চূর্ণ কবিতা – জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ বালখি রুমি

চূর্ণ কবিতা – জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ বালখি রুমি

১।
জীবন হারায় যদি নবরূপ পাবে,
ঈশ্বর দেবেন সব অবারিত-হাতে।
তাঁর দান চিরন্তন হারালেও পাবে,
সে-জীবন বাঁধা আছে মৃত্যুরই হাতে

২।
অমরার ঝরনা বহে ঈশ্বরের বুকে
প্রণয়গভীরে তুমি তার দেখা পাবে।
সাগরের ঢেউ ভাঙে প্রেমরূপ সুখে,
অতলে বিলীন হবে অমরায় যাবে।

৩।
ভাবি সেই ঠোঁটদুটি, আবেশে-আবেগে,
লাল-চুনিদ্বয়ে রাখি চুমুটি গোপনে।
দংশন নয় কভু, আঘাত না-লাগে।
ঠোঁটদুটি মেশে ঠোঁটে আজ মনে-মনে।

৪।
তোমার আকাশ নয় বহু-প্রসারিত
ছড়ানো দু-হাতে পেয়ে যাই তাকে
কেন-বা তাকে করব নখরাহত
ধুলোয় গড়াব, আর হারাব নিজেকে!

৫।
বিশ্বকে সে জ্বালাল যেন-বা অগ্নিদীপ,
তারপর আমাকে ফেলল সেই আগুনেই।
পূত-আগুনের লকলকে শত-শত জিভ
নাচল আমাকে ঘিরে ফেলে চারিদিকেই।

৬।
তারপর আমাকে বাঁধল বহ্নিশিখা,
গিলল আমার যথাসর্বস্বই, আর
আমার আর্তনাদও তাঁরই বিধিলিখা,
সমিধের ’পরে রাখলেন করপুট তাঁর।

৭।
তাঁর সব পথ আমি ভ্রমেছি,
তাঁর সাধ চরিতার্থ করি।
তাঁর সব সদুত্তর জেনেছি,
যেন এক সুতীক্ষ্ণ তরবারি।

৮।
দ্যাখো, তাঁর আঙুলগুলি থেকে
কীভাবে রক্তফোঁটা গড়ায় মাটিতে
কেন সে রক্তের শুভকাল দ্যাখে,
আমার বদরক্ত শুদ্ধ করে দিতে!

৯।
আমি তো খুঁজেছি প্রাণ সাগরের নীচে,
পেয়েছি প্রবাল এক জলের গভীরে।
কেবল অঢেল ফেনা সামনে ও পিছে,
গভীর সাগর যেন শূন্যতার তীরে।

১০।
আমার হৃদয়রাতে আঁধার জমেছে,
পথরেখা ক্ষীণ অতি, চলেছি অধীরে।
চলেছি অন্ধের মতো পথটি দেখেছে,
পথশেষে আলোরেখা দিবসের নীড়ে।

এই কবিতাটি ইংরেজি থেকে অনুবাধ করেছেন
গৌতম ঘোষদস্তিদার। তিনি ভারতের নাগরিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top