শুভকামনা এসপি মোকতার হোসেন পিপিএম; স্বাগতম নবাগত ভোলার পুলিশ সুপার; সরকার মোঃ কায়সার।

PicsArt_06-20-09.21.02.jpg

শুভকামনা এসপি মোকতার হোসেন পিপিএম; স্বাগতম নবাগত ভোলার পুলিশ সুপার; সরকার মোঃ কায়সার।

সাগর চৌধুরীঃ আজ ২০ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোলা জেলার পুলিশ লাইন ড্রিলসিটে, ভোলা জেলার বিদায়ী পুলিশ সুপার মোকতার হোসেনকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানায় ভোলা জেলা পুলিশ এবং সেই সাথে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরন করে নেওয়া হয়, নবাগত ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোঃ কায়সার কে।

এ যেন পেশাগত দায়িত্বশীলতার পরেও বাংলাদেশ পুলিশের চিরন্তন রীতি’র এক নান্দনিক বহিঃপ্রকাশ। বাংলাদেশ পুলিশের অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো ভোলা জেলার সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার, মোঃ মুক্তার হোসেন এবং ভোলা জেলার নবাগত পুলিশ সুপার, সরকার মোঃ কায়সার।

আপনাদের এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ ও নান্দনিক আনুষ্ঠানিকতা বাংলাদেশ সরকারের অন্য অন্য ডিপার্টমেন্ট সহ দেশের সকল অাইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যা সকল ক্ষেত্রে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য এক বিরল সুখানুভূতি এবং সেই সঙ্গে আনন্দেরও।

সরকারি চাকরিজীবীদের সরকারি বিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর বদলি করা হয়। সঠিক সময়ে সহকর্মীদের সাথে শেষ বিদায় নেয়ারও সব সময় সুযোগ হয় না। তাছাড়া নতুন চাকরিস্থলে জয়েন করলেও পূর্ববর্তী কর্মকর্তার সাথে অনেকেরই কর্মস্থলে দেখা সাক্ষাৎ হয় না। সেই সুবাদে ভোলা জেলার সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার মোঃ মুক্তার হোসেন এবং ভোলা জেলার নবাগত পুলিশ সুপার সরকার মোঃ কায়সার আপনারও অনেক সৌভাগ্যবান।

এবছরের ১৩ই জুন, বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি’র আদেশে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসচিব, মোহাম্মদ হোসেনের সাক্ষরিত এক আদেশে, পুলিশ বিভাগের মাঠ পর্যায়ের একুশ জন কর্মকর্তার বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। মোহাম্মদ হোসেনের সাক্ষরিত সেই আদেশে, বাংলাদেশ পুলিশের মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের একুশ জনকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পদায়ন করা হয়েছে।

১৩ই জুনের সে অাদেশে ভোলা জেলার সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার মোঃ মোক্তার হোসেনকে বরিশালের (বিএমপি’র) উপ-কমিশনার হিসাবে পদায়ন করা হয়েছে। একই আদেশে বাংলাদেশ পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের এসপি সরকার মোঃ কায়সার’কে ভোলার জেলার পুলিশ সুপার হিসাবে পদায়ন করা হয়েছে।


ভোলা জেলার সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার মোঃ মোক্তার হোসেন।

বাংলাদেশ সরকারের পিপিএম পদক প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, ভোলা জেলার বিদায়ী পুলিশ সুপার মোকতার হোসেন, ভোলা জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার আগে; বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগে পুলিশের ডিবি শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে, দক্ষতার সাথে, সুনামের সাথে, সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ভোলা জেলার বিদায়ী পুলিশ সুপার, মোকতার হোসেন ভোলা জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দীর্ঘকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন কালে; বাংলাদেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী, ভোলা সদর -১ আসনের সংসদ সদস্য, তোফায়েল আহমেদ সহ ভোলা – ৪ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশ সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী, আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, ভোলা – ৩ আসনের সংসদ সদস্য, নুরনবী চৌধুরী শাওন এবং ভোলা – ২ আসনের সংসদ সদস্য, আলী আজম মুকুল সহ সম্মানিত এমপিদের সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সম্মানজনক, স্বতঃস্ফূর্ত ও সহজ সম্পর্ক্য বজায় রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন তা ইতোমধ্যেই প্রত্যেক সংসদ সদস্যরা ভূয়শী প্রশংসা করেছেন।

ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ভারত সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ভোলা জেলায় আগমন উপলক্ষে, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর উপশহর বাংলাবাজারে জনসভাস্থলে বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তা সহ বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভোলায় আগমন উপলক্ষে, চরফ্যাশন ও উপশহর বাংলাবাজারে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করার জন্য ভোলা জেলায় সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার মোঃ মুক্তার হোসেন বেশ প্রশংসিত হয়েছেন।

ভোলা জেলা পুলিশের পক্ষে সফলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মোঃ মোকতার হোসেন, সেই সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের জেলা পর্যায়ের একজন চৌকস কর্মকর্তা হিসেবে, ভোলা জেলার সর্বস্তরের জনগণের নিরাপত্তার এক অতন্ত্র প্রহরী ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় ভোলা সদরের ইলিশা থেকে চরফ্যাশনের চর কুরকি মুরকি পর্যন্ত সমগ্র জেলায় সাধারণ জনগণের মনে ঠাই করে নিয়েছেন।

মোকতার হোসেন ভোলা জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময়ে, মরন নেশা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করার কারণে বরিশাল বিভাগে বেশ কয়েক বার শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার হিসেবে; ভোলা জেলা পুলিশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন, এছাড়াও ভোলা জেলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পেশাগত দায়িত্বের বাহিরে এসেও সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধের নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, জলদস্যু দমন করা সহ ভোলা জেলার জেলা প্রশাসন সহ জেলার ভিবিন্ন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে, অন্যায়, দূর্নীতি ও অপরাধ দমনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের কর্ম কমিশনের অধীনে নিয়োগ পাওয়া একজন জেলা পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে প্রশংসার দাবিদার।

দ্বীপ জেলা ভোলার ইতিহাসে অন্যতম এক প্রতারণার নাম জ্বিন প্রতারণা। সেই জ্বিন প্রতারণার চিত্র স্থানীয় গণমাধ্যমের সীমানা পেরিয়ে জাতীয় গণমাধ্যমে একের পর এক প্রকাশ পেতে থাকে যা বিদেশি গণমাধ্যমে প্রতারণার এক নতুন মাত্রা যোগ করে। যে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ, কখনো কখনো, কারো কারো কাছ থেকে কোটি কোটি টাকাও হাতিয়ে নিয়েছিল সেই জ্বিন প্রতারক চক্র। জেলায় জ্বিন প্রতারকেরা নিস্ব করে দিয়ে ছিল একের পর এক সাধারণ মানুষকে, পথে বসিয়ে দিয়েছিল দেশের নিরীহ জনগণকে। সেই সময়ে পুরো জেলায় জ্বিন প্রতারকেরা পুলিশের সাহসী ভূমিকার জন্য গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকেই। ভোলা জেলা পুলিশের একের পর এক অভিযানের ফলে জ্বিন প্রতারকেরা প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা ভুক্তভোগী প্রতারণার শিকার মানুষের কাছে অর্থ ফেরত দিয়েছে, জ্বিন প্রতারকদের কেউ কেউ জেলা পুলিশের ভয়ে এলাকা ছেড়েছে। জ্বিন প্রতারণা রোধের জন্য ভোলা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মোক্তার হোসেন বিশেষ প্রশংসায় প্রশংসিত হয়েছেন সারা জেলা জুড়ে।

আন্তর্জাতিক জলসীমার প্রান্ত ঘেঁশা, দক্ষিণ এশিয়ার সর্বশেষ স্থলসীমা, বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেশা, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বীপ, দ্বীপ জেলা
ভোলায়; জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় মোঃ মোকতার হোসেনের দায়িত্ব ও কর্তব্য, নিষ্ঠার সাথে যথাযথ ভাবে পালন করার জন্য, বাংলাদেশ সরকার পিপিএম সেবা পদক দিয়েছে। যা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর তো বটেই, যে কোন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের কাছে এটি একটি লোভনীয় পুরস্কার।

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর চৌকস ও মেধাবী অফিসার গনই পিপিএম সেবা পদক পেয়ে থাকেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আমি সাগর চৌধুরী বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন চৌকস সদস্য হিসেবে মোঃ মোকতার হোসেনের সুনাম, কর্মের পরিধি এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করবে সর্বস্তরের জনগণের হৃদয়ে। ভোলা জেলার সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার মোঃ মোকতার হোসেন সাধারণ মানুষের সেবার জন্য আরও বিশেষ বিশেষ পুরস্কার লাভ করবে, আমি সাগর চৌধুরী এমনই দৃঢ় বিশ্বাস রাখি।

ভোলা জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক ছিল, গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে কাজ করেছেন। একজন গণমাধ্যম প্রতিনিধি হিসাবে খুব কাছ থেকে সে সব দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।


সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এর সাথে নবাগত ভোলার পুলিশ সুপার; সরকার মোঃ কায়সার।

তারপরেও বিভিন্ন সময়ে সফলতার, ব্যর্থতার, নিন্দা ও সমালোচনা মূলক প্রতিবেদন স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রীয় চতুর্থতম স্তম্ভ হিসেবে আপনার যোগদান করার দিন থেকে আপনার বিদায় নেয়ার দিন আজ পর্যন্ত ওয়াচডগ এর মত ফলোআপ করেছে গণমাধ্যমকর্মীরা।

তবে ভুল-ত্রুটি নিয়েই মানুষ, রাগ-বিরাগ নিয়েই মানুষ। ব্যর্থতা আর সফলতা নিয়েই মানুষ। চাকরি জীবনের ভালো কাজ করতে গিয়ে, নানা প্রতিকূলতায় বহু মানুষের বিরাগভাজন হওয়া নতুন কিছু নয়। নিজের অভিজ্ঞতা গুলোকে কাজে লাগিয়ে, নিজের জীবনের কলঙ্কময় অধ্যায় গুলোকে ভুলে গিয়ে, আপনার নিজের ভুলের সমালোচনা অকপটে স্বীকার করে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন বদনাম গুলো ভুলে গিয়ে, সুন্দর ও ভালো কাজের মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে আবারও সরব হয়ে উঠবেন নতুন কর্মক্ষেত্রে। বাংলাদেশ পুলিশের একজন চৌকস সদস্য হিসেবে সবার মাঝে প্রশংসিত হয়ে উঠবেন। মনে রাখবেন, ভালো মানুষের মাঝেও নিখাদ কিছু ভুল থাকে। ভুল করে না একমাত্র শয়তান।

ভোলা জেলার সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার, আপনার প্রতি পাহাড় সম শ্রদ্ধা ও আকাশ সম সম্মান জানিয়ে আপনার উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করে লেখা শেষ করছি। আপনার অনেক সফলতা আমার দৃষ্টিগোচর না হওয়ায় এবং আপনার কাছে সফলতা মনে হলেও আমার কাছে ব্যর্থতা মনে হওয়ায় অকপটে সে সব তুলে ধরার চেষ্টা করছি, আমার অজান্তের ভুল গুলোর জন্য আপনার কাছে চির ক্ষমাপ্রার্থী।

যদিও জানি না, আমার এই লেখা মোঃ মোকতার হোসেন এবং সরকার মোঃ কায়সার আপনাদের চোখে পড়বে কি না। আপনারা আমার লেখা এই নিবন্ধ পড়বেন কিনা! আমার এই লেখা হয়তো কেউ কেউ আপনাদের ভুলভাবে উপস্থাপন করবে! কেউবা আগ বাড়িয়ে কিছু বেশী বলবে। সে জন্য নিশ্চয়ই লেখক দায়ী থাকবো না। কারণ, লেখা প্রকাশ হওয়ার পর সেই লেখা আর লেখকের থাকে না, সেই প্রকাশিত লেখার মালিক হয়ে যায় পাঠকেরা।

একই সাথে অভিনন্দন ও লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানাই ভোলার জেলার নবাগত পুলিশ সুপার বাংলাদেশ পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের সাবেক এসপি সরকার মোঃ কায়সার কে।

নবাগত ভোলার পুলিশ সুপার; সরকার মোঃ কায়সার।

দ্বীপ জেলা ভোলা বাসীর পক্ষ থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভকামনা। বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করে, নতুন কর্মস্থলে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে আজ দায়িত্বভার গ্রহণ করার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top