সাবেক পুলিশ সুপার বাবুলের দুই সন্তান কোথায়?
অপরাধ প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামে নৃশংসভাবে খুন হওয়া মাহমুদা খানম মিতু ও তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দুই সন্তান বর্তমানে কুমিল্লায় বাবুলের দ্বিতীয় স্ত্রী মুক্তার হেফাজতে রয়েছে।
সাত মাস আগে বাবুল পারিবারিকভাবে মুক্তাকে বিয়ে করেন। এরপর ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহির ও মেয়ে তাবাসসুম তাজনীন টাপুরকে নিয়ে এক সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন বাবুল ও মুক্তা।
গত ১২ মে মিতু হত্যায় নতুন মামলা দায়েরের পর বাবুল গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলে তার দুই সন্তানকে নিয়ে কুমিল্লায় পৈতৃক বাড়িতে চলে যান মুক্তা। এরপর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন। এসব তথ্য জানান বাবুল আক্তারের ছোট ভাই মো. হাবিবুর রহমান।
মিতু হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসেবে বাবুলের দুই সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুঁজছিল তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এদের মধ্যে মাহির তার মায়ের হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী। কিন্তু তাদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ বিষয়ে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার ঐ সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল আক্তার তার বাসার ভুল ঠিকানা দিয়েছিলেন। পরে তিনি সঠিক ঠিকানা দিলেও সেখানে তার সন্তানদের পাওয়া যায়নি।
বাবুলের সন্তানদের হাজির করতে গত রবিবার আদালতের শরণাপন্ন হন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা। আবেদন আমলে নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে বাবুলের দুই সন্তানকে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হাজিরের নির্দেশ দেয় আদালত।
এ বিষয়ে বাবুল আক্তারের ভাই অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান বলেন, পুলিশ বলেছিল সুবিধাজনক সময়ে বাবুলের ছেলেমেয়েদের তাদের কাছে হাজির করতে। আমরা এতদিন সময় পাইনি বলে নিয়ে যেতে পারিনি। কপি হাতে পাওয়ার পর আমরা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই আদালতের আদেশ প্রতিপালন করব। বাবুলের ছেলেমেয়ে কোথায় আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা কুমিল্লায় বাবুলের স্ত্রী মুক্তার সঙ্গে আছে। তবে তারা কুমিল্লার কোথায় থাকে তা আমি জানি না।
এদিকে, বাবুলের অনুপস্থিতিতে তার দুই সন্তান মাহির ও টাপুরের অভিভাবক কে হবেন তা নিয়ে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন শিশু দুটির দাদা ও নানা। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে ঢাকা ও মাগুরার আদালতে দুটি মামলা হয়েছে। বাবুলের ভাই হাবিবুর রহমান বলেন, বাবুলের ছেলেমেয়ে তাদের নানা-নানির কাছে যেতে চায় না। আমার বাবা আবদুল ওয়াদুদ মিয়া ১৭ মে মাগুরা সদর সহকারী জজ আদালতে অভিভাবকত্ব ও প্রতিপাল্য আইনে মামলা করেছেন।
এর দুই দিন পর বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। এতে তিনি মাহির ও টাপুরকে উদ্ধার করে আদালতে হাজির করার এবং আদালতের মাধ্যমে শিশু দুটির অভিভাবকত্ব নির্ধারণের আবেদন করেন। বাবুলের পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে মোশাররফ হোসেন বলেন, বাবুলের পিতা কীভাবে মাহির ও টাপুরকে তাদের কাছে পেয়েছে সেটা এক বড় প্রশ্ন।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওআর নিজাম রোড আবাসিক এলাকার প্রবেশমুখে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে খুন হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।