ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের ৪ কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

PicsArt_12-15-08.47.03.jpg

ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের ৪ কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সাগর চৌধুরীঃ রাজউকের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান করছিল দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক। অনুসন্ধানের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ওই ব্যক্তির জমি কেনাবেচার সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে চাঁদপুরের ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস ও রেকর্ডরুম সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠায় দুদকের অনুসন্ধানকারী দল। কিন্তু চাঁদপুরের ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস ও রেকর্ডরুমের সংশ্লিষ্টরা দুদককে মিথ্যা তথ্য দেয়। পরবর্তীতে অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেই জমি কেনাবেচার কথা স্বীকার করে। দুদকের কাজে বাঁধা, তথ্য গোপন ও আইন অমান্য করায় চাঁদপুরের ভূমি রেজিস্ট্রি ও রেকর্ডরুমের চার কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক। রবিবার (১৬ জানুয়ারি) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়- ঢাকা ১ এই মামলা দায়ের করা হয়।

আসামিরা হলেন- চাঁদপুর সদরের রেকর্ড রুমের কিপার মনিরুল আলম (৫৬), সহকারী রেকর্ড কিপার তপি রানী ঘোষ (৪৮), সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী রহিমা বেগম (৫২) ও মতলব সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নাছিমা আক্তার (৫১)। দুদকের সহকারী পরিচালক আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, দুদকের একটি অনুসন্ধানী দল রাজউকের সহকারী পরিচালক বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম সরকারের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। দুদকের নোটিশের বিপরীতে রফিকুল ইসলামের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক দেওয়ান সফিউদ্দিন আহমেদকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। অনুসন্ধানকালে রফিকুল ইসলাম সরকার, তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম, ছেলে ওমর ফারুক, কাওসার হামিদ, ফরহাদ আহম্মেদ ও মেয়ে রাবেয়া ইসলাম সুমাইয়ার নামে জমি ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকলে তার তথ্য সরবরাহ করার জন্য চাঁদপুরের জেলা রেজিস্ট্রারকে পত্র পাঠায়। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর চাঁদপুরের জেলা রেজিস্ট্রার উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের নামে তল্লাশি করে কোনও দলিল রেজিস্ট্রির তথ্য পাওয়া যায়নি বলে চিঠি দেয়।

দুদক সূত্র জানায়, পরবর্তীতে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে রফিকুল ইসলাম নিজেই ১২টি দলিলের তথ্য দেন যেসব চাঁদপুরের কচুয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি হয়েছে। পরে দুদকের পক্ষ থেকে দলিলের তথ্য থাকার পরও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য দায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, ঠিকানা সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। পরে জেলা রেজিস্ট্রার গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ১৪টি দলিলের সহিমুহরী নকল এবং দায়ী ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা পাঠায়।

দুদকের কর্মকর্তারা জানান, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশে ১৩টি দলিলের তথ্য জ্ঞাতসারে প্রদান না করে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান কার্যক্রমে বাধা প্রদান ও কমিশনের মিথ্যা তথ্য সরবরাহ এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাজা থেকে বাঁচানোর জন্য বা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারি কর্মচারী হয়েও আইনের নির্দেশ লঙ্ঘন করে ভুল বা মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ১৯(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ২১৭/২১৮ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top