চরফ্যাশনে তিন শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহিদ মিনার
চরফ্যাশন প্রতিনিধিঃ ভোলার চরফ্যাসনে ৩৩০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার। প্রতি বছর কলাগাছ, বাঁশের কঞ্চি ও সাদা কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মান করে ওই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ২১শে ফেব্রুয়ারী মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস পালন করে আসছে।
এতে করে শিক্ষার্থীরা জানতে পারছে না ভাষার সঠিক তাৎপর্য, জানাতে পারছেনা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা। ৩দিন পর ২১ ফেব্রুয়ারি।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। এদিন দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবে।
আবার অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের অভাবে উপজেলায় পালন করে কিন্তু বিচ্ছিন্ন ও দূরের অনেক প্রতিষ্ঠানে এই দিবস পালন করা হয়না।
উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২১৩টি, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭৭টি, কলেজ রয়েছে ১২টি, মাদ্রাসা রয়েছে ৬৮টি। এর মধ্যে চরফ্যাসন টিবি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরফ্যাসন সরকারি ডিগ্রী কলেজ, দুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরফ্যাসন সরকারী অনার্স কলেজ,বেগম রহিমা ইসলাম ডিগ্রি অনার্স কলেজ, চরফ্যাসন মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আনজুর হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ আরো ১৫টি প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার রয়েছে।
অন্য ৩৩১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারী আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে বিপাকে পরতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
দুলারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ,মীম,সুমা,ফরহাদ। পশ্চিম নুরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী,আয়শা,সিয়াম,৫ম শ্রেণীর , রুবিনা, সাথী জানান, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার নেই। আমরা সবাই মিললা প্রতি বছর কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানাইয়া শ্রদ্ধা জানাই। আমরা চাই সরকার প্রতিটি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মান করে দেয়।
একইভাবে নুরাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হুমায়ুন,ফরিদ,সোনিয়া ও শিরিনা। দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বিথী,লিয়া ও সাজেদা। দুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী হেনা বেগম, নাহিদা আক্তার, নয়ন, শাকিল,ও রুবেল সহ অনেকে।
চরফ্যাসন টিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ তানবীর হোসেন জানান, চরফ্যাসনে ১৫/২০টি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকী সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। তাই ভবিষ্যৎ প্রজম্ম ভাষা শহীদের ইতিহাস ও সম্মান জানাতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান দরকার।
সরকারের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবনের সাথে শহীদ মিনার নির্মানের জোর দাবী জানান।
একইভাবে দাবী করেন দুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন জানান, উপজেলার ১৩৯টি মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ২০ টিতে। এই ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তৃষিত কুমার জানান, ২১৩ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার রয়েছে মাত্র ১টি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.রুহুল আমীন জানান, এই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সাথে আলাপ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।