একশ ধর্ম ব্যবসায়ীর তালিকা দুদকে জমা দিয়েছে গণকমিশন
সাগর চৌধুরীঃ এক হাজার মাদ্রাসার উপর তদন্ত করে একশ ধর্ম ব্যবসায়ীর একটি তালিকা তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দিয়েছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয় গঠিত মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন।
আজ বুধবার (১১ মে) দুপুর ১২ টায় দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লার হাতে এই শ্বেতপত্র ও একশ সন্দেহবাজন ধর্ম ব্যবসায়ীর ব্যক্তির তালিকা তুলে দেন গণকমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজসহ পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, আমরা নয় মাস তদন্ত করেছি। বহু ভুক্তভোগী সাক্ষ্য নিয়েছি। ২২ শ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন গত মার্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্র্রিকে দিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদেরকে জানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ধর্মান্ধ গোষ্ঠী দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছি। তারা মানি লন্ডারিং করেছে। জামাত ও ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে জঙ্গীবাদ ছড়াতে অর্থায়ন করা হচ্ছে। সেই দুর্নীতির তথ্য দিলাম। তাদেরকে বাড়তে দেওয়া যায় না।
সাবেক এই বিচারপতি বলেন, দুদক চেয়ারম্যান জানিয়েছে অর্ধশতাধিক ওয়াজ ব্যবসায়ীর দুর্নীতির খোঁজ শুরু করেছেন। আমাদের রিপোর্ট দুদক আইন মতে ব্যবস্থা নেবেন। যারা অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মামনুল হকসহ যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিলেটের ঝুলন দাস মামুনুল হকের মত ধর্ষণ মামলার আসামির বিরুদ্ধে কথা বলে আসামি হন। আমাদের শ্বেতপত্র দুদকের কাজে আসবে। ডিসি, এসপি টিওনোসহ যারা এই গোষ্ঠীদের উস্কানি দেয় তাদের নাম উল্লেখ করেছি। বিশেষ করে নোয়াখালীর এসপির বিরুদ্ধে বলেছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।
গনকমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, আমরা এক হাজার মাদ্রাসা ও ওয়াজকারীদের উপরর তদন্ত করেছি, শ্বেতপত্রে বিস্তারিত আছে। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ও হেফাজতের কর্মকান্ড উঠে এসেছে। তাদের অর্থনৈতিক জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে বলে আমরা প্রত্যাশা।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও গণকমিশনের সমন্বয়ক কাজী মুকুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনিমার্নে এই রিপোর্ট। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অপরাধগুলো আমলে নিতে এই রিপোর্টে বলা আছে। দুদকে আসার কারণ একটাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ চাই। তার জন্য যা যা করা দরকার আমরা তাই করবো। কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখেছি এখানে মৌলবাদী গোষ্ঠীর অর্থের একটা প্রেসার আছে, যেটা দ্বারা আমাদের তরুণরা ভিন্ন পথে পরিচালিত হচ্ছে। আমরা সব মৌলবাদি ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে কাজ করছি।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আসিফ মুনির তন্ময়, ব্যারিস্টার নাহিদা চৌধুরী, মো. সাইফউদ্দিন রুবেল প্রমুখ।
তালিাকায় যাদের নাম:
দুদকের কাছে দেওয়া ১১৬ ওয়ায়েজিন হুজুরের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তারা হলেন, ১. মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, ২. মাওলানা সাজিদুর রহমান, ৩. মুফতি রেজাউল করিম, ৪. মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম, ৫. মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী, ৬. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (বাশার), ৭. মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, ৮. মুফতি দিলওয়ার হোসাইন সাইফী, ৯. মাওলানা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী, ১০. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভূজপুরী, ১১. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, ১২. মাওলানা মুহিব খান, ১৩. মুফতি সাঈদ আহমদ কলরব, ১৪. মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, ১৫. মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, ১৬. মাওলানা আব্দুর রহিম বিপ্লবী, ১৭. মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, ১৮. মাওলানা বজলুর রশিদ, ১৯. মুফতি নাজিবুল্লাহ আফসারী, ২০. মাওলানা ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী, ২১. মুফতি নূর হোসেন নুরানী, ২২. মুফতি কাজী ইব্রাহিম, ২৩. মাওলানা গোলাম রাব্বানী, ২৪. মাওলানা মুজাফফর বিন মহসিন, ২৫. মাওলানা মোস্তফা মাহবুবুল আলম, ২৬. মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবি, ২৭. মাওলানা শায়েখ সিফাত হাসান, ২৮. মাওলানা মোহাম্মদ রাকিব ইবনে সিরাজ, ২৯. মাওলানা ফয়সাল আহমদ হেলাল, ৩০. মাওলানা মতিউর রহমান মাদানী, ৩১. মাওলানা মুজিবুর রহমান, ৩২. মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, ৩৩. মাওলানা হাফিজুর রহমান ছিদ্দীকী, ৩৪. মাওলানা আজিজুল ইসলাম জালালী, ৩৫. মাওলানা মেরাজুল হক কাসেমী, ৩৬. মুফতি মুহসিনুল করিম, ৩৭. মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, ৩৮. মাওলানা আবদুল খালেক সাহেব শরিয়তপুরী, ৩৯. মুফতি মাহমুদ উল্লাহ আতিকী, ৪০. মুফতি উসমান গণি মুছাপুরী, ৪১. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, ৪২. মুফতি শিহাবুদ্দীন, ৪৩. মুফতি মুসতাঈন বিল্লাহ আল-উসওয়ায়ী, ৪৪. মাওলানা আশরাফ আলী হরষপুরী, ৪৫. মাওলানা জাকারিয়া, ৪৬. মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী, ৪৭. মুফতি আনোয়ার হোসাইন চিশতী, ৪৮. মাওলানা আতিকুল্লাহ, ৪৯. মাওলানা বশির আহমদ, ৫০. মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী, ৫১. মাওলানা রিজওয়ান রফিকী, ৫২. মাওলানা আবরারুল হক হাতেমী, ৫৩. মাওলানা রাফি বিন মুনির, ৫৪. মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম জাবেরী, ৫৫. মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ আতিকী, ৫৬. মুফতি শেখ হামিদুর রহমান সাইফী, ৫৭. মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী, ৫৮. মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমী, ৫৯. মাওলানা কামাল উদ্দিন কাসেমী, ৬০. মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন নুরী, ৬১. মাওলানা মাজহারুল ইসলাম মাজহারী, ৬২. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফেরদাউস, ৬৩. মুফতি এহসানুল হক জিলানী, ৬৪. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জিহাদি, ৬৫. মুফতি আব্দুল হক, ৬৬. মুফতি শাহিদুর রহমান মাহমুদাবাদী, ৬৭. মাওলানা ইসমাঈল বুখারী, ৬৮. মাওলানা জয়নুল আবেদীন হাবিবী, ৬৯. মাওলানা ইউসুফ বিন এনাম, ৭০. মাওলানা শাববীর আহমদ উসমানী, ৭১. মুফতি জাহিদুল ইসলাম যায়েদ, ৭২. মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জামী, ৭৩. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ৭৪. মাওলানা ইসমাইল হোসাইন, ৭৫. মুফতি আব্দুর রহিম হেলালী, ৭৬. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, ৭৭. মাওলানা মুশাহিদ আহমদ উজিরপুরী, ৭৮. মাওলানা কাজিম উদ্দীন (অন্ধ হাফেজ), ৭৯. মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, ৮০. মুফতি হারুনুর রশিদ, ৮১. মাওলানা আবুল কাসেম, ৮২. মুফতি ওয়ালী উল্লাহ, ৮৩. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, ৮৪. মাওলানা জাকারিয়া নাটোর, ৮৫. মাওলানা আবুল হাসান (সাদী), ৮৬. মুফতি রুহুল আমিন নুরী, ৮৭. মুফতি মামুনুর রশিদ কামালী, ৮৮. মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ, ৮৯. মাওলানা ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী (নওমুসলিম), ৯০. মাওলানা শামসুল হক যশোরী (নওমুসলিম), ৯১. মুফতি হাবিবুর রহমান মিসবাহ, ৯২. মাওলানা মুফতি ওলিউল্লাহ, ৯৩. মাওলানা বেলাল হুসাইন ফারুকী, ৯৪. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, ৯৫. মাওলানা আমির হামজা, ৯৬. মাওলানা মিজানুর রহমান আযহারী, ৯৭. মাওলানা তারেক মনোয়ার, ৯৮. মাওলানা আব্দুল হালিম বোখারী, ৯৯. মাওলানা আতাউল্লাহ হাদেমী, ১০০. মাওলানা আফম খালিদ হোসেন, ১০১. মাওলানা মামুনুল হক, ১০২. মুজিবুর রহমান হামিদী, ১০৩. মাওলানা মুশতাকুন্নবী, ১০৪. মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, ১০৫. মাওলানা কুতুব উদ্দীন নানুপুরী, ১০৬. মাওলানা বেলাল উদ্দীন, ১০৭. মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, ১০৮. মাওলানা রুহুল আমিন যুক্তিবাদী, ১০৯. মাওলানা আবুল কালাম বয়ানী, ১১০. মাওলানা রফিকুল্লাহ আফসারী, ১১১. মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-আমিন, ১১২. মাওলানা মোয়াজ্জেম হোসাইন সাইফী, ১১৩. মাওলানা আলাউদ্দীন জিহাদি, ১১৪. মাওলানা আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া, ১১৫. জৈনপুরী সিলসিলার মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, ১১৬. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জৈনপুরী প্রমুখ।