বাজেট ২০২৩-২৪ – জমি রেজিস্ট্রেশন খরচ বাড়ছে
বিশেষ প্রতিবেদকঃ আসছে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে জমি রেজিস্ট্রেশনের উৎসে কর বাড়ানো হচ্ছে। এতে বাড়বে জমি রেজিস্ট্রেশন খরচ। এমনটাই মনে করছেন
প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে জমি রেজিস্ট্রেশন করায় উৎসে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে জমি রেজিস্ট্রেশনের সময় দলিলে লিখিত মূল্যের এক শতাংশ রেজিস্ট্রেশন ফি, এক দশমিক ৫০ শতাংশ স্ট্যাম্প শুল্ক, এলাকাভেদে স্থানীয় সরকার কর ২-৩ শতাংশ এবং রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও সিডিএ (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) অন্তর্ভুক্ত এলাকার জন্য ৪ শতাংশ, অন্য সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকার জন্য ৩ শতাংশ উৎসে কর দিতে হয়।
আগামী বাজেটে জমি রেজিস্ট্রেশনে উৎসে কর এক শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। ফলে আগামী ১ জুলাই থেকে রাজউক ও সিডিএ অন্তর্ভুক্ত এলাকার জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৫ শতাংশ, অন্য সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকার জন্য ৪ শতাংশ উৎসে কর দিতে হবে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, বর্তমানে কর ফাঁকি দিতে দলিলদাতা ও দলিলগ্রহীতা দুই পক্ষের যোগসাজশে রেজিস্ট্রেশনের সময় জমির প্রকৃত মূল্য গোপন করা হয়। প্রায় সব ক্ষেত্রে মৌজা মূল্যের কাছাকাছি মূল্য দলিলে উল্লেখ করা হয়।
মৌজা মূল্য অনেক কম হওয়ায় সরকার এ খাত থেকে প্রতিবছর বিপুল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই রাজস্ব আদায় বাড়াতে উৎসে কর বাড়ানো হচ্ছে।
গত বছর জমি রেজিস্ট্রি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাতিষ্ঠানিক টিমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জমির প্রকৃত মূল্য গোপন করে তুলনামূলক কম টাকায় রেজিস্ট্রির কারণে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে দলিল সম্পাদনে জমির ক্রেতা ও বিক্রেতাকে সহায়তা করছেন সংশ্লিষ্ট দলিল লেখক ও সাব-রেজিস্ট্রাররা। এতে জমির দলিল মূল্যের বাড়তি টাকা বিক্রেতার পকেটে জমছে কালো টাকা হিসাবে। অন্যদিকে জমি কেনার নামে ক্রেতা পাচ্ছেন কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ।
গত বছর নভেম্বরে জমি রেজিস্ট্রেশনে স্বচ্ছতা আনতে বাজার মূল্যে রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি চালু করতে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিবকে (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির ৫ সদস্য হলেন ভূমি মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং নিবন্ধন অধিদপ্তরের একজন করে প্রতিনিধি। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব (কেন্দ্রীয় ব্যাংক)।
১ ডিসেম্বর কমিটিকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি।
অবশ্য আবাসন খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর বাড়ানোর কারণে অর্থনীতিতে বৈধ কালো টাকার জন্ম নেবে। কারণ বেশি কর আরোপ করায় সবাই দলিলে কম মূল্য দেখাতে চাইবে। তখন টাকা বৈধ করতে মানুষ আরও প্রতারণার আশ্রয় নেবে অথবা বিদেশে পাচার করবে। বরং কর কমিয়ে এ খাতে রাজস্ব আদায় আরও বাড়ানো যেত।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
বিচারপ্রার্থী মানুষ যেন দ্রুত ন্যায়বিচার পায় – আইনমন্ত্রী আনিসুল হক