ডিজিটাল ব্যবস্থায় ২৫ শতাংশ কেরবানির পশু বিক্রির প্রত্যাশা – শ ম রেজাউল করিম
বিশেষ রিপোর্টঃ চলতি বছরে মোট কেরবানির পশুর ২৫ শতাংশ ডিজিটাল ব্যবস্থায় বিপণনের লক্ষ্য রয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দেশব্যাপী ডিজিটাল কোরবানী পশুর হাট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে এই তিনি এই প্রত্যাশা করেন।
মন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে আমাদের জনসমাগম থেকে দূরে থাকেতে হবে। এজন্য ডিজিটাল ব্যবস্থাকে রপ্ত করতে হবে এবং সেটা কাজে লাগাতে হবে। সমগ্র বাংলাদেশ ডিজিটাল ব্যবস্থায় এগিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষও এখন ডিজিটাল ব্যবস্থায় যুক্ত হতে পারছে। এ বাস্তবতায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ডিজিটাল হাট সময়োপযোগী উদ্যোগ।
এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা মূল্যের ১ লক্ষ ৫৭ হাজার গবাদিপশু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিক্রয় হয়েছে। এটি খুবই আশাব্যঞ্জক বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে এটুআই এর ই-কমার্স প্রধান রেজোয়ানুল হক জামির দেওয়া তথ্যমতে এখনও পর্যন্ত ডিজিটাল হাটগুলোতে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিকে উদ্বৃতি করে প্রাণীসম্পদমন্ত্রী বলেন, হাটে না গিয়ে নিজেকে নিরাপদ রেখে ঘরে বসে কোরবানি পশু পাওয়ার এই সুবিধা আমরা পাচ্ছি কারণ বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানে কাজ করছে। আজ আমরা যদি ডিজিটালি সক্ষম না হতাম তাহলে এই হাটের মাধ্যমে মানুষকে আজ এতটা সুরক্ষা দেয়ার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়তো কঠিন হয়ে যেত।
দেশব্যাপী ডিজিটাল হাট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার এই কর্মযজ্ঞে বিভিন্ন বিভাগের সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিরা নিরলসভাবে কাজ করছে। কৃষক এবং খামারিরা খাদ্য ও পশু উৎপাদন করে দেশকে খাদ্য ও পশু উৎপাদনে স্বাবলম্বি করে তুলেছে। তিনি সংশ্লিষ্ঠ সকলকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরো বলেন দেশের ১৮৪৩ টি অনলাইন শপের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের ২৪১টি হাট একটি প্লাটফর্মে যুক্ত হয়েছে। এতে ই-ক্যাব ও একশপ সার্বিক সহযোগিতা করছে। তিনি ডিজিটাল হাটকে নিরাপদ সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব বলে অভিহিত করেন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী স্ক্রো সেবার মাধ্যমে একটি গরু ক্রয় করেন এবং এটি মানবসেবায় দান করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় ও সহযোগিতায় দেশ গবাদি পশুর ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। গত বছর আমাদের ১কোটি ১৮ লাখ কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল,কিন্তু করোনার কারণে বিক্রি হয়েছে ৯৪ লাখ পশু। চলতি বছর ১ কোটি ১৯ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এবছর ১৮৪৩টি অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে আমরা রেকডসংখ্যক পশু অনলাইনে বিক্রি করতে পারব।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ এবং এটুআই-এর প্রকল্প প্ররিচালক ড. মোঃ আব্দুল মান্নান। এটুআই এর যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন। ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার অনুষ্ঠানে ডিজিটাল হাটের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন, ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল ভিডিও উপস্থাপনের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন এবং এটুআই এর ই-কমার্স প্রধান রেজোয়ানুল হক জামি ডিজিটাল হাটের বিষয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী সকল জেলা-উপজেলার কোরবানির পশু ক্রেতা-বিক্রেতাদের একই প্ল্যাটফর্মে আনার লক্ষ্য নিয়ে দেশব্যাপী ডিজিটাল হাট চালু করা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও ই-ক্যাবের যৌথ উদ্যোগে এবং এটুআই এর কারিগরি সহায়তায় এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এর আওতায় www.digitalhaat.net প্ল্যাটফর্মে সারাদেশের ২৪১টি ডিজিটাল হাট যুক্ত করা হয়েছে। কলসেন্টার থেকে কল করে যেকোনো তথ্য জানতে ও অভিযোগ করতে এই নাম্বারে কল করতে পারবেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা 09614102030। ঈদের আগের দিন পশু ডেলিভারী দেয়ার শেষ তারিখ একই শহরে হলে বিক্রেতারা ঈদের আগেরদিন পর্যন্ত পশু বিক্রয় করতে পারবেন। একশপ এবং ফুড ফর ন্যাশন সহযোগিতা করছে।