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সময়োচীত সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর করা। কেননা ‘দেশ প্রেমিক আমলাতন্ত্র’ এবং ‘দেশপ্রেমিক পুঁজি’ ছাড়া কোন অবস্থাতেই একটি দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।

মোল্লা জালাল বিএফইউজে এর সাবেক সভাপতি
সিনিয়র সাংবাদিক ও গীতিকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top