এসপি মাসুদ, প্রদীপসহ ১০ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
অপরাধ প্রতিবেদকঃ পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ দশ জনের ২৬ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়েছে। এ ঘটনায় কক্সবাজারের সাবেক এসপি এবিএম মাসুদ হোসেনসহ ১০ জনের সকল ব্যাংক হিসাব অর্নিদিষ্টকালের জন্য অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।
নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব খুলে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন করেছেন এমন তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইউ) এর নজরে এলে মানিলন্ডরিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ ও মানিলন্ডরিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ এর আলোকে তাদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। যার মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ২২ মে পর্যন্ত।
এদিকে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পূর্বে ওই ব্যক্তিদের অভিযোগ নিস্পত্তি না হলে সম্পত্তি হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিবে। এ লক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশন এর অনুসন্ধানী কর্মকর্তা উপ-পরিচালক জামাল উদ্দিন আহাম্মদ ব্যাংক হিসাবগুলো থেকে অর্থ হস্তান্তর কিংবা উত্তোলন বন্ধের জন্য আদালতে আবেদন করেন।
শুনানী শেষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের জজ কে এম ইমরুল কায়েশ দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪, মানিলন্ডরিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ এর আলোকে ব্যাংক হিসাবসমূহ অবরুদ্ধের (ফ্রিজ) আদেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, এখন পর্যন্ত আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। মামলার অনুসন্ধানী কর্মকর্তা উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
আদালতের আদেশে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যাংকসমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালকগণকে আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।
এসপি এবিএম মাসুদ ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ মোট ১০ জনের নামে ২৬টি ব্যাংক হিসাব পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি ব্যাংক হিসবা ছিল এসপি মাসুদ, মোস্তফা কামাল ও আশরাফুল ইসলামে সম্মিলিত হিসাব। তাদের হিসাবে সর্বশেষ স্থিতি পাওয়া যায় ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যার মধ্যে প্রদীপ কুমার দাশের এক্সিম ব্যাংক চট্টগ্রাম জুবলী শাখায় ৩০,৪৪,৫৫২ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক কাওরান বাজার শাখায় ৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ওয়েজ আরনার্স বন্ডে ১২ লাখ টাকা রয়েছে।
ব্যাংক হিসাব কবে নাগাত (ফ্রিজ) থেকে অব্যাহতি পেতে পারে এমন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত আদালত তাদের ব্যাংক হিসাব (ফ্রিজ) করেছেন। অধিকাংশ সময় দেখা যায় এ হিসেবের টাকা সরকারি ফান্ডেই চলে যায়।
এবিএম মাসুদ হোসেনের ডাচ বাংলা ব্যাংকের বরিশাল শাখায় ১৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা, ট্রাস্ট ব্যাংকের বরিশাল শাখায় ২৬ হাজার টাকা ও ইসলামী ব্যাংকের মৌচাক শাখায় ১৫ হাজার টাকা ও সিটি ব্যাংক ও এনসিসি ব্যাংকে ক্রেডিট লিমিটে ৪ লাখ টাকা রয়েছে। এছাড়া এবিএম মাসুদ, মোস্তফা কামাল ও আশরাফুল আলম নামে সম্মিলিত হিসেবে ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা রয়েছে।
একই মামলার আসামি মো. লিয়াকত আলীর ডাচ বাংলা ব্যাংকের ও আর নিজাম রোড শাখায় ৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা রয়েছে। এছাড়া চুমকি কারণ, দিলীপ দাশ, জেনিফার রেবেকা, মো. আবরার যারিফ ও মো. জাওয়াদ রাফিদ এর ব্যাংক হিসেবে বিভিন্ন অংকের টাকা রয়েছে।