আদম ১১ – শাহানা সিরাজী

PicsArt_09-04-11.36.00.jpg

আদম ১১ শাহানা সিরাজী

এমন অঝোর বৃষ্টি !
প্রতিটি ফোটা মাটিকে কেবল রসালোই করে না অতি পরমানুক ক্ষয়ও যে করে! হাওয়া আঁচল পাতে-
ও বৃষ্টি তারে ছুঁয়ো না, ও রোদ তেজ কমাও –

আদম তখন লঙ্কান পাহাড়ে প্রথম পা রাখে। দ্বিতীয় পা কোথায় রাখবে ভাবার আগেই হাওয়ার বাতাসাঁচল এগিয়ে আসে।
আদম থিতু হয়।
হাওয়া আফ্রিকান জঙ্গলের গহীন আঁধারে পায়ের পাতা কেটে হাতের তালু ছিঁড়ে কপালে আঘাত পেয়ে পেয়ে পথ রচনা করে!

হে মহাপ্রভু, গন্ধম তো তোমারই স্বপ্নের ফসল
আমার কোথায় ভুল!
আদমের নিশ্চিত সুখ বহুজাতিক কোম্পানীর মোড়কে কেন পাঠিয়ে দিলে! তুমি তো জানো আদম আমি ছাড়া আর কিছু জানে না!
তুমি তো জানো আদম পুলিশ চিনে না
জেলখানা চিনে না
দপ্তর পরিদপ্তর কিছুই জানে না!
এই বেতবন কী ভাবে সে পার হবে?

ঈশ্বর মুচকি হাসে, হাওয়া জানে আদমের স্বভাব!
এবার হাওয়া কৌতুক করে, তুমি ‘কুন’ বললেই তো হয় ! এতো কেন ছল করো? ঈম্বর প্রমাদ গুণে ‘ এ অলৌকিক নারী , কী অসীম সাহসে লড়াই করছে! এক এক করে উপড়ে নিচ্ছে সব বাঁধা! কিন্তু আদম?

সে কী রাখবে মনে হাওয়ার জানবাজি সংগ্রাম ?
হাওয়ার উছলতায় ঈশ্বর মুগ্ধ।

আদম দেখে মসৃণ এক পথ তাকে হাতছানি দিচ্ছে
যে পথের শেষ প্রান্তে তার স্বপ্নের সিংহাসন!
আদম নীলগোলাপে তাকে অভিবাদন জানায়।
সল্জ্জ হাওয়া কুণ্ঠিত হয়ে বলে-
গন্ধমের ফসল আসতে শুরু করেছে।
মেঘের চাদর সরিয়ে উন্মুক্ত করে সাদাফুলের মেলা!

আদম তখন সিংহাসন নিয়ে ব্যস্ত!
মুজদালিফার আকাশ হাওয়ার মাথায় ছাতা হয়ে ঢেকে দেয় জলভরা চোখ
নীলগোলাপ আরো নীল হয়ে হাওয়ার গায়ে জড়িয়ে যায়।

আদম অবাক চোখে দেখে এতো নীল হওয়ার কী আছে!

সেখানেই জন্মের সূত্রপাত হয়
মরুর লু হাওয়া থমকে দাঁড়ায়

স্বগতম নবাগতা!

আদমের ব্যস্ততা কমে না
হাওয়ার রক্তাক্ত পায়ে ক্ষত ক্রমাগত বেড়ে যায়।
ঈশ্বর বিরক্ত হয়ে হাওয়াকে বর দেয়-

সিংহাসন যেমনই হোক
হাওয়াই সত্য

বিব্রত আদম প্রার্থনায় মগ্ন হয়, প্রভু হে ,ক্ষমা করো
যতোবার জনম দেবে কেবল হাওয়াকেই চাই
আর কিছু নয় …
ঈশ্বর পূণর্বার মুচকি হাসে- হাওয়া কতোটা বিশ্বাস করে!

শাহানা সিরাজী
কবি প্রবন্ধকার কথা সাহিত্যিক ও সরকারি কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top