নিবন্ধনে কর কমানোর জন্য একাধিক বৈঠক করেছি – ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার
সাগর চৌধুরীঃ সরকারের আয়কর আইন ২০২৩-এর আওতায় ‘উৎসে কর বিধিমালা’ অনুসারে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরসহ দেশের সকল এলাকার সম্পত্তি নিবন্ধন কর দ্বিগুণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের যে কোনো এলাকায় স্থাবর সম্পত্তি বা জমি ও ফ্ল্যাট হস্তান্তর হোক না কেন মালিকানা অর্জন করতে দ্বিগুণ কর গুনতে হবে। অর্থাৎ যে এলাকায় রেজিষ্ট্রেশনে ১, ৩ ও ৪ শতাংশ কর ছিল তা বৃদ্ধি করে ২, ৬ ও ৮ শতাংশ করা হয়েছে।
হিসাব কষে দেখা যায়, নিবন্ধন কর হিসেবে সবচেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে রাজধানীর গুলশান, বনানী, মতিঝিল, দিলকুশা, নর্থ সাউথ রোড, মতিঝিল সম্প্রসারিত এলাকা ও মহাখালী এলাকার স্থাবর সম্পত্তির মালিকদের।
কেননা এসব এলাকায় সম্পত্তি কিনলে ক্রেতাকে জমি, ফ্ল্যাট বা যে কোনো স্থাপনা নিবন্ধনের জন্য কাঠা প্রতি ৮ শতাংশ বা ২০ লাখ টাকার মধ্যে যেটি সর্বোচ্চ সেটা গুনতে হবে। যা সম্পত্তি কর হিসেবে সর্বোচ্চ।
এছাড়াও পাঁচ বছরে মধ্যে জমি বা ফ্ল্যাট ক্রয় করে বিক্রি করলে উৎসে কর ও মূলধন কর মিলিয়ে সর্বোচ্চ ২৬৫ শতাংশ হতে পারে। আর পাঁচ বছরে আগের ক্রয়কৃত জমি বা ফ্ল্যাটে উৎসে করের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ গেইন কর দিতে হবে।
কর কমানো বিষয়ে প্রশ্ন করলে -“আমরা ইতোমধ্যে আগারগাঁও এনবিআর এর হেড অফিসে দুই দফা সভা করেছি। সভায় আমাদের এই বিষগুলো নিয়ে কথা বলেছি। এনবিআর আমাদের কথাগুলো শুনেছে, বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে আমাদের মতামত জানাবে।” কথাগুলো বলছিলেন, ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার ও বাংলাদেশ রেজিষ্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশন এর সভাপতি অহিদুল ইসলাম।
কোন কোন বিষয় সম্পর্কে এনবিআর এর হেড অফিসে আপনারা বলেছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,
মৌজা সুনির্দিষ্ট করাঃ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মৌজা সুনির্দিষ্ট করে দিতে। যেমন সায়দাবাদ, গুলশান, বাড্ডা সহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন মৌজা সঠিক ভাবে উল্লেখ নেই। ফলে সাবরেজিস্টারা বিপাকে পড়েন। কারণ নতুন কর নির্ধারনে সাধারন মানুষ নিবন্ধন করতে এলে মৌজা উল্লেখ না থাকার ফলে ধোঁয়াশায় পড়েন।
রির্টান সহজিকরণ করাঃ প্রবাসী বা বিদেশে যেসব বাংলাদেশী কাজ করেন, তাদের রির্টান সহজিকরণ করা। কারণ অধিকাংশ প্রবাসীদের এনআইডি করা নেই। তাদের টিন নাম্বার অধিকাংশই নেই। যা নিবন্ধন করতে আসা প্রবাসীরা চরম বিব্রত হন।
টেক্স সরলি করন করাঃ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্ন ভিন্ন টেক্স নির্ধারন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি সারাদেশে একই টেক্স সরলি করন করা হয়, তাহলে নিবন্ধন করতে আসা সাধারন জনগণের মধ্যে টেক্স নিয়ে ভ্রান্তধারণা থাকবে না।
আমাদের কাছে থাকা পরিসংখ্যানঃ সারাদেশে নিবন্ধন কর বাড়ানো হয়েছে। নিবন্ধন করতে আসা সাধারন মানুষ অতিরিক্ত করের জন্য জমি,ফ্লাট নিবন্ধন করতে পারছে না। ফলাফল সরকারের রাজস্ব কমে যাওয়া।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরের জুলাই মাসে ঢাকার ১৭ সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে মাত্র ৩২ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়। যেখানে একই সময়ে গত বছর এসেছিল ১০১ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে এ বছরের জুলাইয়ে জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন বাবদ ৬৯ কোটি টাকা কম কর আদায় হয়েছে।
গত বছরের চেয়ে এবার এই খাতে কর কম জমা হয়েছে।