কেন লাইসেন্স বাতিল হবে না জানতে চেয়ে চিঠি গ্রামীণফোন ও রবি মোবাইল অপারেটরদের
লাইসেন্স বাতিল কেন করা হবে না সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর চিঠি পেল গ্রামীণফোন ও রবি। আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অপারেটর দুটিকে টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স বাতিলের চিঠি পাঠায় টেলিযোযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
পাওনা টাকা আদায়ের জন্য ব্যান্ডউইথ সীমিতকরণ ও এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বন্ধ করার পরে অপারেটর দুটিকে লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে এ চিঠি পাঠালো বিটিআরসি।
গত এপ্রিল মাসে প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বকেয়া দাবি করে গ্রামীণফোনকে এবং ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা দাবি করে রবিকে নোটিশ পাঠায় বিটিআরসি। টাকা পরিশোধের জন্য অপারেটর দুটিকে দুই সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়। বিটিআরসি থেকে তখন বলা হয়— গ্রামীণফোন ও রবির সর্বশেষ অডিটের পরে এই ডিমান্ড লেটার পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করায় বিটিআরসির কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ৪ জুলাই অপারেটর দুটির ব্যান্ডউইথ সীমিত করে দেওয়া হয়। এরপর এই আদেশ প্রত্যাহার করে এনওসি দেওয়া বন্ধ করা হয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া উইং) জাকির হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর ৪৬(২) ধারা মোতাবেক মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির ২জি ও ৩জি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শানোর জন্য আজ এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ উল্লেখিত দুই অপারেটর অনুকূলে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিটিআরসির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, অপারেটর দুটি এরই মধ্যে টাকা পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে থেকে কোনও ইতিবাচক সাড়া পায়নি। আরও জানা গেছে, গ্রামীণফোন বিটিআরসিতে যোগাযোগ করে টাকা দিতে চায় বলে জানালেও ‘পরিমাণ’ উল্লেখ না করায় তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও গ্রামীণফোন এক বিবৃতিতে বলেছে, বিটিআরসির ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা আজ (৫ সেপ্টম্বর) সংস্থার চেয়াম্যানের সঙ্গে দেখা করি যেখানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই বিতর্কিত অডিট নিয়ে একটি গঠনমূলক সমাধানের উপায় বের করার আহ্বান জানাই।
অন্যদিকে, রবি ১২ কোটি টাকা দিতে চায় জানালেও তা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। জানা গেছে, রবি যে পরিমাণ টাকা দিতে সম্মত হয়েছে তা মোট পাওনার ১০ শতাংশের কম।
বিটিআরসির চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে দুটি অপারেটরই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। গ্রামীণফোন থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিটিআরসির নোটিশটি অযৌক্তিক এবং একই সঙ্গে একটি বিতর্কিত অডিট দাবির বিষয়ে আমাদের গঠনমূলক সমাধান প্রস্তাবের বিপরীতে তাদের অনীহার আরেকটি বহিঃপ্রকাশ।
নোটিশটি পর্যালোচনা করার পরেই গ্রামীণফোন উত্তর দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের প্রতিষ্ঠান, শেয়ারহোল্ডার ও সম্মানীত গ্রাহকদের অধিকার রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার অন্যায্য যেকোনও পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
অন্যদিকে লাইসেন্স বাতিলের কারণ দর্শানোর নোটিশ টেলিযোগাযোগ খাতে বিনিয়োগকারীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া এবং গ্রাহকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করবে। যথাসময়ে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেব ।