‘ফর্সা করার’ ক্রিমের বিজ্ঞাপন দিলে ৫ বছরের জেল, ৫০ লাখ জরিমানা
আন্তর্জাতিক প্রতিবেদকঃ এই ক্রিম মাখলে এত সপ্তাহের মধ্যে আপনি ফর্সা হতে পারবেন। এই ক্রিমে রোধ করতে পারবেন বার্ধক্য। অথবা এই ওষুধ খেলে বেড়ে যাবে আপনার যৌন ক্ষমতা। এমন অতিরঞ্জিত বুলিতে কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার বা প্রকাশ হলে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ রুপি জরিমানা করার আইন হচ্ছে ভারতে।
দেশটির স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এ ধরনের কথিত ‘জাদুকরি পণ্যে’র বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে (আপত্তিজনক বিজ্ঞাপন আইন, ১৯৫৪) একটি খসড়া সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সেখানকার সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।
ওই খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এখন প্রচারমাধ্যমে এমনসব বিজ্ঞাপন নজরে আসে- যেখানে ‘জাদুকরি’ ওষুধে যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলা হয়, প্রসাধনী মাখলে ত্বক ফর্সা হবে দাবি করা হয়। নারীদের বন্ধ্যাত্ব ঘোচানো, অকালে বার্ধক্য ঠেকানো, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর কথাও বলা হয় কিছু পণ্যের বিজ্ঞাপনে। আদতে এ ধরনের ওষুধ বা প্রসাধনীর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কিন্তু চিত্তাকর্ষক এসব বিজ্ঞাপন দেখে ফাঁদে পড়েন সাধারণ মানুষ। সেসব পণ্য কিনে তারা শিকার হন প্রতারণার। তাই এমন অতিরঞ্জিত বুলির বিজ্ঞাপন দেখালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ওষুধ-প্রসাধনী বা এ জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপনে ৭৮টি তালিকাভুক্ত রোগ-ব্যাধির নাম যেন না থাকে।
বিদ্যমান আইনে এমন অতিরঞ্জিত বুলির বিজ্ঞাপন প্রচার করলে জরিমানাসহ ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান আছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় মনে করছে, এমন লঘুশাস্তি এ ধরনের বাড়াবাড়ি ঠেকাতে পারছে না।
তাই প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে, যৌন ক্ষমতা বর্ধক ওষুধ, ফর্সা করার ক্রিম, বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোর ওষুধ, এইডসসহ এ জাতীয় রোগের ওষুধের বিজ্ঞাপনে বাড়াবাড়ি বন্ধ না করলে কঠিন পদক্ষেপ নেয়া হবে। এসব বিজ্ঞাপনে কোনো তারকার অংশগ্রহণ থাকলে তাকেও সেই শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
খসড়া অনুসারে, প্রথমবার এ ধরনের অপরাধ করলে ১০ লাখ রুপি জরিমানা কিংবা দুবছরের কারাদণ্ড, অথবা উভয়দণ্ড হতে পারে। তবে ফের এই বাড়াবাড়ি করলে কারাদণ্ড হতে পারে পাঁচ বছর পর্যন্ত, অর্থদণ্ড হতে পারে ৫০ লাখ রুপি পর্যন্ত।
এই খসড়া প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ভারতের অনেক ভোক্তা অধিকার সংগঠন। তারা বলছে, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজার ধরতে বিজ্ঞাপন প্রচারে যে রঙচঙ মাখায়, তা বন্ধ হলে ক্রেতা ঠকানোর প্রতিযোগিতাও কমতে পারে।