ভোলার নৌ থানায় বসে জেলে আমির হত্যার পাঁচ লক্ষ টাকা রফাদফা
উপজেলা প্রতিনিধিঃ গত ১০ই এপ্রিল মেঘনা নদীতে ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জেলে আমির হত্যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ লক্ষ টাকা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ইলিশা নৌ থানার মধ্যে নৌ ওসি শাহজালাল এর উপস্থিতিতে লক্ষ্মীপুরের মজুচোধুরী ঘাটের নৌ ফাড়ির ইনচার্জ কামাল হোসেন ও নিহত আমিরের পরিবার এবং গুলিবিদ্ধ জেলেদের উপস্থিতিতে এই রফাদফা করা হয়।
নিহত ও আহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ঐ দিন রাতে মেঘনা নদীতে স্থানীয় মনির মাঝির ট্রলারে ১১ জনের একটি জেলেদল মাছ শিকারে গেলে হঠাৎ লক্ষ্মীপুরের মজুচোধুরী ঘাটের ফাঁড়ির এ এস আই জহিরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম জেলেদের উপর এলোপাতাড়ি গুলি করেন।
নৌ পুলিশের গুলিতে আমির হোসেন নামের এক জেলেসহ ৮/৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়।
নৌ পুলিশই আহতদেরসহ ১১ জন কে ফাঁড়িতে নিয়ে যায় পরে আমিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে প্রথমে লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল নেওয়া হলে সেখানে মৃত্যুবরণ করেন আমির ।
এদিকে গুলিবিদ্ধ অন্যদের চিকিৎসা ছাড়াই কারাগারে প্রেরণ করেন বলে জানান জেলেরা।
এই ঘটনায় নৌ পুলিশের প্রদীপ চরিত্রের অধিকারী জহির দীর্ঘ তদবির সুপারিশ করে মেঘনার লর্ড ও রাজাপুরের প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ভোলার নৌ ওসি শাহজালাল এর উপস্থিতিতে নৌ থানায় গতকাল ৫ লক্ষ টাকা রফাদফা করেন।
৫ লক্ষ টাকায় একটি তাজাপ্রাণের মূল্য নির্ধারণ করে দিলেন তারা ।
এদিকে মাত্র ৫ লক্ষ টাকা একটি জীবনের মূল্য নির্ধারণ আবার সেই নৌ পুলিশের সভাপতিত্বে সমাধানের খবর ছড়িয়ে পরলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাজাপুর ও ইলিশার জেলে মাঝিরা।
নিহত আমির হোসেন এর স্ত্রী বলেন, কি আর করার? একটি প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে আমি বিপাকে আছি, আজ ইলিশার মধ্যে নৌ থানায় জহির দারগা সমাধান করেছেন পাঁচ লাখ টাকা।
আপনি কি পেয়েছেন পুরো টাকা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি উত্তর দিতে চাইলেই আরেক জেলে সবুজের স্ত্রী তাকে কথা বলতে দেইনি ক্যামেরার সামনে।
অন্যদিকে রফাদফার টাকা নিয়েও নিহতদের পরিবার ও আহতদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলে ও জানান নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বে এক আহত জেলে।
এ বিষয়ে এ এস আই জহির সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা আমার ভাই, আসেন সবার সাথে চা খাই।
রফাদফার সময় সাংবাদিকরা নৌ থানায় গিয়ে ওসির শাহজালাল এর বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি বলেন, পরে কথা বলবো ভাই। পরে তার ব্যাবহৃত মুঠোফোনে কল করলে বলেন নেট সমস্যা করছে আসেন সাক্ষাতে কথা বলি।
তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ভোলার নৌ ওসি শাহজালাল মুঠোফোনে বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।