দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা দেবো – শেখ হাসিনা।
প্রধানমনদেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার (১২ আগস্ট) সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি দেশের আপামর মানুষকেও শুভেচ্ছা জানান তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ ভোট দিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। সেজন্য দেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা আস্থা রেখেছেন, বিশ্বাস রেখেছেন, আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন বলেই তাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। তাদের আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা আমি দেবো। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষের জীবনমান উন্নত হচ্ছে, দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে, মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই লক্ষ্যেই তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
শোকাবহ ১৫ আগস্ট স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে যারা বেঁচে আছেন, তারাই শুধু বুঝতে পারবেন আমাদের মনের কষ্ট। জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে নিজেকে উৎসর্গ করেছি— বাংলার মানুষের ভাগ্য গড়ে তোলার জন্য।
বেলা ১১টার দিকে গণভবনে সমবেত দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষের সামনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল তার সঙ্গে ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতাকর্মী, বিচারক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব এবং সচিব মর্যাদার অন্যান্য বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতে উপস্থিত নেতাকর্মী, দেশবাসীসহ প্রবাসী বাঙালিদের প্রতি ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। আগস্ট মাস এলে কষ্ট ও ব্যথা নেমে আসে। এই কষ্ট-দুঃখ-বেদনা সবকিছু বুকে ধারণ করেও জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে উৎসর্গ করেছি নিজেকে, বাংলার মানুষের ভাগ্য গড়ে তোলার জন্য।
তিনি আরও বলেন, আমার সব সময় এই কথাই মনে হয়, বাংলাদেশের মানুষ একটু ভালো থাকলে আমার বাবা-মায়ের আত্মা শান্তি পাবে এবং যে স্বপ্নটা তিনি (বঙ্গবন্ধু) দেখেছিলেন— ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার, সেটুকু করে দেওয়াই আমার লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্য অর্জন করতে গিয়ে আমাদের অনেক নেতাকর্মী অত্যাচারিত হয়েছেন, জেল খেটেছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন, আহত হয়েছেন, অনেক পরিবার স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে বেঁচে আছে, তাদের সবাইকে আমি স্মরণ করছি।’
‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে’ প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের কাছে একটি মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশের মানুষ যেন সুন্দর জীবন পায়, বাংলাদেশের মানুষের জীবন যেন উন্নত হয়। বাংলাদেশকে আর কোনও দিনও যেন খাটো করে দেখতে না পারে, বাংলাদেশ যেন বিশ্বদরবারে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
ঈদের খুশি সবার ঘরে ঘরে আসুক প্রার্থনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত এই দিনে মানুষ মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণে যেকোনও ত্যাগ স্বীকারের জন্য আরও উৎসাহ পাবে এবং দেশ যেন আরও উন্নত হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাত্র কয়েকদিন আগে আমার চোখে অপারেশন হয়েছে। আসলে বয়স হয়ে গেছে, দেখতেও কম পাই। ছানির অপারেশন করতে হয়েছে। সেই ছানি অপারেশনের এখনও একমাস পূর্ণ হয়নি। এখনও ওষুধ নিতে হচ্ছে। আপনারা দোয়া করবেন, যেন বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করে যেতে পারি।’
এর আগে দলের সিনিয়র নেতারা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে বিচারপতি ও কূটনীতিকরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।