দুদকের অনুসন্ধান র‌্যাবের ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

Picsart_23-12-27_19-49-49-045.jpg

দুদকের অনুসন্ধান র‌্যাবের ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

অপরাধ প্রতিবেদকঃ শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সম্প্রতি অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রাথমিক যাচাই বাছাই শেষে প্রকাশ্যে অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

সূত্র বলছে, গত মার্চ মাসে অনুসন্ধানের জন্য একটি টিম গঠন করে দুদক। অনুসন্ধান দলে রয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক  সোহানুর রহমান ও উপ-সহকারী পরিচালক  মো. মনিরুজ্জামান। অভিযুক্ত র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, বদলি বাণিজ্য, ঠিকাদারি, অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।  

যেসব র‌্যাব কর্মকর্তাকে নিয়ে অনুসন্ধান চলছে তারা হলেন- সাবেক মহাপরিচালক খুরশিদ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল মাহাবুব আলম, কমান্ডার খন্দকার আল মঈন (সাবেক পরিচালক-মিডিয়া উইং), লে. কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত (সাবেক পরিচালক-প্রশাসন ও অর্থ উইং), এডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন (সাবেক সিও,র‌্যাব-১০), মেজর মনজুর মেহেদী (সাবেক কোম্পানি কমান্ডার,র‌্যাব-১০), এডিশনাল এসপি সাইফুর (সাবেক কোম্পানি কমান্ডার,র‌্যাব-১০), এবং  এএসপি কাউসার চৌধুরী (সাবেক স্কোয়াড কমান্ডার,র‌্যাব-১০)। 

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, র‌্যাবের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। দুদকের আইন ও বিধি অনুযায়ী তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক ডিজি খুরশিদ হোসেন দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অসংখ্য জঙ্গি/চরমপন্থি দমনের নাটকে সরাসরি হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার নামে রয়েছে কোটি টাকার মাদক সিন্ডিকেটের মাসোহারা আদায়ের তথ্য।

কর্নেল মাহাবুব আলম ডিজিএফআই এবংর‌্যাবের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। দায়িত্বে থাকাকালীন বিপুল অংকের অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে। সেসব অর্থে নামে-বেনামে সম্পদ গড়েছেন তিনি। র‌্যাবের সাবেক এই অতিরিক্ত মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগও রয়েছে।   

র?্যাবের মিডিয়া ব্যবস্থাপনায় থেকে রাষ্ট্রীয় অপরাধের ন্যারেটিভ পরিবর্তন করার অভিযোগ রয়েছে খন্দকার আল মঈনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে সাবেক এই র‌্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। 

র‌্যাবের অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শ্রীনগর, এমনকি মাওয়া ফেরিঘাটে চাঁদা আদায়, জমি দখল এবং জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের মাধ্যমে জনগণকে ভয় দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া স্ত্রী ও স্বজনদের নামে ঢাকার অভিজাত এলাকা- গুলশান ও উত্তরায় ফ্ল্যাট, প্লটের মালিকানা রয়েছে। এ ছাড়া বিদেশেও প্রচুর পরিমাণে অর্থ পাচার করেছেন বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।

লে. কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত (সাবেক পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ উইং)। প্রশাসন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় থাকায় তার বিরুদ্ধে রয়েছে ভুয়া বিল-ভাউচার, প্রভাব খাটিয়ে কন্ট্রাক্ট চুক্তি, লজিস্টিক ও ক্রয় জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুদক জানায়, ঘনিষ্ঠ বেসরকারি ঠিকাদারদের মাধ্যমে কমিশনভিত্তিক চুক্তিতে টাকা আদায় করতেন এবং উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব দুর্নীতি চালিয়ে যান তালাত।

মেজর মনজুর মেহেদী (সাবেক কোম্পানি কমান্ডার,র‌্যাব-১০) এর অপারেশনাল কমান্ডার থাকা অবস্থায় তিনি সরাসরি অস্ত্র ব্যবহার করে গুম ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের একাধিক অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। এলাকার চিহ্নিত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায়, অবৈধ বাণিজ্যে সহযোগিতা এবং আইনবহির্ভূত অপারেশন পরিচালনার বিষয়ে তাকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেছে দুদকের অভিযোগে।

র‌্যাবের এডিশনাল এসপি সাইফুর রহমান (সাবেক কোম্পানি কমান্ডার,র‌্যাব-১০)। ২৯ বিসিএসের এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রয়েছে দলবদ্ধভাবে চাঁদাবাজি, মাদকদ্রব্য উদ্ধার নাটক সাজিয়ে অর্থ আদায়, এবং নির্দোষ ব্যক্তিকে হয়রানি করার অভিযোগ।

এ ছাড়াও তিনি বিশেষ কিছু সিন্ডিকেটের হয়ে ‘মিডলম্যান’ হিসেবে কাজ করতেন এবংর‌্যাবের পোশাক ও ক্ষমতা ব্যবহার করে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায় করতেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

র‌্যাব-১০ এর সাবেক স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি এ.কে.এম কাউসার চৌধুরী ছিলেন ফরিদ উদ্দিনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান হচ্ছে তার বিরুদ্ধেও।

র‌্যাবের দায়িত্বের আগে দাউদকান্দি থানার ওসি থাকাকালীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চাঁদাবাজিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার অভিযোগও রয়েছে কাউসারের বিরুদ্ধে। তার নামে-বেনামে ঢাকার গুলশান, বনানী, উত্তরা এলাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে। যেগুলো অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থে কেনা বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র। 

আরও সংবাদ পড়ুন।

দুদক মোয়াজ্জেম হোসেন, মুহাম্মদ তুহিন ফারাবী ও গাজী সালাউদ্দিন তানভীর’কে ডেকেছে

আরও সংবাদ পড়ুন।

নারায়ণগঞ্জ পিটিআই’র কর্মকর্তা কর্মচারীদের অর্থ আত্মসাত – দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

দুদকের নতুন চেয়ারম্যান মোমেন, আকবার আজিজী ও ফরিদ হলেন কমিশনার

আরও সংবাদ পড়ুন।

মিরপুর বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ এ দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

বিআরটিএ এর পূর্বাচল (ঢাকা মেট্রো-৪)অফিসে – দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

বিআরটিএ অপরাধ ও দূর্নীতি’র আখড়া; অপরাধ করেও পার পেয়ে যায় কর্তারা

আরও সংবাদ পড়ুন।

বিআরটিএ – ইকুরিয়া সার্কেল;ঢাকা বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবী – দুদকের অভিযান

আরও সংবাদ পড়ুন।

ছদ্মবেশে বিআরটিএ দুদকের অভিযান – ঘুষ গ্রহণের সময় হাতেনাতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার

আরও সংবাদ পড়ুন।

ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রাইভেট কার বা জীপগাড়ির ব্র্যান্ডের নামসহ তথ্য চেয়ে বিআরটিএকে দুদকের চিঠি

আরও সংবাদ পড়ুন।

বেপরোয়া দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িয়ে জেলা প্রশাসকরা, তদন্তে দুদক ও এনএসআই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top