তেজগাঁও রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্স
সাবেক সাব রেজিস্ট্রারকেও ঘুষের
বিনিময়ে জমি রেজেষ্ট্রি করতে হলো
বিশেষ প্রতিনিধিঃ ধানমণ্ডি সাব রেজিস্ট্রি অফিস, রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে ঘুষ বাণিজ্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। কাক কাকের মাংস না খেলেও এখানে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী তা করতে মোটেও দ্বিধা করছেন না। জমি রেজিস্ট্রি ও নকল পেতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে একটি চক্র। প্রকাশ্যে তারা এসব অপকর্ম করছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি একজন সাবেক সাব রেজিস্ট্রার ধানমÐি সাব রেজিস্ট্রি অফিস, রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে দলিল রেজিস্ট্রি করতে এসে ঘুষ বাণিজ্য চক্রের ফাঁদে পড়েন। নিজের পরিচয় দেওয়ার পরও তার কাছ থেকে চক্রটি ৬০ হাজার টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করে।
ভুক্তভোগী সাবেক ওই সাব রেজিস্ট্রার বিষয়টি আইজিআরের কাছে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক দায়ী কর্মচারীদের বদলি করে দেন। তারা হলো : ওমেদার রানা ও সাদ্দাম। একই কারণে বদলি করা হয় এক মহিলা অফিস সহকারীকে। কিন্তু ৬০ হাজার টাকা ফেরত পাননি নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সাবেক সাব রেজিস্ট্রার।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে ঘুষ ছাড়া দলিল রেজিস্ট্রি হয় না। একইভাবে নকল পেতে সরকার নির্ধারিত অর্থের কয়েকগুণ আদায় করে চক্রটি। মূল দলিল বুঝে পেতেও নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হয়। ৬০ হাজার টাকা নেওয়া চক্রের কয়েকজনকে বদলি করা হলেও রেজিস্ট্রি ঘুষ বাণিজ্য মোটেও থামেনি। বরং দেদার চলছেই। ফলে হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।
আসাদুজ্জামান নামের এক সেবা গ্রহণকারী এ প্রতিবেদককে জানান, তেজগাঁও রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সের ইট-পাথরও পারলে টাকা নেয়। টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না।
সরকার ইতিমধ্যে জমি রেজিস্টেশন ও জমি সম্পর্কিত সব দলিলপত্র তৈরি করতে পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি চালু করেছে। কোনো রকমের হয়রানি বা অবৈধ পন্থা অবলম্বন ছাড়াই ঘরে বসে জমি রেজিস্ট্রি করা সম্ভব। কিন্তু এ পদ্ধতি এখনো সর্বত্র চালু হয়নি। এ পদ্ধতি যাতে বাস্তবায়ন হতে না পারে, সে জন্য ঘুষ বাণিজ্যের কারবারিরা নানাভাবে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেবাদানে ডিজিটাল পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু বাংলাদেশে ঘুষ বাণিজ্যের কালচার যারা চালু রেখেছে, তারা এ সিস্টেমকে ব্যর্থ করে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে বলে আইটি বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ। দেশপ্রেমিক সচেতন জনগণ মনে করে, ঘূণে ধরা মান্ধাতার আমলের পুরোনো ভূমি রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতি সর্বত্র বাস্তবায়ন জরুরি।