বাংলাদেশ পুলিশের উজ্জ্বল নক্ষত্র – ডিআইজি হাবিবুর রহমান
এস এম রাজু আহমেদঃ বাংলাদেশ পুলিশের উজ্জ্বল নক্ষত্র ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। তিনি শুধু তার ব্যক্তিসত্তাকেই নয় বরং পুরো বাহিনীর অবয়বকে একটি গ্রহণযোগ্য অবয়বে সমুন্নত করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন সব সময়।
একজন পেশাদার ও সফল পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনে সাফল্যের স্বীকৃতি ছাড়াও মানুষের জন্য কাজ করা ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা ও অনবদ্য ভূমিকা তাকে দিয়েছে বিশেষ খ্যাতি। জনবান্ধব পুলিশের এক অনন্য পথিকৃৎ। জনমনে প্রশংসিত এক কিংবদন্তি।
ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমান পুলিশবাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন তার মানবিক মূল্যবোধ, প্রজ্ঞা ও সমাজকল্যাণকর উদ্যোগের মাধ্যমে। তার উদ্যোগ মানবকল্যাণে অনন্য দৃষ্টান্ত রেখেছে।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে গড়ে তুলেছেন উত্তরণ ফাউন্ডেশন। অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে পুলিশি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হাবিবুর রহমান তার মেধা, মনন ও আন্তরিকতা দিয়ে সমাজ বিশ্লেষণ করেছেন। অপরাধ সীমান্তে বসবাসরত অনগ্রসর বিশেষ মহলের অন্ধকার জীবনধারার সামনে সূচনা করেছেন আলোকিত পথ। তাদের করেছেন আলোর পথযাত্রী। নিজে হয়েছেন আলোকবর্তিকা।
কর্মজীবনে তার সফলতার পাল্লা অনেকটাই ভারী। হাবিবুর রহমান দুবার প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম) এবং তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদকে (বিপিএম) ভূষিত হন। গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা, সেবা, সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কর্মের জন্য তার সুনাম আকাশচুম্বী। কিন্তু তিনি নিজেকে কর্মের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন সাধারণের সেবায়।
ডিআইজি ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান স্বকীয় প্রচেষ্টায় পুলিশ সম্পর্কে সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে পাল্টে দিয়েছেন। প্রশংসিত করেছেন সমকালীন পুলিশের প্রবণতা ও উদ্যমকে। পুলিশের জনকল্যাণধর্মী ভূমিকার অন্যতম আইকন ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমান হয়ে উঠেছেন রোল মডেল।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ এই প্রবাদের সার্থকতাকে তিনি শতভাগ প্রতিপন্ন করেছেন তার পুলিশি ভূমিকায়। যে ভূমিকার গল্প কিংবদন্তি হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে। পুলিশ পারে, একথা উদাহরণস হ সত্য। সমাজ পরিবর্তনে, মানুষের কল্যাণে, মানবতার স্বার্থে পুলিশের কার্যকর ভূমিকায় ব্যতিক্রমধর্মী অবদান রেখে চলেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসছে তার অনন্য সাফল্যগাঁথা। যেসব এলাকায়, যে জনগোষ্ঠীর মধ্যে তিনি পরশপাথর হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে তিনি রোল মডেল হিসেবে পেয়েছেন জনমানুষের আকাশছোঁয়া ভালোবাসা।
জনপ্রিয়তা, খ্যাতি, আস্থায় ডিআইজি হাবিবুর রহমানের নাম ভূমিকা এখন পুলিশ বাহিনীরই গর্ব। যে সাফল্যের গল্প এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে পুলিশের সমকালীন জনবান্ধব নীতির উপাখ্যান। যেখানে পুলিশের উদ্যমী ও উদ্ভাবনী ভূমিকায় পশ্চাদপদ বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনধারা পাল্টে গেছে।
বেদেপল্লিতে লেগেছে দিনবদলের ছোঁয়া। প্রমাণ হয়েছে, পুলিশ চাইলে বদলে দিতে পারে উন্নয়নবঞ্চিত, অবহেলিত সমাজ বাস্তবতা। শুধু তাই নয়, অনগ্রসর সমাজের নারী উন্নয়নে তাদের আত্মবিশ্বাস বিকাশে, কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলার মতো মানবকল্যাণবাদী ভূমিকাকে পুলিশ কাজ করে দেখিয়েছে সমাজ পরিবর্তনেও পুলিশের অবদান অনুসরণীয়। বিশেষ করে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জীবনবোধ ও জীবনমানের উন্নয়নে পুলিশ যে দৃষ্টান্ত রেখেছে তা পথিকৃতের।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে যে সাফল্যধারার সূচনা করেছেন তা এক মাইলফলক হিসেবে মূল্যায়িত হচ্ছে। যার সূত্রপাত হয়েছিল কয়েক বছর আগে। যখন তিনি ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) এবং তারপর পুলিশ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে কর্মরত থাকার সময়।
গোপালগঞ্জের চন্দ্রদীঘলিয়া গ্রামের মানুষ, কৃতী সন্তান হাবিবুর রহমান। বাবার নাম আব্দুল আলী। মুক্তিযুদ্ধের সুমহান চেতনার অনুসারী। ১৯৯৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ১৭তম বিসিএস ক্যাডার হিসেবে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে যোগদান করেন। ২০০০ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগ দেন। ২০০১ সালে পদায়ন হন আরএমপিতে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে।
জাতিসংঘ শান্তিমিশন শেষে ২০০৯ সালে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার এবং ২০১১ সালে ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) হন হাবিবুর রহমান। পরবর্তীতে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দেন অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়ে। সবশেষ বর্তমানে রয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে। ডিআইজি হাবিবুর রহমানের একক প্রচেষ্টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর’।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দায়বদ্ধতা থেকেই তার এই উদ্যোগ। যা এক ঐতিহাসিক স্থাপনা। আলোকিত এ পুলিশ কর্মকর্তার চিন্তা-চেতনায় রয়েছে তার পিতার প্রভাব। যিনি তাকে মানুষ নিয়ে ভাবতে শিখিয়েছিলেন। বলেছিলেন- সব মানুষকে সমানভাবে দেখতে হবে, তাহলেই মানুষে মানুষে ভেদাভেদ কমে যাবে। বাবার শিক্ষার প্রতিফলন হিসেবে তার কাছে গুরুত্ব পেয়েছে বেদে সম্প্রদায়, হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বা দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। যাদের নিয়ে তিনি কাজ করেছেন স্বীয় পেশাগত বলয় থেকেও। যে কাজ সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে এবং সমাজে সাড়া জাগিয়েছে। যার দৃষ্টান্ত হয়ে আছে রাজধানীতে, সাভারে, রাজারবাগে বা আশুলিয়ায়। একইসঙ্গে বেদে সম্প্রদায় ও হিজড়াদের মধ্যেও।